হোম এবং লিভিং

আপনার বাসার জন্য পরিবেশবান্ধব পেইন্ট ও ডেকোরেশন আইডিয়া

নিজের বাসা সাজানো সবার স্বপ্ন! তবে অনেকেই সঠিক উপায় নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। সেই সাথে এখন পরিবেশ বান্ধব সাজসজ্জার গ্রহণযোগ্যতাও দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। ঘরের আকারের উপর ভিত্তি করে আপনার রুমের সাজসজ্জা গোছাতে হবে। এ লেখায় পরিবেশ বান্ধব পেইন্ট ও ডেকোরেশন আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করা হলো।

আলোকসজ্জা এবং স্থাপনকৌশল

ঘরের আলোকসজ্জা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আলো ঘরের পরিবেশকে সরাসরি প্রভাবিত করে। তাই ঘরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ আলোকসজ্জা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘরের যেকোনো রুমের ক্ষেত্রে আলোর সঠিক ব্যবহার বিরাট পরিবর্তন আনতে পারে। তবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার সবচেয়ে উপযোগী। সূর্যের আলোর ব্যবহারে একদিকে যেমন বিদ্যুতের সাশ্রয় হয়, অপরদিকে প্রাকৃতিক এই আলো যোগান দেয় ভিটামিন ডি – এর। ভিটামিন ডি শরীরের জন্য বেশ ভাল। এক্ষেত্রে ঘরে প্রাকৃতিক আলোর সর্বাধিক উপযোগিতা পেতে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমনঃ ঘরের ডিজাইন করার সময় বেডরুম এবং বাথরুমের ডিজাইন উত্তর দিকে মুখ করে করা, যাতে আলো কিছুটা কম আসে। অপরদিকে লিভিং রুম এবং কিচেনের ডিজাইন এক্ষেত্রে দক্ষিণ দিকে করা যেতে পারে। কারন, সেখানে আলোর প্রভাব কিছুটা বেশি। ঘরে হালকা রঙ ব্যবহার করা উচিত, এতে ঘরকে উজ্জ্বল মনে হয়। ঘরের স্নিগ্ধতা বজায় রাখার জন্য ভারী পর্দার বদলে হালকা পর্দার ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে ঘরে প্রাকৃতিক বাতাস চলাচল করতে পারে এবং ঘর থাকবে সতেজ।

পর্দা এবং কার্পেটের জন্য কাপড় নির্বাচন

পর্দা ঘরের সাজসজ্জায় একটি গুরুত্বপূর্ণ। ঘরের ব্যবহার্য আনুষঙ্গিকের জন্য এমন কিছু ব্যবহার করা উচিত যা প্রাকৃতিক উপাদান থেকে সংগৃহীত হয়েছে। সিনথেটিক উপাদান যেমন- নাইলন, পলিসটার এগুলো প্লাস্টিকের আরেকটি রূপ। কুশন, পর্দা, চাদর, কার্পেট নির্বাচনে সিনথেটিক উপকরণ আছে এমন কিছু বাদ দিতে হবে। এর পরিবর্তে প্রাকৃতিক তন্তু যেমন- সুতি, জুট কিংবা সিল্কের জিনিস ব্যবহার করতে হবে।

রিসাইকেল জিনিস ব্যবহার

পরিবেশ বান্ধব ইন্টেরিওর ডিজাইনের ক্ষেত্রে রিসাইকেল করা আসবাব ব্যবহার সবচেয়ে সুবিধাজনক হতে পারে। এক্ষেত্রে পরিমিত জিনিসের ব্যবহা্র, নিত্যদিনের ব্যবহারের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর উপাদান আছে এমন জিনিসের ব্যবহার কমিয়ে আনাই উচিত। যেমন- নতুন কিছু কেনার আগে বাড়িতে পড়ে থাকা বাড়তি জিনিসগুলোর ব্যবহার আপনি চাইলে করতে পারেন। ঘরের অব্যবহৃত কাপড়গুলোকে একটু সৃজনশীল উপায়ে ঘরের চেয়ার, সোফা কিংবা কুশনের কভার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। পুরনো কাঠের দরজাকে আবার ব্যবহার করে বানিয়ে ফেলতে পারেন, টেবিল, জানালার ফ্রেম কিংবা দেয়ালের মাপ অনুযায়ী বানিয়ে ফেলতে পারেন চাহিদা অনুযায়ী কোনো শেল্ফ। আবার ঘরে থাকা অপ্রয়োজনীয় গ্লাস অথবা জার ব্যবহার করতে পারেন সেগুলোতে ফুলদানী বানিয়ে কিংবা গাছ লাগিয়ে। আবার সেই জারগুলোকে সাজিয়ে করতে ফেলতে পারেন সুন্দর সব লাইটিং।

রঙ বা পেইন্ট

ঘরের দেয়ালের রঙ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । তাই একে অবশ্যই পরিবেশ বান্ধব হতে হবে। কিছু কিছু দেয়ালে বিষাক্ত উদ্বায়ী জৈব যৌগের ব্যবহার হয়ে থাকে – যা আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। এই রঙগুলো ব্যবহারের ফলে বমি, এলার্জি সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই রঙ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমন রঙ বেছে নিতে হবে যেগুলোর ওপরে “Low Odor/VOC” লেখা থাকবে এবং অ্যাসিটোন ও ফর্মালডিহাইড মুক্ত থাকবে। 

পরিশেষে বলা যায়, নিজের বাড়ির সাজসজ্জার জন্য ঘরের আকার, আলোর আগমন, রিসাইকেল জিনিস ব্যবহার করে আপনি আপনার ঘরকে মনের মত সাজাতে পারেন।

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close