ইন্টেলের নতুন “মার্জড রিয়ালিটি ” প্রজেক্ট এলয় হেডসেট
সান ফ্রান্সিসকোতে ইন্টেল ডেভেলপার ফোরামে এই পণ্যটি বাজারে ছাড়ে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, এর মাধ্যমে ভোক্তারা ব্যাপকভাবে ভার্চুয়াল রিয়ালিটির দিকে ঝুঁকবে। যদিও ইন্টেল একে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা প্রায়-বাস্তব বলছে না; বলছে মার্জড রিয়ালিটি বা মিলিত বাস্তব।
এই হেডসেটটির মোড়ক উন্মোচন করলেও সহসাই তারা এটিকে বিক্রির জন্য বাজারে তুলবে না। এটা একটা রেফারেন্স ডিভাইস যা ইন্টেল অন্য কোম্পানিগুলির কাছে বিক্রি করবে, যাতে তারা এর ওপর ভিত্তি করে নতুন হেডসেট বানাতে পারে। এই হেডসেটটির বাইরের দিকে কোন তার বা সেন্সর নেই। কোন ধরনের তার না থাকায় অ্যালয় নামের এই হেডসেট নিয়ে ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে বিচরণের সময় অন্যান্য হেডসেটের মতো তারে জড়িয়ে যাওয়া বা অন্য কোনো ধরনের দুর্ঘটনায় পড়ার সম্ভাবনা নেই।
হেডসেটটিতে রয়েছে ইন্টেলের “রিয়েলসেন্স” ডেপ্থ সেন্সিং ক্যামেরা। এই ক্যামেরা মার্জড রিয়ালিটির অভিজ্ঞতা পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এগুলো ব্যবহারকারীর নিজের হাত এবং আশেপাশের অন্যান্য বস্তু শনাক্ত করে। হাত বুঝতে পারা, সেইসাথে বিভিন্নজনের আঙ্গুলের পার্থক্য করার ক্ষমতাই অ্যালয়ের বিশেষত্ব কারণ এটির কোন কন্ট্রোলার বা নিয়ন্ত্রকের প্রয়োজন হয় না। শুধু হাতের স্পর্শেই ব্যবহারকারী ভার্চুয়াল জগতের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে।
ডিভাইসের স্ক্রিনে ভার্চয়াল জগত এমনভাবে ভেসে উঠবে যা বাস্তবের মতোই মনে হবে ইউজারের কাছে। বাস্তবে কাছেই দাঁড়ানো কোন বন্ধুকে যেমন দেখাবে, ভার্চুয়াল জগতেই তেমনই ঠেকবে। এর ডেমোতে ভার্চুয়াল জগত বাস্তবের মতো স্বাভাবিক দেখায় না। স্বাভাবিক দেখানোর জন্য বাস্তবের মতো অভিব্যক্তি বা ভঙ্গিমাগুলো থাকতে হতো, তা না হলে ভার্চুয়াল জগত খুব অপরিচিত ঠেকবে।
যদিও এ প্রযুক্তি খুবই প্রারম্ভিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে অ্যালয়–এর প্রজেক্টে ইন্টেলের সাথে আছে মাইক্রোসফট। মাইক্রোসফট ঘোষণা দিয়েছে তাদের উইন্ডোজ হলোগ্রাফিক প্লাটফর্ম আগামী বছর উইন্ডোজ টেন পিসিতে হাত দেবে। আর ভিআর/এআর/এমআর হেডসেটগুলোতে উইন্ডোজের ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) ও দ্বিমাত্রিক ( ট্যুডি) অ্যাপস ব্যবহারের ব্যবস্থা রাখবে।
এই এমআর পণ্যগুলো হয়তো এইচটিসি ভাইব বা ওক্যুলাস রিফ্টের সঙ্গে পেরে ওঠার মতো না। কিন্তু সেটিই হচ্ছে ব্যাপার। সে কারণেই সাধারণ মানুষ যাতে সহজে বিকল্প বাস্তবে ঢুকতে পারে সে কথা মাথায় রেখেই অ্যালয় বানানোর চিন্তা এসেছে। তাই গুগল কার্ডবোর্ড বা স্যামসাংয়ের গিয়ার ভিআরের মতো কিছু থেকে এটি মাত্র এক পা দূরে। এখন যেটুকু বাকি আছে তা পুরোটাই নির্মাতাদের ওপর। তাদের কাজ হচ্ছে, শুধু সফটওয়্যারগুলো ব্যবহারের জন্য হার্ডওয়্যারকে উপযোগী করে তোলা।