নাইকি ম্যাগ : কল্পনা নয়, এখন বাস্তব!
প্রায় ৩০ বছর আগে অভিনেতা মাইকেল জে. ফক্স, ‘মারটি ম্যাকফ্লাই’ এর ভূমিকায় অভিনয় করেন সে সময়ের ব্যবসাসফল ছায়াছবি ‘ব্যাক টু দি ফিউচার’ সিরিজগুলোতে। ছবিটির অনেক দৃশ্য সমসাময়িক সংস্কৃতিতে গভীর ছাপ রাখে এবং অনেক দীর্ঘ সময় ধরে এই ছবিগুলো ভবিষ্যৎ পৃথিবী সম্পর্কে আমাদের স্বপ্ন ও ধারণাগুলোকে একটি রূপ দিতে থাকে। একটি ছোট দৃশ্যে দেখা যায়, ছবির মূল চরিত্র ১৯৮৫ থেকে ২০১৫ তে এসে পৌঁছায় এবং ‘নাইকি ম্যাগ’ নামে এক অত্যাধুনিক স্নিকার ব্যবহার করে। মারটি জুতো জোড়ায় পা গলিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবে বলে “বাহ! পাওয়ার লেইস” এবং জুতো জোড়া নিজেই নিজেকে মারটির পায়ের মাপের সাথে সামঞ্জস্য করে নেয়।
https://www.youtube.com/watch?v=9lJu1gLvctQ
২০১১ সালে প্রায় ৩০০০০ এরও বেশি মানুষ একটি পিটিশন স্বাক্ষর করে যেখানে তারা নাইকিকে ‘মাইকেল জে. ফক্স ফাউন্ডেশনের’ সাথে যৌথ উদ্যোগে এই বিশেষ জুতো জোড়া তৈরির জন্য অনুপ্রাণিত করে। পরবর্তীতে এই জুতোগুলোকে নিলামে বিক্রি করার মাধ্যমে ১০ দিনে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিল সংগ্রহ করা হয় যা মাইকেল জে. ফক্স ফাউন্ডেশনকে পারকিনসন্স রোগের চিকিৎসা এবং গবেষণার কাজে ব্যয় করার জন্য দান করা হয়।
বর্তমানে নাইকি পুনরায় ‘নাইকি ম্যাগ ২০১৬’ এর ঘোষণা দেয় এবং পূর্বের মত মাইকেল জে. ফক্স ফাউন্ডেশনের’ সাথে যৌথ উদ্যোগে কাজ করে পারকিনসন্স রোগ নিরাময়ের জন্য তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনা নেয়। জুতোগুলো দেখতে হুবহু ছায়াছবিতে যেমন দেখানো হয়েছিল ঠিক তেমন; স্বয়ংক্রিয় লেইস ও জুতোর নিচে আলো সব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। নাইকি ম্যাগ ২০১৬ ‘লিমিটেড এডিশন’, মানে স্বল্প সংখ্যক জুতো বানান হবে, মাত্র ৮৯ টি। কিন্তু যে কেউ কিনতে পারবেন না জুতোগুলোকে। এই ৮৯ জোড়া জুতো পৃথিবী জুড়ে লটারির মাধ্যমে ছাড়া হবে। জুতো জোড়া কিনতে চাইলে আপনাকে ১০ ডলার দিয়ে একটি টিকেট কিনতে হবে এবং আপনার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ার জন্য প্রার্থনা করতে হবে।
https://www.youtube.com/watch?v=z7Cyv3cvIxY
যারা সত্যি সত্যি নাইকির স্বয়ংক্রিয় লেইস প্রযুক্তির জুতো জোড়া চান তাদের জন্য নাইকি নিকট ভবিষ্যতে নিয়ে আসছে ‘নাইকি হাইপার এডাপ্ট ১.০’ নামক জুতো যার মূল্য ধরা হচ্ছে ৩০০ – ৪০০ মার্কিন ডলার। ‘ম্যাগ’ এবং ‘হাইপার এডাপ্ট’ শুধু সাজিয়ে রাখার জন্য নয়। এগুলো খেলাধুলায় ব্যবহারোপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। নাইকি ১০ বছর এই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেছে ব্যবহারকারীর জন্য এর উপযোগিতা এবং সব রকমের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার জন্য। জুতোর ভিতরে পা ঢোকানোর সাথে সাথে ভিতরে অবস্থিত সেন্সরগুলো তা বুঝতে পারে। পায়ের আকারের উপর নির্ভর করে জুতোর ভিতরে অবস্থিত কম্পিউটার হিসেব করে নেয় কতটুকু আঁটসাঁট হতে হবে এবং সেই অনুযায়ী পায়ের সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামঞ্জস্য করে নেয়। জুতোর এই সক্রিয়ভাবে আকার নেয়াকে জুতোর কলারের দিকে অবস্থিত দুটি বাটনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। একটি হলুদ বাটন আলো নিয়ন্ত্রণ করে। জুতোগুলোকে অবশ্যই চার্জ দিতে হবে। এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত জুতোগুলোর মাধ্যমে নাইকি প্রমাণ করে দিল যে ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনাগুলো আসলে কোন কাল্পনিক কিছু নয়। এখন শুধু প্রয়োজন ‘হোভারবোর্ড’গুলো বাজারজাত হওয়ার জন্য অপেক্ষা!