স্যামসাং নিয়ে আসলো নতুন গিয়ার এসথ্রি স্মার্টওয়াচ
ঘড়ির ওপরে একটি ঘুর্ণনশীল ফ্রেমে ঐতিহ্যগত যন্ত্রপাতির সঙ্গে মোডেম প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল গত বছর বাজারে আসা গিয়ার এসটু। প্রায় একই সময়ে বার্লিনে অনুষ্ঠিত প্রযুক্তি মেলা – আইএফএ ২০১৬-তে স্যামসাং বাজারে আনে দু’পদের গিয়ার এসথ্রি, যার একটি ফ্রন্টিয়ার, অন্যটি ক্লাসিক।
ক্লাসিক প্রারম্ভিক পর্যায়ের মডেল। তাই ফ্রন্টিয়ারের মতো ক্ষমতাসম্পন্ন না। তাই যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি স্ট্যান্ডার্ড ৮১০জি মাননিরীক্ষায় ক্লাসিক মডেলকে পেছনে ফেলে দিয়েছে ফ্রন্টিয়ার। সেই বিচারে ফ্রন্টিয়ার অনেক বেশি সহনক্ষম যা হাত থেকে পড়ে গেলে বা অন্য কোনো আঘাতে ক্ষতির আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে কম। একই সঙ্গে অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডায় টিকে থাকতে সক্ষম। এছাড়াও ফ্রন্টিয়ার তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে উচ্চক্ষমতা ও উচ্চগতিসম্পন্ন, যা আপনার স্মার্টফোন নির্ভরতার ইতি টানবে।
নকশা গিয়ার এসথ্রির সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য। উভয় মডেলই চমৎকার ও চরম উৎকর্ষমণ্ডিত। দু’টোই প্রায় একই রকম দেখতে, বানানো হয়েছে ঐতিহ্যের সঙ্গে তাল রেখে, এবং এদের আকার ও ওজনও একইরকম। গত বছরের ঘড়িগুলোর তুলনায় এবার ঘড়ির আকার বাড়িয়ে ৪৬ মিলিমিটার করেছে স্যামসাং। অনেকেই এই সিদ্ধান্তে খুশি নাও হতে পারেন, কিন্তু গিয়ার এসটু পড়লে হাত কেমন খালি খালি লাগতো, সেইসঙ্গে ঘড়িটিকে তেমন শক্তপোক্ত মনে হতো না। এছাড়া নতুন এই দুইটি মডেলে ২২ মিলিমিটারের ফিতে জোড়া হয়েছে, যাতে পছন্দসই ফিতে ব্যবহার করতে পারেন অসংখ্য ফিতে থেকে আপনার পছন্দেরটি বাছাই করে।
একটি বড় ফ্রেমে বড় আকারের ১.৩ ইঞ্চি সুপার অ্যামোলেড (রঙ্গীন) ডিসপ্লে এবং ৩৮০ মিলিএম্পিয়ার ব্যাটারি যা স্যামসাং বলছে যার চার্জ টানা চার দিন চলবে। স্ক্রিনের ওপর কর্নিংয়ের গরিলা গ্লাস এসআরপ্লাসপ্লাস-এর আবরণ আছে, যা দাগ পড়া থেকে রক্ষা করে। । এ ঘড়িতে একটি মাপসই জিপিএস সেন্সর বসিয়েছে স্যামসাং। নতুন গরিলা গ্লাস প্রথম আসে আইএফএ ২০১৬ মেলায়। পরিধেয় ডিভাইসের জন্য এটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা। এটি গরিলা গ্লাস ফোর ও ফাইভের মতো অভঙ্গুর। আঁচড়ের দাগ প্রতিরোধের ক্ষমতা নীলকান্তমণি স্ফটিকের মতো।
এর কাঠাম বা চ্যাসিসটি ৩১৬এল স্টেইনলেস স্টীল দিয়ে তৈরী (যার কারণে এটি অন্যান্য ব্রান্ডের ঘড়ির চেয়ে একটু ভারি)। ক্লাসিকের রয়েছে গতানুগতিক স্টেইনলেস স্টীল ফিনিস, আর ফ্রন্টিয়ারের বিযুক্ত ম্যাট ফিনিস। উভয় ঘড়ির একটি আইপি৬৮ মানের, যার মানে তারা ধুলোরোধী এবং ৩০ মিনিটের জন্য দেড় মিটার জলে ডুবে থাকলেও কিছু হবে না। তাই বলে সাতারের সময় এগুলো পরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে না স্যামসাং। এখন স্যামসাং একটি স্পিকার এবং মাইক্রোফোন বসিয়েছে ঘড়িতে। মানে আপনি এখন এটি দিয়ে কল করতে এবং রিসিভ করতে পারবেন।
স্যামসাং এখনো নতুন পরিধেয়সমূহের বা ঘড়িগুলোর মূল্যের বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি। কিন্তু তারা বলেছে সেগুলো ২০১৬ সালের শেষের দিকে পাওয়া যাবে। তবে স্যামসাং গিয়ার এস থ্রি ঘড়িটিকে খুব উৎকর্ষ দিয়ে বানাতে চেয়েছে কারণ এটি দিয়ে সে বাজিমাত করতে চায়। তবে কী হয় তা দেখার জন্য মোটো ৩৬০ এবং অ্যাপল ওয়াচ টু বাজারে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। স্যামসাং আশা করছে, এগুলো আগের চেয়ে আলাদা বা ভাল কিছু হবে না।