Nougat: গুগল এন্ড্রয়েড এর একটি নতুন অনবদ্য অপারেটিং সিস্টেম।
গত ২০০৮ সালে এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম চালুর পর থেকে ক্রমান্বয়ে তা ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিকে শীর্ষে উঠে এসেছে। এর প্রতিটি সংস্করণে নতুন সব ফিচার যোগ করেছে গুগল। সেইসঙ্গে এর নান্দনিকতা ও কার্যক্ষমতা বাড়িয়েছে। তাই এর একেকটি নতুন সংস্করণ হয়েছে আগেরগুলোর তুলনায় উন্নত। এর সর্বশেষ সংস্করণ হিসেবে এবছর এসেছে এন্ড্রয়েড এন, যাতে ডেভেলপারদের জন্য বেটা প্রোগ্রাম সংযোজিত হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে গুগল জানিয়েছে এর নাম হবে নুগাট। এতে নতুন যেসব সুবিধাগুলো থাকছে তাও জানিয়েছে তারা। সেগুলোর কয়েকটি নিয়ে সংক্ষেপে কিছু কথা নিচে:
ন্যাটিভ মাল্টি উইন্ডো মোড
মাল্টি উইন্ডো এনড্রয়েডে নতুন নয়। যেমন স্যামসাং ও এলজি বহু বছর ধরে এই প্রোডাক্টিভিটি ফিচারটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর মাধ্যমে, আপনি পাশাপাশি বা একটির ওপর আরেকটি অ্যাপ্লিকেশান চালাতে পারবেন, কাজের ক্ষেত্রে যা খুবই খুবই সহায়ক।এর বিশেষত্ব হচ্ছে, এন্ড্রয়েডের এই নতুন ভার্সনটি চালিয়ে আপনি ভবিষ্যতের যে কোন ডিভাইসে এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করা যাবে। একারণে এখন ডেভেলপাররা তাদের অ্যাপের জন্য মাল্টিউইন্ডো মোড তৈরি করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।আগে ডেভেলপারদের একেক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের চাহিদা অনুযায়ী অ্যাপ বানাতে হতো। সে কারণে এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি ছিল ধীর।
এই মোডটি এখন স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের জন্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে তা আইওএসের স্প্লিট স্ক্রীণের মতো না। মোডটি এমন সময়ে এলো যখন বাজারে বড় স্ক্রীনের ফোনগুলো সবচেয়ে বেশি চলছে।
সাম্প্রতিক অ্যাপ আরো স্মার্ট
একটি ছোট কিন্তু দারুণ একটি সংযোজন এসেছে যার মাধ্যমে শুধু দুবার আঙ্গুলের ছোঁয়ায় (ডাবল ট্যাপিং) সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে ব্যবহৃত দুটি অ্যাপ্লিকেশনের একটি থেকে অন্যটিতে যেতে পারবেন।এটি দ্রুত এবং অত্যন্ত সুবিধাজনক। এছাড়াও সাম্প্রতিক ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশানগুলোর তালিকার ওপরে একটি “ক্লিয়ার অল” বাটন রয়েছে। এই তালিকা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই লম্বা সময় থেকে অব্যবহৃত অ্যাপগুলোকে সরিয়ে দেবে যাতে সেটি জঞ্জাল না হয়ে যায়।
ডোজ অন দ্য গো
মার্শম্যালো বাজারে এনেছে ডজ মোড যা আপনার স্মার্টফোন ফেলে রাখলে আপনার ব্যাটারি চার্জ সংরক্ষণের জন্য কিছু অ্যাপসকে নিজ থেকে নিস্ক্রিয় করে রাখবে।এমনকি ফোন ব্যবহারের সময়েও একইভাবে আপনার চার্জ বাঁচানোর জন্য ডজকে সক্রিয় রাখবে ডজ অন দি গো।যেহেতু স্মার্টফোন তেমন একটা ফেলে রাখা হয় না, এক্ষেত্রে এটি আগেরগুলোর চেয়ে বেশি দরকারি।
কুইক সেটিংস কাস্টমাইজ করুন
আবার এটি অ্যান্ড্রয়েডের মধ্যে একেবারে নতুন কোন ফিটার নয়। কিন্তু প্রথমবারের মত অ্যানড্রইডের স্টক ভার্সন বা সমন্বিত সংস্করণ আপনাকে বাড়তি কোনো পদক্ষেপ বা সমস্যা ছাড়াই কুইক সেটিংস পুনর্বিন্যস্ত করার সুবিধে দিচ্ছে।
নোটিফিকেশনগুলো আরও উন্নত হয়েছে
অ্যান্ড্রয়েড-এর নোটিফিকেশন ব্যবস্থার অনেক বছর ধরেই সেরা। তবু নুগাট-এর ক্ষেত্রে নোটিফিকেশন ব্যবস্থাটি আরও উন্নত ও কার্যকরী করতে গুগল আরও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রতিটি অ্যাপ্লিকেশন থেকে প্রাপ্ত বিজ্ঞপ্তি বা নোটিফিকেশনগুলো এখন একসাথে একত্রিত করা হয়, যাতে সেগুলো সহজেই আলাদা করা যায়। এর অর্থ, গুরুত্বপূর্ণ নোটিফিকেশনগুলো অগ্রাধিকার পাবে, বিভিন্ন গেমের নোটিফিকেশনের চেয়ে। নুগাট-এ নোটিফিকেশনের তালিকা বা ড্রপ ডাউন থেকে সরাসরি উত্তর দিতে পারবেন, অর্থাৎ এর জন্য আপনার আবার জিমেইল অ্যাপ খুলতে হবে না। আপনি ড্রপ ডাউন থেকেই তা করতে পারবেন সরাসরি।
ডেড্রীম ভিআর এন্ড ভালকান
ডেড্রীম নামে নুগাট একটি নতুন ভিআর প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। যদিও এখনও ডেড্রীমের হার্ডওয়্যার আসেনি (যদি না গুগল এর মধ্যেই ডেড্রীম প্রস্তুত করে না থাকে)। স্মার্টফোনে ভিআরের কার্যক্ষমতা বিল্ট-ইন সাপোর্ট থাকলে আরো বাড়ে। একই ঘটনা ভালকান এপিআই’র ক্ষেত্রেও – এতে কাজ হবে আরও গতিশীল, মসৃণ, থাকবে আরও ডিটেইল গ্রাফিক্স। এই ভালকান এপিআই প্রথম ব্যবহৃত হয় গ্যালাক্সি এসসেভেন/এজ-এ। এখন সেটি সংস্থাপন করা হচ্ছে নুগাট-এ।
এলজি ভি২০
এগুলো অ্যান্ড্রয়েডের অনেকগুলো নতুন সংযোজনের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। সবচেয়ে বড় চমক হচ্ছে গুগল আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে অ্যান্ড্রয়েড ৭.০ যে প্রথম স্মার্টফোনটি আসছে সেটি নেক্সাস স্মার্টফোন না, বরং এলজি ভি২০। যদিও এর মধ্য দিয়ে এলজির প্রতি আকর্ষণ ও বিক্রি কিছুটা বাড়তে পারে, কিন্তু ভি২০ এবং ২০১৬ নেক্সাস বাজারে আসার আগ পর্যন্ত এর মধ্যে তুলনা করা কঠিন।