স্পটিফাই এখন বাংলাদেশেঃ গান এবং পডকাস্টের ভুবনে এবার হারিয়ে যান নির্দ্বিধায়
গান শোনা যেন আমাদের সভ্যতার একটা অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বর্তমানে মিউজিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলো অনলাইন মিউজিকের জগতে নিয়ে এসেছে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। গত প্রায় ২০ বছরে অনলাইন মিউজিক মানেই যেখানে পাইরেসির ছড়াছড়ি ছিল সেখানে স্পটিফাইয়ের মত কিছু প্ল্যাটফর্ম এই জগতে করছে একক আধিপত্য।
২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করা সুইডিশ কোম্পানি স্পটিফাই বর্তমানে অ্যাপল, গুগল, এবং অ্যামাজনের মত কিছু প্রযুক্তি দানব কোম্পানিকে সরিয়ে রাজত্ব করছে অনলাইন মিউজিক স্ট্রিমিং-এর দুনিয়ায়। পাশাপাশি তাদের কাছে এই মুহূর্তে রয়েছে প্রায় ৯৩ টি দেশের ৩৫০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী।
স্পটিফাইয়ের মোট মুনাফা বা লভ্যাংশের ৯০ শতাংশই আসে তাদের প্রিমিয়াম সার্ভিস এর মাধ্যমে এবং বাকি ১০ শতাংশ তারা আয় করে বিজ্ঞাপন থেকে। সাম্প্রতিক সময়ে স্পটিফাই ভাবছে নিকট ভবিষ্যতে বিজ্ঞাপন থেকে তাদের আয় দ্বিগুণ করার কথা। এই লক্ষ্যে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে যে তারা শুধুমাত্র মিউজিক নির্ভরতা থেকে সরে এসে পুরো অডিও ইন্ডাস্ট্রিতেই তাদের ছাপ রাখতে চায়। যা তাদেরকে বিশ্বব্যাপী একটি বৃহৎ সংখ্যক গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করবে।
২০২০ সালের শুরুতে যখন করোনা মহামারী ব্যাপক আকারে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছিল তখন স্পটিফাই সেই সমস্ত লাভজনক ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে একটি ছিল, যাদের মার্কেট শেয়ার প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। কিছুদিন আগে একটি অফিশিয়াল ঘোষণার মাধ্যমে স্পটিফাই আরও ৮৫ টি ভিন্ন দেশে তাদের পরিষেবা নিশ্চিত করার কথা জানায়, যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া সেই তালিকায় রয়েছে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো যেখানে তাদের ফ্রি সেবা নিশ্চিত করেছে যেমন পাকিস্থান, নেপাল, ও মালদ্বীপ।
২০২১ সালের ২৩ই ফেব্রুয়ারি থেকে স্পটিফায়ের প্রায় ৭০ মিলিয়ন ট্র্যাক ফ্রি উপভোগ করতে পারবেন বাংলাদেশি ব্যবহারকারীরা। যা আপনার ওয়ার্কয়াউট, রান্না-বানা, কিংবা বিনোদন সহ দৈনন্দিন জীবনকে করবে আরও কিছুটা সহজ এবং সাবলীল।
পরিশেষে স্পটিফাইকে একটি সাফল্যের গল্প বললে ভুল কিছু বলা হবে না। পৃথিবীর বড় বড় প্রযুক্তি নির্ভর কোম্পানির সাথে পাল্লা দিয়ে তারা আজকের এই অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। এখন দেখার অপেক্ষা এই যে, তারা বাংলাদেশের সঙ্গীত প্রেমীদের মধ্যে কতখানি ভালোবাসা সঞ্চার করতে পারে।