৫ টি অতি প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন
১. পকেট
মোবাইলে ইন্টারনেট সেবার যে বেহাল অবস্থা বাংলাদেশে, তা থেকে আপনাকে বাঁচাতে পারে পকেট নামের একটি অ্যাপ। এটি এমন একটি সেবা যাতে ওয়েবপেজ গুলোকে সংকুচিত করে, মানে কম্প্রেসড ভার্সন আকারে সংরক্ষণ করা যায়, যেগুলো আপনি অফলাইন অবস্থায় দেখতে পারবেন। ধরুন, আপনি যখন যানজটে আটকে আছেন, এমন সময়ে এই অ্যাপ দিয়ে মোবাইল ডাটা ব্যবহার না করেই আপনি সাংবাদ বা আপনার পছন্দের যে কোন বিষয় জেনে নিতে পারবেন। আরও সুবিধার দিক হচ্ছে, ওয়েবপেজ গুলো ডেস্কটপে গুগল ক্রম এক্সটেনশনের মাধ্যমে আপনার পার্সোনাল কম্পিউটার বা ম্যাক থেকে সেভ করতে পারবেন যা আপনি পরে আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে দেখতে পারবেন।
২. গুগল কীপ
প্রতিদিন আমাদের বহু কাজের খেয়াল রাখতে হয়, যা অনেক সময় চাপ হয়ে দাঁড়ায়, বিশেষ করে যখন অনেক কিছু একসঙ্গেী জমা হয়ে যায়। এক্ষেত্রে গুগল কীপ অ্যাপটি হাতের নাগালের মধ্যে কাজের লিস্ট/ তালিকা রাখার সবচেয়ে বহুমুখী অ্যাপ্লিকেশন গুলোর একটি। এটি অন্যান্য অনেক গুগল অ্যাপস বা সার্ভিসের মতোই, পিসি বা ম্যাকের পাশাপাশি মোবাইলেও ব্যবহার উপযোগী। কীপ-এর মাধ্যমে আপনার কাজ গুলোর তালিকা করতে পারবেন, নোট নিয়ে রাখতে পারবেন, এমনকি কাজের সময় ও স্থান অনুযায়ী সে আপনাকে যথাসময়ে আপনার কাজ গুলো স্মরণ করিয়ে দেবে।
৩. সুইফটকী
সাধারণভাবে বলতে গেলে, প্রোডাক্টিভিটির জন্য প্রচুর টাইপ করতে হয়, এবং সুইফটকী গত পাঁচ বছর ধরে এন্ড্রয়েড কীবোর্ড অ্যাপ্লকিশেন হিসেবে ছিলো অপ্রতিদ্বন্দ্বী (এটি সম্প্রতি আইওএসে প্রবর্তন করা হয়েছে, যেখানেও সেটি সর্বোচ্চ মানের)। সুইফটকী প্রাথমিকভাবে জায়গা করে নেয় এর অবিশ্বাস্য টেক্সট প্রিডিকশন এলগরিদমের জন্য, যা আক্ষরিকভাবেই নিজেই বুঝে নেয় আপনি কীভাবে টাইপ করেন। এটি যেমন বিভিন্ন ভাষার শব্দগুলো শিখে নেয়, পাশাপাশি আপনি কোন ব্যক্তির সঙ্গে কীভাবে কথা বলেন, এমনকি আপনার ইমোজির ব্যবহারও শিখে নেয়। সত্যি কথা বলতে কি, শুধু সুইফটকী’র ওয়ার্ড প্রিডিকশন ব্যবহার করেই আমি কথা চালিয়েছি। সর্বোপরি, সুইফটকী দিচ্ছে জেশ্চার টাইপিং সিস্টেম বা হাত চালিয়ে লেখার পদ্ধতি, এছাড়া এটি একটি দারুণ থিম স্টোর।
৪. গুগল ইনবক্স
সব ইমেইল ক্লায়েন্ট একরকম করে বানানো হয়নি। অনেকেই স্বীকার করবেন, দীর্ঘকাল ধরে জিমেইলই সেরা ইমেল ক্লায়েন্ট। জিমেইলের কর্মীরা ২০১৪ সালের শেষের দিকে বিশেষভাবে এই ইমেইল অ্যাপটির ডিজাইন করেন, যেটা বিশেষভাবে জিমেইলের ইনবক্স তথা প্রোডাক্টিভির কথা মাথায় রেখেই বানানো হয়েছিল। এই অ্যাপটি এন্ড্রয়েড, আইওএস, ক্রম, ফায়ারফক্স ও সাফারিতে পাওয়া যায়। শুরুর দিকে হয়তো ইনবক্সটি ব্যবহারের জন্য কিছু বিষয় আপনার শিখে নিতে হবে, কিন্তু যখন আপনি অভ্যস্ত হয়ে যাবেন তখন আপনি আপনার ইমেইলের ইনবক্সের জটিল টাস্কগুলোও খুব অনায়াসেই করে ফেলতে পারবেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি আপনার টাস্ক বা কাজগুলো ‘পিন’ করে রাখতে পারবেন বা সেঁটে রাখতে পারবেন যাতে আপনি সহজেই গুরুত্বপূর্ণ ইমেইলগুলো চিহ্নিত করে রাখতে পারেন এবং এটিতে শুধু পিনড করে রাখা টাস্কগুলো দেখার ব্যবস্থাও রয়েছে। ইমেইলের প্রকার বা ক্যাটাগরি করাটা ইনবক্স ব্যবহারের অন্যতম দিক। একইসঙ্গে যে ইমেইলগুলোর কাজ হয়ে গেছে সেগুলো চিহ্নিত থাকাও দরকার। মানে যেসব ইমেইলের কাজ হয়ে গেছে সেগুলোকে ইনবক্সের মেইন ভিউ থেকে আলাদা করে দেখতে পাবেন, যাতে আপনার যে কাজগুলো এখনো বাকি বা ঝুলে আছে তা আপনি বুঝতে পারেন।
৫. ব্রেইন ফোকাস প্রোডাক্টিভিটি টাইমার
যদি একটি কাজ নিয়ে আপনার দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে থাকতে হয় সে ক্ষেত্রে এই অ্যাপ্লকিশেনটি বিশেষভাবে সহায়ক। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি খুবই দারুণ। এই অ্যাপটি “পোমোদরো” পদ্ধতি ব্যবহার করে (আপনি ২৫ মিনিট নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করলেন, তারপর একটি ৫ মিনিটের বিরতি নিলেন)। এর একটি সহজে ব্যবহার করার মতো লেআউট আছে যাতে আপনার কাজে ব্যাঘাত না ঘটে। এটি কাজ সম্পন্ন করাতে সাহায্য করবে এবং কাজের ফাঁকে প্রয়োজনীয় অবকাশ সৃষ্টি করে আপনার প্রোডাক্টিভিটি বা উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে তুলবে । অ্যাপ স্টোরে অনেক অ্যাপ্লকিশেন আছে.যেগুলোর কাজ মোটামুটি একই ধরনের। তাই যেটি আপনি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন, স্রেফ সেটি বেছে নেওয়ার ব্যাপার (আপনি আইওএস-এ পোমোদরো কিপার ব্যবহারের চেষ্টা করে দেখতে পারেন)।