মোবাইল

পিক্সেল – গুগলের নতুন স্মার্টফোন

অক্টোবরের ৪ তারিখে গুগল তাদের স্মার্টফোনের নতুন দু’টি সংকলন – পিক্সেল এবং পিক্সেল এক্সএল বাজারে আনার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। এই প্রথমবারের মত তাদের অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সংকলন দু’টিতে ‘নেক্সাস’ নামের কোন লোগো থাকবে না যা কিনা বর্তমান স্মার্টফোনের বাজারে স্বয়ং গুগলের একটি নাটকীয় আবির্ভাব হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ‘পিক্সেল’ নামটি গুগলের সেরা ফিচার সমৃদ্ধ আদর্শ পন্যের প্রতীক এবং নতুন স্মার্টফোন দু’টোকেও তারা একই আদর্শের ধারাবাহিকতা রূপে তুলে ধরতে চায়।  ৬৪৯ ডলার প্রারম্ভিক মুল্যের এই ফোন দু’টি এখন পর্যন্ত গুগলের তৈরি সবচেয়ে ব্যয়বহুল ফোন।

2

পিক্সেল ফোন দু’টোর উপর কোন থার্ড পার্টির ব্র্যান্ডিং বা লোগো নেই, কেবল একটি বড় অক্ষরের ‘G’ রয়েছে যা সরাসরি গুগলকে নির্দেশ করে। গুগলের ভাষ্যমতে ফোন দু’টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবই তাদের নিজেদের তৈরি এবং ফোনে যেসব সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার সংযোজন করা হয়েছে সবই উচ্চ এবং নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তির। বিগত বছরের নেক্সাস সিক্সপি-এর সাথে নতুন স্মার্টফোন দু’টোর কিছুটা সাদৃশ্য থাকলেও নতুন ফোনের বিস্তারিত ফিচারগুলো আরও অনেক বেশি উন্নত। গুগলই প্রথম কুয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন ৮২১ প্রসেসর এবং ডেড্রিমের কম্প্যাটিবল ডিভাইস সংযোজনকারী স্মার্টফোন তৈরিকারক কোম্পানি।

3

পিক্সেলের ডিসপ্লেটি ৫ ইঞ্চি ১০৮০পি এমোলেড এবং পিক্সেল এক্সএল-এর ডিসপ্লেটি ৫.৫ ইঞ্চির কোয়াড এইচডি (২৫৬৯x১৪৪০)। ডিসপ্লে এবং ব্যাটারি ক্যাপাসিটি বাদ দিলে দু’টো ফোনের বাকি সব ফিচার একই রকম যে কারণে অপেক্ষাকৃত ছোট ফোনটি পছন্দ করলেও মানের ব্যাপারে আপনাকে কোনরকম দ্বিধাগ্রস্ত হতে হবে না। তবে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল এই ফোনের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বৈশিষ্ট্য। প্রথম মডেলটির স্টোরেজ ৩২ গিগাবাইট এবং দ্বিতীয় মডেলটির স্টোরেজ ১২৮ গিগাবাইট। এর মাঝে আর কোন বিকল্প নেই। আপনি যদি মনে করে থাকেন ফোনে মাইক্রো এসডি কার্ড সংযোজন করবেন তবে তারও কোন সুযোগ নেই। যেহেতু পিক্সেলে কোন মাইক্রো এসডি কার্ড ব্যবহারের সুযোগ থাকছে না সেহেতু পিক্সেল ব্যবহারকারীরা গুগল ফটোসে পাবেন ফ্রী এবং আনলিমিটেড মিডিয়া স্টোরেজের সুবিধা।

4

গুগল ফোন দু’টোর আরেকটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল ওয়াটার রেজিস্টেন্স। তাদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় এই বৈশিষ্ট্যটির কথা বলা হয়নি এবং তাদের অফিসিয়াল স্পেসিফিকেশন শিটেও এ ব্যাপারে কোন রেটিং নেই। ওয়াটার রেজিস্টেন্স এখন আর কোন অতিরিক্ত ফিচার নয় বরং সব ধরণের ফোনে এই ফিচারটি থাকা একরকম বাধ্যতামূলক। সুতরাং এই ফিচারটি ছাড়া পিক্সেল ফোন প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পিছিয়ে থাকবে।

5

অন্যদিকে ডিএক্সওমার্ক নামের একটি জনপ্রিয় ক্যামেরা রিভিউ এনটিটি পিক্সেল ফোন দুটির রিভিউ প্রকাশ করেছে এবং পিক্সেলকে ৮৯ নম্বর দিয়ে সর্বোচ্চ রেটিং দিয়েছে। এই রিভিউ অনুযায়ী পিক্সেলের ক্যামেরার মান বর্তমান বাজারের সেরা – গ্যালাক্সি এস সেভেন, নোট এস সেভেন এবং আইফোন সেভেন/প্লাসের ক্যামেরাগুলোকেও অতিক্রম করেছে।

6

নেক্সাসের ধারাবাহিকতায় পিক্সেল ফোনগুলোর প্রধান সুবিধাটি হল সফটওয়্যারের অব্যাহত সাপোর্ট। ভবিষ্যৎ পিক্সেল ব্যবহারকারীদের গুগল দিচ্ছে দুই বছর ব্যাপী অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন আপডেট এবং তিন বছর ব্যাপী সিকিউরিটি আপডেটের পূর্ণ নিশ্চয়তা। সেই সাথে আইফোন অথবা অন্য অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে পিক্সেলে পরিবর্তিত হবার একটি অসাধারণ সহজ সুযোগ দিচ্ছে গুগল।

7

প্রতিযোগিতামূলক মূল্য হাকানোর পাশাপাশি গুগল তার স্মার্টফোনগুলোকে মানের দিক থেকে বর্তমান বাজারের আইফোন সেভেন এবং গ্যালাক্সি এস সেভেনের মত পাওয়ারহাউজগুলোর আদর্শ প্রতিযোগী হিসেবে গণ্য করছে। অন্যান্য প্রতিযোগী ফোনগুলোর এমন সব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেগুলো পিক্সেলের নেই। সুতরাং এই ভিন্নধর্মী ফোনটির ব্যাপারে ক্রেতাদের সাড়া এবং প্রতিক্রিয়া কেমন হবে তা-ই এখন দেখার বিষয়। বর্তমানে অনেকে ব্যবহারকারীই দ্রুত আপডেট এবং ভ্যানিলা অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা চান। কিন্তু এ কারণে যদি ব্যবহারকারীরা বর্তমান বাজারের অসাধারণ সব ফিচারসমৃদ্ধ স্মার্টফোনগুলোকে এড়িয়ে যান তবে তা একটি তর্কসাপেক্ষ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। পিক্সেল স্মার্টফোন ক্রয় করতে চাইলে আপনি এখনই প্রি-অর্ডার করতে পারেন আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জার্মানি এবং অস্ট্রেলিয়াতে আর ১৩ই অক্টোবর থেকে আপনি প্রি-অর্ডার করতে পারবেন ভারতে। পিক্সেল বাজারে আসছে তিনটি রঙে – রুপালী, কালো এবং নীল। নীল রঙটি থাকছে বিশেষভাবে শুধুমাত্র আমেরিকান ক্রেতাদের জন্য।

8

9

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close