প্রপার্টি

২০১৯-২০ সালের বাজেট বাংলাদেশের প্রপার্টি বাজারে কেমন প্রভাব ফেলবে?

“সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ,” এই বছরের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা অর্থাৎ বাজেটের জন্য জুতসই একটি স্লোগান বটে।

২০১৯ সালের ১৩ই জুন বাংলাদেশ সরকার ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য জাতীয় বাজেট পেশ করেন। বাংলাদেশের এবারের সম্পূর্ণ বাজেট পরিকল্পনা ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে – যা আমাদের দেশের ইতিহাসে এই পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অংকের এবং বিগত দশ বছরে পাশ হওয়া যেকোনো বাজেটের চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি। আসছে অর্থবছরের ব্যাপারে দেশের সরকারি কর্মকর্তারা বেশ আশাবাদী রয়েছেন বলে মনে হচ্ছে, আর সেজন্যই হয়ত এবারের স্লোগানটিও বেশ জমজমাট।

এই বছরের পরিকল্পনায় বিশেষ ভাবে দেশের শেয়ার বাজার এবং হাউজিং সেক্টরের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। কেননা এই খাতগুলো বেশ লম্বা একটা সময় ধরে স্থির ও অপরিবর্তনীয় হয়ে ছিল, কিন্তু এবারের নতুন পলিসিগুলো বাস্তবায়ন করা শুরু হলে এই খাতগুলোর পরিস্থিতি আসন্ন মেয়াদে অবশ্যই আগের চেয়ে আরো উন্নত হয়ে উঠবে। এখানে মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রাইভেট খাতগুলোতে সামগ্রিক ভাবে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং সেখান থেকে ভবিষ্যতে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে দেয়া।

আমাদের আজকের প্রতিবেদনে আমরা বাংলাদেশের প্রপার্টি মার্কেটের পরিস্থিতি এবং হাউজিং খাতে এবারের নতুন বাজেট পরিকল্পনার প্রভাব কেমন হবে সে সম্পর্কে জানবো।

প্রপার্টি মার্কেটের উপর প্রভাব

নির্ধারিত নতুন বাজেট

আমাদের সরকার এমন একটি দেশের স্বপ্ন দেখে, যেখানে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের একটি নিজস্ব স্থায়ী ঠিকানা হবে। আর ঠিক এই কারণেই এই বছরের বাজেটের মধ্যে সর্বমোট ৬ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা দেশের হাউজিং সেক্টরের জন্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় এই বৃদ্ধি লক্ষণীয় মাত্রায় বেশি। যেখানে গত বছর প্রাথমিক ভাবে ৪ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে ৬ হাজার ১৪৬ কোটিতে আনা হয়।

প্রপার্টি পলিসিতে পরিবর্তন

গেলো বছরের মেয়াদে উচ্চমাত্রায় ট্যাক্সের হার আরোপ করার কারণে দেশের হাউজিং খাত এক রকম মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা যায় যে রেজিষ্ট্রেশন ফি, মুনাফার উপর ট্যাক্স, স্ট্যাম্পের শুল্ক, লোকাল এবং মূল্যের উপর আরোপিত ট্যাক্স অর্থাৎ ভ্যাট সবকিছু মিলিয়ে নির্ধারিত দামের উপর সামগ্রিক ট্যাক্স প্রায় ১৪-১৬% -এ গিয়ে ঠেকেছে। যেকোনো প্লট বা জমি কেনার ক্ষেত্রে বাড়তি আরো ১৭% ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। দলিলের মূল্যের উপর নির্ভর করে এই ফি-র কিছুটা তারতম্য হতে পারে।

এ রকম উচ্চমাত্রার ট্যাক্সের হারের কারণে বেশির ভাগ মানুষই দেশের প্রপার্টির মার্কেটে বিনিয়োগ করতে চান না, আর এভাবেই পুরো ইন্ডাস্ট্রি বলতে গেলে ব্যাপকভাবে থমকে পড়ে। কিন্তু ঠিক এখানেই এবারের নতুন পলিসিগুলো কার্যকর হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা আশা করছি যে প্লট ও জমির রেজিষ্ট্রেশন ফি অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে এবং ফ্ল্যাটগুলোতে এলাকাভিত্তিক ট্যাক্স বর্তমান হারের চেয়ে ২০% কমিয়ে দেয়া হবে।

বিনিয়োগে নতুন অনুপ্রেরণা

এবারের বাজেটের নতুন পলিসি দেশের প্রপার্টি মার্কেটে, বিশেষ করে মূল অর্থনৈতিক এলাকা এবং উচ্চপ্রযুক্তির পার্কগুলোতে বিনিয়োগ করায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অর্থাৎ এনবিআর দেশের প্রপার্টি বাজারে ট্যাক্সবিহীন (অপ্রকাশিত) ইনকাম পর্যন্ত কোনো রকম জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই বিনিয়োগ করার অনুমতি দিচ্ছে। ক্রেতারা তাদের অপ্রকাশিত ইনকামের উপর ১০% ট্যাক্স দিতে রাজি থাকলে এবং উপযুক্ত প্রপার্টি ট্যাক্সগুলো পরিশোধ করলে, তাদের বিনিয়োগের উৎস অর্থাৎ ইনকামের ধরণ সম্পর্কে কোনো উত্তর আর তাদের দিতে হবে না। এই পলিসিটি বর্তমানের ইনকাম ট্যাক্স ম্যানুয়ালের ধারা ১৯বিবিবিবিবি এর অধীনে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে ক্রেতারা যেকোনো আবাসিক বিল্ডিং এবং অ্যাপার্টমেন্ট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ ট্যাক্স ট্রিটমেন্ট পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবে।

এই পলিসিটি ক্রেতাদের তাদের গোপন কিংবা অপ্রকাশিত সঞ্চয় থেকে বিনিয়োগ করায় উৎসাহিত করেছে, আর এর থেকে দেশের অর্থনীতিতে বিভিন্ন রকম ফান্ড প্রবেশ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এছাড়াও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই অনুপ্রেরণার কারণে প্রাইভেট সেক্টরে চাকরির সুযোগও বেড়ে যাবে। সব মিলিয়ে  উন্নয়নের পথে দেশের অর্থনীতি আরো এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারবে।

কালো টাকা সাদা করার পরিকল্পনা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তথা এনবিআরের এই নতুন পলিসিগুলোর একটা বড় অসুবিধা হচ্ছে কালো টাকা সাদা করার পথ আরো সহজ হয়ে যাওয়া। প্রপার্টি মার্কেটে বিনিয়োগ করতে চাইলে বিনিয়োগকারীরা কোন রকম আইনি পদক্ষেপ নেয়া ছাড়াই তাদের অবৈধ পথে উপার্জন করা কালো টাকা চালান করে দিতে পারবেন। এর মানে হচ্ছে যে অদূর ভবিষ্যতে প্রপার্টি খাতের বিনিয়োগে একটা বড় সড় জোয়ার আসবে, যা এক দিকে যেমন অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ খুলে দেবে, অন্য দিকে অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নৈতিক অবক্ষয় তৈরি করবে। টাকা সাদা করার পদ্ধতিকে অনুমোদন দেয়ার কারণে দেশে অবৈধ ও অনৈতিক ব্যবসার প্রসার বেড়ে যাবে। আর এই চর্চা থেকে ভবিষ্যতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো অনৈতিক লেনদেন ও ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করবে, ফলে যেমন সরকার রাজস্ব খাতে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হবে, তেমনি দেশের অর্থনীতির চাকাও একটা সময় হুমকির মুখে পড়ে যাবে।

প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী আরোপিত ট্যাক্স

অপ্রকাশিত বা গোপন ইনকামের উপর প্রাথমিকভাবে ১০% ট্যাক্স পরিশোধের পর বিনিয়োগকারীদের নিম্নের গাইডলাইন অনুযায়ী আরোপিত প্রপার্টির ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবেঃ

  • মিটারের চেয়ে কম হলে প্রতি বর্গমিটারে ৪ হাজার টাকা

গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল এবং দিলকুশা এলাকার ক্ষেত্রেঃ

ফ্ল্যাট/ কমার্শিয়াল স্পেস এর জন্য

  • ২০০ বর্গ২০০ বর্গমিটারের চেয়ে বেশি হলে প্রতি বর্গমিটারে ৫ হাজার টাকা

প্লট বা জমির জন্য

  • প্রতি বর্গমিটারে ১৫ হাজার টাকা

ধানমন্ডি, মহাখালী ডিওএইচএস, লালমাটিয়া, উত্তরা, বসুন্ধরা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, কারওয়ান বাজার, বিজয়নগর, সেগুনবাগিচা, নিকুঞ্জ, খুলশী, আগ্রাবাদ ও নাসিরাবাদ এলাকার ক্ষেত্রে:

ফ্ল্যাট/ কমার্শিয়াল স্পেস এর জন্য

  • ২০০ বর্গমিটারের চেয়ে কম হলে প্রতি বর্গমিটারে ৩ হাজার টাকা
  • ২০০ বর্গমিটারের চেয়ে বেশি হলে প্রতি বর্গমিটারে ৫ হাজার টাকা

প্লট বা জমির জন্য

  • প্রতি বর্গমিটারে ১০ হাজার টাকা

অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনভুক্ত এলাকাগুলোর ক্ষেত্রেঃ

ফ্ল্যাট/ কমার্শিয়াল স্পেস এর জন্য

  • ১২০ বর্গমিটারের চেয়ে কম হলে প্রতি বর্গমিটারে ৮০০ টাকা
  • ১২০ থেকে ২০০ বর্গমিটারের মধ্যে হলে প্রতি বর্গমিটারে ১ হাজার টাকা
  • ২০০ বর্গমিটারের চেয়ে বেশি হলে প্রতি বর্গমিটারে ১ হাজার ৫০০ টাকা

প্লট বা জমির জন্য

  • প্রতি বর্গমিটারে ৫ হাজার টাকা

পৌরসভা বা পৌর এলাকাগুলোর ক্ষেত্রেঃ

ফ্ল্যাট/ কমার্শিয়াল স্পেস এর জন্য

  • ১২০ বর্গমিটারের চেয়ে কম হলে প্রতি বর্গমিটারে ৩০০ টাকা
  • ১২০ থেকে ২০০ বর্গমিটারের মধ্যে হলে প্রতি বর্গমিটারে ৫০০ টাকা
  • ২০০ বর্গমিটারের চেয়ে বেশি হলে প্রতি বর্গমিটারে ৭০০ টাকা

প্লট বা জমির জন্য

  • প্রতি বর্গমিটারে ১ হাজার টাকা

নির্ভরশীল(/পরিপোষক) ইন্ডাস্ট্রিগুলোর উপর প্রভাব

বাংলাদেশের হাউজিং সেক্টরের উপর কম করে হলেও আনুমানিক ২৫০ টি ইন্ডাস্ট্রি নির্ভরশীল। সেজন্যই প্রপার্টির বাজারে ছোটখাটো যেকোনো পরিবর্তন দেশের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে রাতারাতি বড় মাপের পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলতে পারে। এবারের বাজেট ঘোষণা হওয়ার পর যে কয়েকটি খাতে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলো হলোঃ

সিমেন্ট শিল্প

দেশের সিমেন্ট শিল্প এবারের বাজেট থেকে প্রপার্টি মার্কেটের মত তেমন কোন সুবিধাই পায় নি। বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ) -এর মতে এবারের জাতীয় বাজেটে সিমেন্ট উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের উপর ভ্যাট ৫% বাড়িয়ে দেয়ায় প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের দাম ৪২ টাকা করে বেড়ে গেছে।

বিসিএমএ -এর প্রতিনিধিরা এই পলিসির বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন। তারা দাবি করেছেন যে বাড়তি ট্যাক্স আরোপ করার কারণে গোটা ইন্ডাস্ট্রির অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়ে গেছে। বর্তমানে দেশের সিমেন্ট শিল্প যথেষ্ট স্বয়ংসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশে অবস্থিত ৪২টি কোম্পানিগুলোর মধ্যেই আমাদের লোকাল মার্কেটে সরবরাহ করার পাশাপাশি দেশের বাইরেও রপ্তানি করার যোগ্যতা রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে ট্যাক্স বাড়িয়ে দেয়া হলে তাদের পক্ষে একই রকম কাজ চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। ফলস্বরূপ কোম্পানিগুলো ব্যবসায়িক ক্ষতিতে পড়বে এবং শেষমেষ লক্ষ লক্ষ লোকের চাকরি ঝুঁকির সম্মুখীন হবে।

এই সেক্টরে দাম বেড়ে যাওয়া মানে হচ্ছে দেশের মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হওয়া। সিমেন্টের দাম সামান্য পরিমাণ বেড়ে গেলে অনেক মানুষই নতুন বিল্ডিং -এ বিনিয়োগ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। ফলে দেশের প্রপার্টি মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য উৎসাহ দেয়ার আসল উদ্দেশ্যটাই মাঠে মারা যাবে।

স্টিল ও রড শিল্প

বাংলাদেশের রড শিল্পে প্রতি টনে ১০০০ টাকা ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে,  বিলেট অর্থাৎ ধাতব টুকরো থেকে রড উৎপাদনের শুল্ক আগে ছিলো ৯০০ এখানেও সেটি এখন ১০০০ টাকা। এই ট্যাক্স আরোপের কারণে রড ম্যানুফ্যাকচারিং এর সামগ্রিক খরচ লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়ে গেছে, আর এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে চাহিদার উপর। যেকোনো বিল্ডিং -এর জন্যই রড একটি অত্যাবশ্যক উপাদান, কিন্তু এত চড়া দামের কারণে মানুষ একটা সময় বিল্ডিং -এ বিনিয়োগ করার আগ্রহই হারিয়ে ফেলবে। পরবর্তীতে এর প্রভাব স্টিল মিলগুলোর উপরও পড়বে, ফলস্বরূপ চূড়ান্ত অবস্থায় ব্যবসাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে এবং মালিকরা দেউলিয়া হয়ে পথে বসে পড়বেন।

অন্যান্য শিল্প

বালি ও ইট ইত্যাদি উপাদান সাপ্লাই দেয় এমন ছোটখাটো শিল্পগুলোও এদের সাথে জড়িত অন্যান্য বড় শিল্পগুলোতে পলিসির পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সামগ্রিকভাবে এই পরিবর্তন ইন্ডাস্ট্রির প্রত্যেকটি শিল্পের উপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

দেশের অর্থনীতি

প্রপার্টির বাজার থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে দেশের অর্থনীতি। বিনিয়োগের জন্য অনুপ্রেরণা ও সুযোগ তৈরি করার কারণে সব ক্রেতারা মার্কেটে এসে ভিড় করবেন এবং বিপুল পরিমাণে প্লট বা জমি, ফ্ল্যাট এবং বিল্ডিং কিনে নেবেন। এর ফলে দেশের টাকা ঘুরে ফিরে দেশেই বিনিয়োগ হবে আগের চেয়ে বেশি। আরো বেশি চাকরির সুযোগ তৈরি হবে এবং সব মিলিয়ে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারও বেড়ে যাবে। প্রপার্টির মার্কেটে সুযোগ সুবিধা বাড়ার দরুণ এখানে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগও আসা শুরু হয়ে যাবে।

তবুও এখানে কিছু সমস্যা উঠে আসতে পারে। রড ও সিমেন্টে ট্যাক্সের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে সরকারি মেগা-প্রজেক্টগুলো ব্যাপক মাত্রায় ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়াবে। অর্থাৎ, প্রয়োজনীয় নির্মাণ সামগ্রীর উপর আরো বেশি ট্যাক্স আরোপিত হওয়ার কারণে পদ্মা সেতুর মত প্রজেক্টগুলোতে আগের অনুমানের চেয়েও অনেক বেশি খরচ করতে হবে। শেষমেষ দেখা যাবে যে, সরকার ট্যাক্স থেকে যত না আয় করবেন, তার চেয়েও বেশি এই প্রজেক্টগুলোতে ব্যয় করতে বাধ্য হবেন। যার ফলে রাজস্ব থেকে আয়ের প্রায় কোনো অংশই আর সরকারের হাতে অবশিষ্ট থাকবে না।

ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা ও সম্ভাবনা

রিহ্যাব

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) এবারের নতুন পলিসিগুলোর একনিষ্ঠ সমর্থন করছেন এবং তারা অদূর ভবিষ্যতে সরকারের সাথে ডেভেলপিং পার্টনার হিসেবে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন। তারা ভবিষ্যতে এই পলিসিগুলোতে আরো কিছু সুযোগ সুবিধা যোগ করার চিন্তা ভাবনা করছেন, যার ফলে নিম্নবিত্ত কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য প্রপার্টি খাতে বিনিয়োগ করা আরো সহজ হয়ে যাবে। এতে করে একটা সময় দেশে বসবাসকারী প্রত্যেকটি নাগরিকের নিজস্ব একটি জায়গা থাকবে।

অর্থমন্ত্রীর পরিকল্পনা ও প্রস্তাব

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এইবারের বাজেটে পিপিপি এর অধীনে পূর্বাচল নিউ টাউনে ৬০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনার ব্যাপারে উল্লেখ করেছেন।

বর্তমানে হাতিরঝিল, গুলশান, বনানী, উত্তরা, কুড়িল এবং পূর্বাচল এলাকায় জলাবদ্ধতা দমন করার জন্য বেশ কিছু খাল ও জলাশয় খনন করার কাজ চলছে। ভবিষ্যতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য আরো বেশ কিছু খাল খনন করার পরিকল্পনাও রয়েছে অর্থমন্ত্রীর।

শেষ কথা

আমাদের ও দেশের জীবনধারায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পরিকল্পনাগুলোর প্রভাব এখনও পুরোপুরি পড়েনি। এই পলিসিগুলো সরকারি কর্মকর্তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো অর্জন করার জন্য ঠিক কতটা কার্যকর বা ক্ষতিকর তা সময়ই বলে দেবে। এখন আপাতত আমরা এটুকু বলতে পারি যে দেশের প্রপার্টির বাজারে নতুন নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, আর আমাদের ভবিষ্যতের জন্য হাউজিং সেক্টরে বিনিয়োগ করাটা বেশ ভালো আইডিয়া হতে পারে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে আপনার কী মত? জানান আমাদের কমেন্ট সেকশনে!

ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট, বিল্ডিং এবং জমির জন্য শত শত বিজ্ঞাপন খুঁজে পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ঘুরে আসুন, আজই ভিজিট করুন Bikroy.com -এ!

Properties in DhakaProperties in Chattogram
Properties in Dhaka DivisionProperties in Khulna Division
Properties in SylhetProperties in Chattogram Division
Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close