যানবাহন

গাড়ির ইঞ্জিন সচল ও দীর্ঘস্থায়ী রাখার গুরুত্বপূর্ণ টিপস

নিজের শখের গাড়ি কে না চায়! তবে কেনার পর সঠিকভাবে যত্ন না নিলে, গাড়িটি দ্রুত সমস্যাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অল্প সময়েই তখন গাড়িটি অকেজো হয়ে পড়ে। গাড়ির ইঞ্জিনের যত্ন নেওয়া গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এ লেখাতে গাড়ি ইঞ্জিন সচল ও দীর্ঘস্থায়ী রাখার কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করা হবে।

গাড়ি নিয়মিত চালানোর চেষ্টা করুন

যেকোনো যন্ত্রই ব্যবহারের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। তাই শখের গাড়িটি ফেলে না রেখে নিয়মিত চালান। সতর্কতার সঙ্গে প্রতিদিন গাড়ি চালান। দেখবেন কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই গাড়িটি এমনিই দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে প্রতিদিন গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে যেসব বিষয় মাথায় রাখবেন। যেমনঃ ইঞ্জিন চালু করে সাথে সাথেই স্পিড খুব বাড়াতে যাবেন না। এটা ইঞ্জিনের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। ইঞ্জিন গরম করার জন্য পার্কিং লটে গাড়ি চালু করে রাখাটা মোটেও ভালো কাজ নয়। ইঞ্জিনের তাপমাত্রা বাড়লেই যে গাড়ি ভালো কাজ করে, এমন কোনো কথা নেই। বরং ইঞ্জিন চালু করে গাড়ি এভাবে ফেলে রাখলে সেটি ইঞ্জিনের জন্যই ক্ষতিকর। বাইরে খুব বেশি গরম বা ঠান্ডা আবহাওয়ায় উচ্চ গতিতে গাড়ি চালানোর সময় খুব দ্রুত এক্সিলারেটরে চাপ দেওয়া উচিত না। 

গাড়ির ইঞ্জিনের যত্ন নেওয়া

ইঞ্জিন চালু হওয়ার পর ভেতরের যন্ত্রাংশগুলোর ঘূর্ণনে তাপ উৎপাদন হতে থাকে। এতে করে ইঞ্জিন ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এই ক্ষয় থেকে ইঞ্জিন রক্ষা করার জন্যই পিচ্ছিল এক প্রকার তেল ব্যবহৃত হয়, এটাই “ইঞ্জিন অয়েল” নামে পরিচিত। তরল এই পদার্থ ইঞ্জিনের অভ্যন্তরে থাকলে যন্ত্রাংশগুলোর ঘূর্ণনে তাপ উৎপাদন ব্যাহত হয়। আর তাই প্রতি ৩০০০ মাইল চালানোর পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা জরুরী। আপনি চাইলে নিজেই ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতে পারেন অথবা কোন সার্ভিস সেন্টারে নিয়েও পরিবর্তন করতে পারেন। ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করার পাশাপাশি এর ফিল্টার, স্পার্ক প্লাগ বদলানোর কাজটাও করতে হবে নিয়মিত। তবে প্রথমে ইঞ্জিনের ওপরের ধুলো পরিষ্কার করে নিন। পানি দিয়েও পরিষ্কার করতে পারবেন। তবে লক্ষ্য রাখবেন ব্যাটারির সংযোগে যেন পানি না লাগে।

ইঞ্জিন অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করা

ইঞ্জিন অয়েল গাড়ির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ইঞ্জিন ওয়েলের মত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইঞ্জিন ওয়েল ফিল্টার পরিবর্তন। ইঞ্জিন চালু হওয়ার পর ইঞ্জিন অয়েল গাড়ির ইঞ্জিনে ঘুরতে থাকে। ইঞ্জিন থেমে গেলে অয়েল চেম্বারে ইঞ্জিন অয়েল আবার ফিরে আসে। তাই গাড়ি চালু করার পর ইঞ্জিনে অয়েল পৌঁছানোর জন্য সময় দিতে হয়। দিনের প্রথমে ইঞ্জিন চালু করে কয়েক মিনিট রেখে দেওয়া উত্তম। এতে ইঞ্জিন অয়েল পুরো ইঞ্জিনে ছড়িয়ে পড়ে। ইঞ্জিন অয়েলে যে ময়লা জমা হয়, তা ইঞ্জিন অয়েল ফিল্টার শুষে নেয়। ময়লা জমতে জমতে একসময় ইঞ্জিন অয়েল ফিল্টারটি অকেজো হয়ে যায়। তাই ইঞ্জিন অয়েল বদলানোর সময় ইঞ্জিন অয়েল ফিল্টারটিও বদলানো প্রয়োজন।

ইঞ্জিন পরিষ্কার রাখুন

যেকোনো যন্ত্রই ব্যবহারের পাশাপাশি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হয়। প্রতি এক বা দুই বছর অন্তর ইঞ্জিন পরিষ্কার করার অনেক ইতিবাচক দিক আছে। পরিষ্কার ইঞ্জিন নোংরা ইঞ্জনের তুলনায় কম উত্তপ্ত হয়। ইঞ্জিন পরিষ্কারের সময় এয়ার ইনটেক, ডিস্ট্রিবিউটর এবং অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক পার্টসগুলো সংরক্ষণ করে রাখুন। এসব যন্ত্রাংশগুলোকে চাইলে প্লাস্টিকের ব্যাগে মুড়িয়ে রাখতে পারেন। ইঞ্জিন পরিষ্কার করার জন্য আবার চাইলে ডিশওয়াশিং লিকুইড বা অন্যান্য ভালো গ্রিস-কাটিং ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। পরিষ্কারের পর ভালো করে মুছে নেবেন যাতে করে মরিচা না পড়ে। 

পরিশেষে বলা যায়, গাড়ি ব্যবহারের পাশাপাশি গাড়ির যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ইজিনের সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জুড়ি নেই। উপরিউক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার গাড়ির ইঞ্জিনের যত্ন নিতে পারেন।

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close