How to get a teaching job in Bangladesh
বাংলাদেশে কীভাবে শিক্ষকতার চাকুরি পাবেন
ছাত্রছাত্রীদের সাথে কাজ করাটা অভাবনীয় রকমের অভিজ্ঞতা হতে পারে। আপনি কোন বিষয়ে আগ্রহী সেটি কোনো ব্যাপার নয়। যে বিষয়েই হোক না কেনো, আপনার অর্জিত জ্ঞান অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করতে পারাটা সবসময়ই চমৎকার এক অনুভূতি। আপনি আরও বেশি সন্তুষ্টি লাভ করবেন যখন দেখবেন যে, আপনার কোনো ছাত্র বা ছাত্রী শেষ পর্যন্ত আপনার পাঠের বিষয়বস্তু বুঝতে পারছে এবং তাদের নিজেদের জীবনে তা কাজে লাগাচ্ছে।
শিক্ষার ব্যপক প্রসার এবং সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নে এর গুরুত্বের দিক বিবেচনায় বাংলাদেশে পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার জন্য শিক্ষকতা একটি বড় ক্ষেত্র। এখানে অনেক পদ খালি রয়েছে, এবং সামান্য চেষ্টা করলে আপনি সত্যিই যা পছন্দ করেন তেমন একটি কাজ খুঁজে নিতে পারবেন। যদিও অনেক পদ খালি রয়েছে তবুও এ চাকুরির জন্য খোঁজাখুঁজির কাজটি এতটাই নিষ্ঠার সাথে করা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ যেমনটি আপনি আপনার একান্ত পছন্দের কোনো চাকুরি খোঁজার জন্য করতেন।
বাংলাদেশে কীভাবে আপনার একান্ত পছন্দনীয় শিক্ষকতার চাকুরি খুঁজে পাবেন সে বিষয়ে এখানে কিছু টিপস দেয়া হলো।
আপনার পছন্দমাফিক শিক্ষার্থী এবং পাঠদানের বিষয় খুঁজে নিন।
শিক্ষকতার চাকুরি খোঁজার সময় প্রথমেই আপনার যা করা উচিত তা হলো, আপনি ঠিক কোন বিষয়ে পাঠদান করতে চান এবং কোন বয়সের শিক্ষার্থীদেরকে পাঠদান করতে চান সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। এ ব্যাপারে আসল সত্যিটা হলো এই যে, কারো কারো নবীন বয়সের শিক্ষার্থীদেরকে পড়ানোর ক্ষেত্রে চমৎকার দক্ষতা রয়েছে, আবার কোনো কোনো শিক্ষক অপেক্ষাকৃত বয়স্ক ছাত্রছাত্রীদেরকে পড়াতে পছন্দ করেন। শেষ পর্যন্ত যদি আপনার এমন চাকুরি জোটে যেখানে আপনি ছাত্রছাত্রীদের সাথে নিজেকে ঠিক মানিয়ে নিতে পারেন না, তাহলে তা আপনার কর্মদিবসগুলোকে ক্লান্তিকর করে তুলবে। সুতরাং আপনি কোন বয়সের ছাত্রছাত্রীদেরকে পড়াতে চান তা আগে থেকেই ঠিক করে নেয়াটা জরুরি।
আপনি যখন আপনার পাঠদানের বিষয় সম্পর্কে বিবেচনা করবেন তখন এমনসব বিষয় বেছে নেয়াটাই সহায়ক হবে যে বিয়গুলোতে ইতোমধ্যেই আপনার ভালো দখল রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার যদি আইটি বা তথ্য-প্রযুক্তি সম্পর্কিত পড়াশুনা থেকে থাকে তবে আপনি হয়ত প্রযুক্তি বিষয়ে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য একজন ভালো শিক্ষক হতে পারবেন। গণিত, ভাষা-শিক্ষণ অথবা আপনার আগ্রহ রয়েছে তেমন বিষয়ের ব্যাপারেই একথাটি খাটে। তদুপরি, আপনি যেসব বিষয়ে ভালো সেই সব বিষয়ভিত্তিক চাকুরি খুঁজলে যেসকল বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকুরির পদ খালি আছে সেসব জায়গায় আপনাকে লুফে নেবে।
আপনি কোন জায়গায় কাজ করতে চান সে সিদ্ধান্ত নিন
শিক্ষকতার চাকুরি খোঁজার সময় আপনি ঠিক কোন জায়গায় কাজ করতে চান সে সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় ব্যয় করুন। আপনি যদি নির্দিষ্টভাবে ঢাকায় অথবা বাংলাদেশের যে কোনো অঞ্চলে চাকুরি চান তবে চাকুরি খোঁজার সময়ই আপনাকে তা মনে রেখে এগুতে হবে। যাদের নিজের একটি পরিবার রয়েছে অথবা নিজের বাড়ি ছেড়ে বেশি দূরে গিয়ে চাকুরি করা যাদের পক্ষে সম্ভব নয়, তাদের পক্ষে এমনসব চাকুরি খোঁজার কোনো কারণ নেই যেসব চাকুরিতে সবাইকে দেশান্তরি হয়ে চরকির মত ঘুরে বেড়াতে হয়। যাহোক, যাদের পিছুটান কম আছে অথবা দেশের যে কোনো প্রান্তে যেতে যাদের কোনো আপত্তি নেই তাদের জন্য সমস্ত বাংলাদেশ জুড়ে শিক্ষকতা পেশায় বেছে নেয়ার মত অনেক পদ খালি রয়েছে।
দরকারি চাহিদাগুলো পূরণ করে নিন
কোনো কোনো ক্ষেত্রে, বাংলাদেশে শিক্ষকতার জন্য আপনার কিছু অতিরিক্ত যোগ্যতা চাওয়া হতে পারে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য যে ধরনের চাহিদা তা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের চাহিদার চাইতে ভিন্নতর হওয়াটাই স্বাভাবিক, তাই এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে। নির্দিষ্ট কোনো পদের জন্য চাহিদাকৃত যোগ্যতা যদি আপনার না থাকে তবে সময় নিয়ে ভেবে দেখুন যে, কোনো একটি বিদ্যালয়ে আপানার স্বপ্নের চাকুরিটি পেতে আপনাকে আর কী কী করতে হবে। ইতোমধ্যে, আপনি আপনার জীবনবৃত্তান্তটিকে সমৃদ্ধ করার এবং অভিজ্ঞতার ঝুলি বাড়ানোর উপায় হিসেবে আপনার বর্তমান যোগ্যতা অনুযায়ী অন্য কোনো বিদ্যালয়ে কাজ শুরু করে দিন।
চাকুরির আবেদন করুন
আপনার সবকিছু প্রস্তত হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে চাকুরির জন্য আবেদনপত্র পাঠাতে শুরু করুন। বিদ্যালয়ের পদগুলোতে আবেদনের জন্য আপনি অনলাইনের শ্রেণিকৃত, নিয়োগদাতা এবং অন্যান্য বিকল্প বিজ্ঞাপনগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আবেদন পাঠানো শুরু করার সময় ঠিকভাবে দেখে নিন যে আপনি আপনার আবেদনের সাথে আপনার জীবনবৃত্তান্ত ও কভার লেটার যুক্ত করেছেন কিনা। আপনার জীবনবৃত্তান্ত হলো আপনার পূর্ববর্তী পেশাজীবনের ইতিহাস, আপনার গুণাবলী, আপনার বিশেষ যোগ্যতা, আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং শিক্ষকতার সাথে সংশ্লিষ্ট আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ইত্যাদির ব্যাখ্যামূলক বিবরণ। অন্যদিকে কভার লেটার হলো নিয়োগদাতার নিকট আপনার পরিচয় ও আপনি কোন পদের জন্য আবেদন করতে চান তা তুলে ধরার একটি উপায়। আজকের প্রযুক্তিচালিত ও ই-মেইল নির্ভর বিশ্বে চাকুরির জগতে প্রবেশ করার জন্য আপনার কভার লেটার এবং জীবনবৃত্তান্ত হতে পারে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। একবার যদি আপনি নিজেকে নিজের যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন তবে নিয়োগদাতাদের সাথে যোগাযোগ করা এবং শুন্যপদে নিয়োগপ্রাপ্তির জন্য তাদের সাথে কথাবার্তা চালানো আপনার জন্য সহজ হবে।
আবেদন করার পর সংশ্লিষ্ট পদ সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া
আপনি আবেদন করার পর নিশ্চিত হোন যে, আপনি নিয়োগপদ্ধতির সাথে কঠোর প্রচেষ্টায় তাল মিলিয়ে চলছেন কিনা। কোনো নিয়োগদাতা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি আপনার সাথে যোগাযোগ না করে তবে আপনি নিজেই বরং তাদের সাথে যোগাযোগ করলে ভালো হয়। যদিও কেউ কেউ এটিকে বাড়াবাড়ি এবং অনধিকারচর্চা বলেই মনে করেন, তবুও পদটি এখনও খালি রয়েছে কিনা সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়ার জন্য আপনার এই উদ্দ্যোগী হয়ে যোগাযোগ করাটা বেশিরভাগ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রশংসনীয় বলে মনে করবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনও হয় যে, ঠিক যোগাযোগ করার সঙ্গে সঙ্গেই তারা আপনাকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকতে পারেন এবং তাতে করে আপনি যোগাযোগ করার কারণে বেশ খুশি বোধ করবেন।
আপনাকে সময় দেয়ার জন্য নিয়োগদাতাকে ধন্যবাদ জানান
আপনি শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হোন বা না হোন, নিয়োগকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনাকে সময় দেয়ার জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানানোটা সবসময়ই অতীব উত্তম। আপনি আগে থেকেই বলতে পারবেন না যে, কার দ্বারা কী উপকার হবে; তাই আপনার পক্ষে যতটা বেশি সম্ভব লোকজনের সাথে যোগাযোগ এবং সম্পর্ক রক্ষা করে চলুন। এমনও হতে পারে যে, তারা যে শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছেন তাকে দিয়ে যদি তাদের কাজ না চলে তবে হয়ত তারা শেষপর্যন্ত আপনাকে ডেকে পাঠাতে এবং পদটি গ্রহণের প্রস্তাব দিতে পারেন।
অন্যদেরকে শিক্ষাদান করা এবং ছাত্রছাত্রীদেরকে নিয়ে সময় কাটানো যদি আপনি পছন্দ করেন তাহলে শিক্ষকতার চাকুরি আপনার জন্য স্বপ্নের চাকুরি হতে পারে। শিক্ষকতার পেশায় আপনার যোগ্যতার উপযুক্ত সবচেয়ে ভালো পদটি পাওয়ার অনুসন্ধানে নামার সময় এই টিপসগুলো মনে রাখুন এবং এগুলো আপনাকে অনুসন্ধানকাজে সাহায্য করবে। আগামীদিনের নবীন মানসকে গড়ে তোলার সুযোগ শিক্ষকরাই পেয়ে থাকেন, তাই তাদের পক্ষে নিজের পছন্দনীয় কাজ খুঁজে নেয়ার মত সামর্থ থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ।