আপনার বাড়ি সাজানোর জন্য সাশ্রয়ী বাজেটের ডিজাইন আইডিয়া
কর্ম ব্যস্ত জীবনে একপশলা বৃষ্টির মতো শান্ত পরিবেশ এনে দিতে পারে একটি পরিপাটি করে সাজানো বাড়ি। একটি পরিচ্ছন্ন এবং নান্দনিক ডিজাইনের ঘর, যে কারো মনে প্রশান্তি এনে দেয়। অনেকেই মনে করেন বাড়ি সুন্দর করে সাজানো একটি বিলাসিতা। না, বরং আপনি সাশ্রয়ী বাজেটের মধ্যে বিভিন্ন সৃজনশীল ডিজাইনে আপনার বাসা সাজাতে পারেন। যা আপনার সৃষ্টিশীল মানসিকতা, ব্যক্তিত্ব, এবং রুচিবোধ ফুটিয়ে তুলবে। একটি পরিপারি করে সাজানো ঘর মন শান্ত করে, মানসিক অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে।
বর্তমান সময়ে আসবাবপত্রের দাম অনেকটাই বেশি। জীবনযাপনের খরচ বাঁচাতে অনেকেই সাশ্রয়ী মূল্যের আসবাবপত্র কিনছেন। সাধারণ কিছু উপকরণ এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনার মাধ্যমে আপনার বাসাটি আরও মনোরম এবং কম্ফোর্টেবল করে তুলতে পারেন। এখনকার আধুনিক জীবনযাপনে, সাশ্রয়ী বাজেটের ডিজাইন আইডিয়াগুলো বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এই ব্লগে আপনার বাড়ি সাজানোর জন্য কিছু সাশ্রয়ী বাজেটের ডিজাইন আইডিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আপনার বাড়ি সাজানোর জন্য সাশ্রয়ী বাজেটের ডিজাইন আইডিয়া
ডু ইট ইওরসেল্ফ (DIY) ডেকোরেশন ব্যবহার করুন
পেইন্ট, ফ্যাব্রিক কিংবা পুনর্ব্যবহৃত উপকরণ দিয়ে আপনি নিজেই কিছু ফটো ফ্রেম বা শিল্প তৈরি করতে পারেন। ঘরের কাপড়, কাঠ, স্কেচ, স্টিকার, ফেলনা জিনিসপত্র দিয়ে বিভিন্ন সৃষ্টিশীল গৃহস্থালির ব্যবহৃত সুন্দর জিনিস তৈরী করতে পারেন। সেলাই করা পেইন্টিং, হ্যাঙ্গার, কার্পেট, আর্টপেপারের পেইন্টিং, ফুলদানি, মোমবাতি স্ট্যান্ড, কাঠের বা বেতের টুল, ফ্রেম, আয়না, ইত্যাদি জিনিসগুলো ঘরের দেয়ালে ব্যবহার করতে পারেন। এই জিনিসগুলো ছোট কিন্তু ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে।
ঘরে পাতাবাহার বা ইনডোর প্ল্যান্ট রাখুন
কালারফুল পাতাবাহার কিংবা ছোট ছোট ফুলের গাছ ঘরের পরিবেশ সতেজ এবং প্রাণবন্ত করে তোলে। এরকম ঘরে সাজানোর ছোট গাছ পট সহ নার্সারিতে পাওয়া যায়। আপনি নিজেও আপনার মনের মতো করে পট তৈরি করে সাজিয়ে ফেলতে পারেন।
পুরনো বা আপসাইকেল ফার্নিচার রিনোভেট করে ব্যবহার করুন
পুরোনো ছোটখাটো ফার্নিচার যেমন টেবিল, চেয়ার, টি-টেবিল, ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে সংস্কার এবং পেইন্ট করে ব্যবহার করতে পারেন। কিছু পেইন্ট বা ফ্যাব্রিক দিয়ে পুরানো আসবাবকে নতুন করে সাজিয়ে ফেলুন। বড় ফার্নিচারগুলো নতুন কভার, এবং কুশন দিয়ে নতুনভাবে সাজানো সম্ভব। চক পেইন্ট ফার্নিচারে একটি এস্থেটিক লুক এনে দেয়। জার, ঝুড়ি, বালতি, মগ ইত্যাদি গাছের টব হিসেবে বারান্দায় ব্যবহার করতে পারেন।
কালারফুল ওয়াল পেপার এবং মেঝেতে প্লাস্টিকের ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন
দেয়ালে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে কালারফুল ওয়াল পেপার কিংবা হ্যান্ড মেড পেইন্টিং ব্যবহার করে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন। মেঝের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে প্লাস্টিকের ম্যাট, লামিনেট বা ভিনাইল ফ্লোরিং ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো বেশ সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়, এবং ঘরের ইন্টেরিয়রে একটি ক্লাসি লুক এনে দেয়।
ঘরের দেয়ালে সফ্ট কালার এবং লাইট ব্যবহার করুন
উন্নত মানের পেইন্ট ব্যবহার করলে বেশ খানিকটা খরচ করতে হবে। দেয়ালে সাশ্রয়ী মূল্যের সাধারণ মানের সফ্ট কালার পেইন্ট করুন। সুন্দর একটি কালার ঘরে স্নিগ্ধ এবং মনোরম পরিবেশ তৈরী করে। এক্ষেত্রে অফ হোয়াইট বা প্যাস্টেল শেড ব্যবহার করতে পারেন। এসব কালার ঘরে ব্রাইটনেস এনে দেয়। লাইটগুলো এমন জায়গায় সেট করুন যেন ঘরের আঙ্গিক সুন্দর করে সাজানো সম্ভব হয়। ওয়াল পেইন্টিং-এর পাশে স্ট্রিং লাইট এবং বিছানার পাশে টেবিল ল্যাম্প ঘরে এক ধরনের মায়াময় পরিবেশ সৃষ্টি করে। বোনা ঝুড়ি এবং পোলিশ কাঠের তক্তা ব্যবহার করে ল্যাম্পশেড তৈরি করতে পারেন।
ফার্নিচার মার্কেট থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে ডেকোর আইটেম কিনতে পারেন
বেশ কিছু হোম ডেকোর, ফার্নিচার মার্কেট এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সাশ্রয়ী মূল্যে সুন্দর ডেকোর আইটেম পাওয়া যায়। যেমন কুশন, টেবিল ক্লথ, ফ্রেম, ওয়াল ক্লক, ব্লাঙ্কেট, বিছানার চাদর, জানালার পর্দা, ম্যাট্রেস, শোপিস, ইত্যাদি সংগ্রহ করতে পারেন। ডিসকাউন্টের জন্য অপেক্ষা করুন। অফার চলাকালীন ব্র্যান্ডের শোরুম থেকে কম দামে স্টাইলিশ পণ্য কিনুন।
বহুমাত্রিক ফার্নিচার ব্যবহার করুন
ফোল্ডেবল ফার্নিচার ব্যবহারে ঘরের জায়গা অনেকখানি বাঁচানো যায়। এছাড়াও ড্রয়ার সম্বলিত খাট, সোফা এবং ওয়াল কেবিনেট আপনাকে বাড়তি ফার্নিচার কেনা থেকে বাঁচাবে। বিশাল আলমারি কিংবা ক্যাবিনেট ব্যবহার করার পরিবর্তে, ওয়াল ক্যাবিনেট ব্যবহার করতে পারেন। এখানে আপনি বই, শোপিস এবং আলংকারিক আইটেম রাখতে পারবেন। যা স্পেসের সাথে সাথে ঘরের সৌন্দর্য বাড়াবে।
পরিশেষে, ঘর সাজানো মানে দামি দামি ফার্নিচার দিয়ে সাজানো নয়, বরং আপনার আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী সৃজনশীল ভাবে পরিকল্পনা করে সাজানোটাই স্মার্ট চিন্তা। উপরে আলোচিত আইডিয়াগুলো ফলো করলে আপনি সহজেই আপনার ঘরে একটি সুন্দর এবং আরামদায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবেন। মনে রাখবেন, সাশ্রয়ী বাজেট মানে নিম্নমানের পণ্য ব্যবহার নয়, কিছু সঠিক পরিকল্পনা এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে, বাজেটের মধ্যে মাধুর্যপূর্ণ ভাবে বাসার সৌন্দর্য বাড়ানো সম্ভব।
কিছু সাধারণ জিজ্ঞাসা
প্রথমে, বাজেট নির্ধারণ করুন। কি কি প্রয়োজনীয় জিনিস লাগবে তার লিস্ট করুন। অপ্রয়োজনীয় খরচ কিভাবে কমানো যায় তা চিন্তা করুন। সাধারণ কিছু উপকরণ, মিনিমালিস্টিক আসবাবপত্র এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনার মাধ্যমে আপনার বাসাটি আরও মনোরম এবং কম্ফোর্টেবল করে তুলতে পারেন।
উন্নত মানের পেইন্ট ব্যবহার করলে বেশ খানিকটা খরচ করতে হবে। তাই আপনি সাশ্রয়ী বাজেটের মধ্যে হালকা রঙের পেইন্ট ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে অফ হোয়াইট বা প্যাস্টেল শেড ব্যবহার করতে পারেন। এসব কালার ঘরে ব্রাইটনেস এনে দেয়।
সাধারণ বোর্ড দিয়ে র্যাক তৈরি, বিভিন্ন ডেকোরেটিভ ডিজাইন, এবং ওয়াল পেইন্টিং করে, আপনি নিজেই সাশ্রয়ী বাজেটে বাড়ি সাজাতে পারে। ঘরের কাপড়, কাঠ, স্কেচ, স্টিকার, ফেলনা জিনিসপত্র দিয়ে বিভিন্ন সৃষ্টিশীল গৃহস্থালির ব্যবহৃত সুন্দর জিনিস তৈরী করতে পারেন। ইউটিউব এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আপনি বিভিন্ন DIY ডিজাইন আইডিয়া পাবেন।
পুরনো বা আপসাইকেল ফার্নিচার রিনোভেট করে ব্যবহার করলে আপনি সাশ্রয়ী বাজেটে ঘর সাজাতে পারবেন। পুরোনো ছোটখাটো ফার্নিচার যেমন টেবিল, চেয়ার, টি-টেবিল, ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে সংস্কার এবং পেইন্ট করে ব্যবহার করতে পারেন। কিছু পেইন্ট বা ফ্যাব্রিক দিয়ে পুরানো আসবাবকে নতুন করে সাজিয়ে ফেলুন।
বিভিন্ন মিলিমালিস্টিক ডিজাইনের ফোল্ডেবল বা মাল্টি-ফাংশনাল আসবাব ব্যবহার করতে পারেন। বিশাল আলমারি কিংবা ক্যাবিনেট ব্যবহার করার পরিবর্তে, ওয়াল ক্যাবিনেট ব্যবহার করতে পারেন।