Bikroy.com-এর মাধ্যমে অনলাইনে দ্রুত আপনার খামারের পশু বিক্রি করুন
যাদেরই গৃহপালিত পশু রয়েছে তাঁদের মাঝেমধ্যে তা বিক্রি করার প্রয়োজন পড়ে। আপনি যদি আপনার সব পশু বিক্রি করেন, বা আপনার পশুর খামার ছোট করতে চান, অথবা নতুন পশুর জন্য জায়গা করে দিতে চান, তবে আপনাকে বিক্রি করতেই হবে, এটাই বাস্তবতা। অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, বিষয়টি আপনার জন্য অনেক সময় কঠিন হতে পারে, কিন্তু bikroy.com-এর মতো অনলাইনে বেচাকেনার সাইট আপনার কাজটি অনেক সহজ করে দিতে পারে। অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিলে আপনি সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্রেতার নিকট পৌছাতে পারবেন, বিশেষ কোনো পশুর জন্য বড় বাজারের প্রয়োজন হলে, তার জন্য এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, অনেক বেশি ক্রেতার মানে আপনি তাড়াতাড়ি বিক্রি করতে পারবেন। চলুন দেখি কী করে আপনি এই পদ্ধতি থেকে লাভবান হতে পারেন।
পশুর স্বাস্থ্য
আপনি শুরু করার আগে, আপনার সকল পশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করুন। ভালো পশুকল্যাণ শুধু মানবিকতার জন্যই নয়, বরং এটি একটি ভালো ব্যবসায়িক রীতিও বটে। সুস্থ পশু, অসুস্থ বা রুগ্ন পশুর চাইতে তাড়াতাড়ি ও বেশী দামে বিক্রি হবে এবং কিছু দিন পর অসন্তুষ্ট ক্রেতা আপনার বিক্রিত কবুতর বা ছাগল অসুস্থতার কারণে ফেরত নিয়ে আসার ঝুঁকি কম থাকবে। সবকিছু স্বাস্থ্যবান রাখতে সবসময় পরিষ্কার ও শুষ্ক পরিবেশ বজায় রাখুন, এবং প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রাখুন। ঘোলা বা ধূসর চোখ, ডায়রিয়া, পালক উঠে যাওয়া, এবং অন্যান্য অসুস্থতার লক্ষণগুলোর দিকে নজর রাখুন। অসুস্থ পশুকে আলাদা করে রাখুন, যাতে অন্যান্য পশু আক্রান্ত না হয়, এবং সুস্থ হওয়ার আগে তা বিক্রি করার চেষ্টা করবেন না।
যেসব জিনিস মনে রাখতে হবে
সবকিছু শুরু করার সময় অনেক কিছু বিবেচনা করতে হবে, কিন্তু সবার আগে যে জিনিসটি জানতে হবে তা হলো আপনি আসলে কী বিক্রি করছেন? সাধারণ “মুরগি” (“chickens”) এবং “শুদ্ধ জাতের ডিম পাড়া মুরগি” (“purebred laying hens”)-এর মধ্যে পার্থক্য আছে। তাই আপনার পশুর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে দ্রুত একটি তালিকা তৈরি করে ফেলুন। এরা সাধারণত কী দামে বিক্রি হয় তা জানার জন্য সময় নিয়ে কিছু বিজ্ঞাপন দেখুন। আপনার দাম প্রায় একই রকম রাখুন। কারণ তা যদি খুব বেশি হয় তবে লোকজন তা এড়িয়ে যাবে, আর যদি খুব কম হয় তবে সবাই ভাববে নিশ্চয়ই পশুর অসুখ রয়েছে বা সেটি বন্ধ্যা।
কী করে একটি ভালো তালিকা তৈরি করবেন
যখন আপনার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও দাম সম্পর্কে ভালো ধারনা হবে, তখন আপনার বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করুন। প্রথমে একটি শিরোনাম লিখুন। প্রাথমিক কিছু তথ্য শুরুতেই দিয়ে দেবেন, তাই পশুর ধরণ, লিঙ্গ, বয়স, এবং ক্রেতাকে আকর্ষণ করে এমন বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য থাকলে তা যোগ করুন। যেমন, শুধুমাত্র “বিক্রির জন্য মুরগী” বা “দুগ্ধবতী ছাগল” – এর চাইতে “এক বছর বয়সী ডিমপাড়া মুরগি – বিশুদ্ধজাত” অথবা “৩ বছর বয়সী ছাগী – ভালো দুগ্ধবতী”, এই শিরোনামগুলো ভালো, কারণ এগুলোতে অনেক বেশী তথ্য দেওয়া আছে এবং বিজ্ঞাপনে ক্রেতার ক্লিক করার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
অধিকাংশ তথ্য তালিকার মধ্যে যাবে। আপনি শিরনামে যা বলেছেন তার পুনরাবৃত্তি করুন এবং প্রাসঙ্গিক কিছু থাকলে তা উল্লেখ করুন, যেমন ধরুন আপনার পশুর জাত, তা কী কাজে লাগতে পারে, এটা সংকরজাত কি না এবং এরকম আরও অনেক কিছু। অন্যদের থেকে মূল্যবান করে তুলবে এমন বিশেষ কিছু থাকলে তা হাইলাইট করুন। যেমন, যে ভেড়াটি সবসময় যমজ ভেড়ার জন্ম দেয় তা অন্যদের থেকে বেশী মূল্যবান হবে।
প্রজাতি সংক্রান্ত তথ্য হাইলাইট করার চেষ্টা করুন। হাঁস –মুরগীর ক্ষেত্রে উল্লেখ করে দেবেন যে মুরগীটি ডিমের জন্য না কী মাংসের জন্য। গবাদিপশুর ক্ষেত্রে স্তনের বাঁটগুলো ঠিকঠাক কার্যকরী আছে কি না তা উল্লেখ করে দিতে হবে। কর্মক্ষম পশু যেমন, ঘোড়া, ষাঁড়, এবং কিছু কুকুর, এদের কী ধরনেরর প্রশিক্ষণ রয়েছে, এগুলো কী কাজে লাগে, এবং এদের ব্যক্তিত্ব কেমন তা উল্লখ করতে হবে। এদেরকে পোষা প্রাণী হিসেবে রাখা যাবে কি না তাও বলে দিতে পারেন।
ছবি দিতে পারলে খুবই ভালো হয়। একটি স্পষ্ট ছবি দেয়ার চেষ্টা করুন, যাতে আপনার সাথে যোগাযোগের পূর্বে রঙ, গঠন, এবং অবস্থা ভালোভাবে দেখতে পারে। অতিরিক্ত আরও অনেক ছবি দেওয়া যেতে পারে যাতে ডিমের আকার এবং রঙ দেখা যায়, বাচ্চার গুণগতমান, অথবা সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন অঙ্গ যেমন খুর বা স্তনের বাঁটের অবস্থা ভালোভাবে দেখা যায়।
কিভাবে নজর কাড়বেন
আপনার বিজ্ঞাপনটি সঠিক ক্যাটাগরিতে দিন যাতে তা আগ্রহী ক্রেতার কাছে পৌঁছে। শিরোনামে এবং মূল অংশে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করুন যাতে সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে আপনি বেশী সংখক ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে পারেন। অন্যভাবে চিন্তা করার চেষ্টা করুন। আপনার খরগোশটি মূলত মাংসের জন্য হলেও কেউ কেউ তা পোষার জন্য বেশী আগ্রহী হতে পারে, তাই সেটি উল্লেখ করে দিন,যাতে আপনি সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্রেতার কাছে পৌছাতে পারেন।
লেনদেন
ক্রেতার সাথে প্রথম কথাবার্তা সাধারণত ফোন বা ই-মেইলের মাধ্যমে হয়ে থাকে। সাধারণত তাঁরা আপনার তালিকায় উল্লেখিত মূল্যেই রাজি হয়। অন্যথায় আপনাকে তাদের বলা দাম ভালো কি না তা ভাবতে হবে। আপনি আরও জানতে চাইবেন তাঁরা লেনদেনের সময় কিভাবে আপনাকে টাকা দেবে, এবং কিভাবে আপনার পশু পরিবহণ করবে। সাধারণত, নগদ টাকা, লেনদেনের সহজ উপায় এবং আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ক্রেতার সাথে দেখা করে লেনদেন সেরে ফেলতে চাইবেন যাতে কেউই পরবর্তীতে পিছিয়ে না যান।
আপনি যখন দেখা করবেন, তখন ক্রেতা টাকা দেওয়ার পূর্বে আপনার খামারের পশুটি ভালো করে দেখেশুনে নিতে চাইবেন। আপনি যদি বড় আকারের কোনো পশু বিক্রি করতে চান যেমন গরু বা ঘোড়া, তবে আপনার ক্রেতাদের তা হাতে ধরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে দিতে হবে, কিন্তু নাজুক প্রাণী, যেমন, হাস-মুরগী হলে কেবল চাক্ষুষ পরিদর্শন করতে বলবেন যাতে কোনো রকম রোগ বালাই ছড়াতে না পারে।
সবশেষে রয়েছে পরিবহণ। পাখির মতো ছোট প্রাণী হলে কোনো সমস্যা হবে না, কিন্তু বড় প্রাণী যেমন, গরু-বাছুর হলে তা চ্যালেঞ্জের বিষয়। আপনার যদি সেগুলো পরিবহণ করার মতো গাড়ি থাকে, তবে আপনি কম খরচে তাকে পরিবহন সুবিধা দিতে পারেন যাতে পুরো লেনদেনটি ভালোভাবে সম্পন্ন হয়।
পরিসমাপ্তি
আপনি দেখলেন, খামারের পশু বিক্রি ঝামেলার কোনো কাজ নয়। অনলাইন কেনাবেচার সাইট, যেমন- Bikroy.com ব্যবহার করে, আপনি ক্রেতাদের সাথে সহজে যোগাযোগ করতে এবং একটি সফল লেনদেন করতে পারবেন যাতে সবাই সন্তুষ্ট থাকবে।