বাড়িতে ফ্রিজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম এবং যত্নের পরামর্শ
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে ফ্রিজ। কারণ, বর্তমান সময়ে ফ্রিজ ছাড়া খাবার তাজা ও সতেজ রাখা হয়ে উঠেছে অনেকটাই অসম্ভব। তবে যেই যন্ত্র আমাদের দিনের পর দিন সেবা দিয়ে চলেছে তার যত্নে আমরা কতোটুকু সচেতন? ফ্রিজ দীর্ঘদিন কার্যকর রাখতে সঠিক ব্যবহার ও নিয়মিত যত্ন নেওয়া জরুরি। সামান্য অবহেলাও ফ্রিজের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এবং ব্যয়বহুল মেরামতের কারণ হতে পারে। তাই আজকের লেখায় ফ্রিজের যত্ন নেয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
বাড়িতে ফ্রিজ ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি ও যত্ন নেয়ার টিপস
১. সঠিক তাপমাত্রায় রাখুন
ফ্রিজের তাপমাত্রা ৩৭-৪০°F (৩-৫°C) এবং ফ্রিজারের তাপমাত্রা ০°F (-১৮°C) রাখুন। এটি খাবারকে তাজা ও নিরাপদ রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ খরচ কমায়। একটি ফ্রিজ থার্মোমিটার ব্যবহার করে সঠিক তাপমাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করতে পারেন।
২. ফ্রিজ অতিরিক্ত বোঝাই করবেন না
ফ্রিজে অতিরিক্ত খাবার থাকলে ঠাণ্ডা বাতাস সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে না। এর ফলে ঠাণ্ডা সঠিকভাবে না হওয়ায় খাবার নষ্ট হতে পারে। ফ্রিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখুন এবং আইটেমগুলোর মাঝে কিছুটা করে ফাঁকা রাখুন। এতে প্রয়োজনীয় জিনিস সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে।
৩. নিয়মিত পরিষ্কার করুন
ফ্রিজ মাসে একবার পরিষ্কার করুন, যাতে এটি পরিষ্কার ও কার্যক্ষম থাকে। একটি নরম কাপড় ও হালকা ক্লিনার দিয়ে তাক, ড্রয়ার এবং দেয়ালগুলো মুছে নিন। দরজার সিল বিশেষভাবে পরিষ্কার করুন, যাতে এটি বায়ুরোধী থাকে। নষ্ট সিল ঠাণ্ডা বাতাস বের হতে দেয়, যা বিদ্যুৎ খরচ বাড়ায়।
৪. ভালো বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন
ফ্রিজের চারপাশে পর্যাপ্ত খোলা জায়গা রাখুন, অন্তত পেছন এবং পাশে কয়েক ইঞ্চি জায়গা ফাঁকা থাকা জরুরি। বায়ু চলাচল বাধাগ্রস্ত হলে কম্প্রেসর অতিরিক্ত গরম হতে পারে, যা ফ্রিজের আয়ু কমায়। রান্নার চুলা, ওভেন বা সরাসরি রোদের কাছাকাছি ফ্রিজ রাখবেন না, কারণ এটি কম্প্রেসরের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।
৫. যখন প্রয়োজন ডিফ্রস্ট করুন
যেসব ফ্রিজে অটো-ডিফ্রস্ট ফিচার নেই, সেগুলোতে বরফ জমলে ডিফ্রস্ট করা জরুরি। অতিরিক্ত বরফ ফ্রিজের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় এবং জায়গা দখল করে। বরফের স্তর এক-চতুর্থাংশ ইঞ্চির বেশি হলে ডিফ্রস্ট এবং পরিষ্কার করুন।
৬. খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন
বেঁচে যাওয়া খাবার বা খোলা প্যাকেটগুলো এয়ারটাইট কনটেইনারে রাখুন, যাতে গন্ধ ও ছড়িয়ে পড়া এড়ানো যায়। কাঁচা মাংস নিচের তাকে রাখুন, যাতে তা অন্য খাবারের সাথে মিশে না যায়। কনটেইনারগুলোতে তারিখ লিখে রাখুন, যাতে খাবার নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
৭. কয়েল পরীক্ষা করুন
ফ্রিজের পিছনে বা নিচে থাকা কনডেনসার কয়েল সময়ের সাথে সাথে ধুলো জমে নোংরা হয়ে যায়, যা ফ্রিজের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। বছরে অন্তত দুবার এটি পরিষ্কার করুন। ভ্যাকুয়াম বা নরম ব্রাশ ব্যবহার করে ময়লা পরিষ্কার করুন। এটি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে এবং ফ্রিজের আয়ু বাড়ায়।
পরিসংহার
আপনার ফ্রিজের সঠিক যত্ন ও ব্যবহার এর কার্যকারিতা এবং আয়ু বৃদ্ধি করতে পারে। সঠিক তাপমাত্রা সেট করা, নিয়মিত পরিষ্কার করা এবং বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা আপনাকে ব্যয়বহুল মেরামত থেকে রক্ষা করবে। Bikroy.com-এ আমরা বিশ্বাস করি, ফ্রিজের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ খাবার ভালোভাবে সংরক্ষণ ও বিদ্যুৎ খরচ কমাতে সাহায্য করে, যা দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক।
গ্রাহকদের সাধারণ কিছু জিজ্ঞাসা
ফ্রিজ মাসে একবার পরিষ্কার করুন যাতে এটি ভালো এবং কার্যকর থাকে।
ফ্রিজের তাপমাত্রা ৩৭-৪০°F (৩-৫°C) এবং ফ্রিজারের তাপমাত্রা ০°F (-১৮°C) রাখুন।
ফ্রিজ অতিরিক্ত বোঝাই না করা, কনডেনসার কয়েল পরিষ্কার রাখা এবং সঠিক বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা বিদ্যুৎ খরচ কমাতে সাহায্য করবে।
দরজার সিল পরীক্ষা করুন, কনডেনসার কয়েল পরিষ্কার করুন এবং তাপমাত্রা সঠিকভাবে সেট করা আছে কিনা যাচাই করুন।