যানবাহন

টেসলা মডেল ৩ – সবার জন্য ইলেকট্রিক গাড়ি

 

প্রযুক্তি বিশ্বে ইলেক্ট্রিক গাড়ির বেশ সমাদর রয়েছে। সাধারণ যে হাই এন্ড ইলেকট্রিক গাড়িটি সবার পছন্দের তালিকায় রয়েছে সেটি টেসলা মডেল এস লাক্সারি সেডান কিন্তু এর রিটেইল মূল্য একটি সাধারণ জো গাড়ির চেয়ে অনেক বেশি। টেসলা কিছুদিন আগে তাদের একটি ব্র্যান্ড নিউ ইলেকট্রিক গাড়ি উন্মোচন করেছে যার নাম- টেসলা মডেল ৩। এই প্রবন্ধে আমরা এই গাড়িটি নিয়ে আলোচনা করব। ধারণা করা হয়, এই গাড়িটিই বিশ্বব্যাপী ইলেকট্রিক গাড়ির চল এবং জনপ্রিয়তার প্রসার ঘটাবে।

tesla electric car

প্রযুক্তি বিশ্বে অ্যাডভান্সড টেকনোলজি ভোক্তাদের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে পৌছায় একটি বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে। সাধারণত, একটি কোম্পানি এমন একটি কিছু রিলিজ করে যেগুলো প্রযুক্তিগতভাবে অনেক উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন, এবং এগুলো বানানো হয় বিশেষ কিছু গ্রুপের জন্য যারা মূলত টেক এন্থুসিয়াসিস্ট ব্যবহারকারী এবং যাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাজে এ ধরণের পণ্যের প্রয়োজন থাকে। এই পণ্যগুলোর বাজারমূল্য অনেক বেশি হয়ে থাকে যে কারণে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া এবং নিতান্তই অঢেল অর্থ না থাকলে কেউ এগুলো কেনার কথা চিন্তা করেন না। সময়ের সাথে সাথে এই পণ্যগুলোর উৎপাদন প্রযুক্তি অনেকটাই সহজ এবং উৎপাদন খরচ কমে আসে। যার ফলে ধীরে ধীরে পণ্যগুলোর বাজারমূল্য কমে আসে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার নাগালে চলে আসে এই উচ্চ প্রযুক্তির পণ্যগুলো।

tesla car blog

টেসলা-এর সিইও এলন মুস্কের “মাস্টার প্ল্যান” ঠিক ওপরের বর্ণনাটির মতই। কোম্পানিটি প্রথমে খুবই দামি স্পোর্টস কার তৈরি করত এবং এরপর ধীরে ধীরে অর্থ ব্যয় করে লাক্সারি মডেল এস সেডান কার তৈরি করা শুরু করে। বছরের পর বছর তারা তাদের প্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে অবশেষে এমন একটি গাড়ি ডিজাইন করতে সক্ষম হয়েছে যা এই কোম্পানির আগের মডেলগুলোর তুলনায় অনেক সস্তা। তবে টেসলা তাদের অসাধারণ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং অনন্য ডিজাইনের ধারা অব্যাহত রেখে আজকের দিনের অন্যতম সফল এবং প্রভাবশালী অটোমোটিভ কোম্পানি হিসেবে বিশ্বে সামনে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে।

tesla car no gas stations

মডেল ৩ এর বাজারমূল্য হবে ৩৫,০০০ ডলার। দাম শুনে অনেক বেশি মনে হলেও আন্তর্জাতিক পরিসরে এটি অনেক ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার নাগালে। আপনি বলতে পারেন এর সাথে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গাড়ির বাজারের কি সম্পর্ক, তবে চিন্তা করবেন না, অবশ্যই যুক্তি দিয়ে আমরা সেটা বিশ্লেষণ করব। বাজারে মডেল ৩ এর আগমন মোটরগাড়ি শিল্পে এক নতুন যুগের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ভক্সওয়াগেন, শেভরলেট, বিএমডব্লিউ এবং আরো অনেক অটোমোটিভ কোম্পানি খুব শীঘ্রই ইলেকট্রিক গাড়ির নিজস্ব সংস্করণ দ্রুত বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে। যখন অন্যান্য অটোমোটিভ কোম্পানিগুলো পরিবেশবান্ধব এবং একেবারেই নতুন ইলেকট্রিক গাড়ির প্রযুক্তি বাজারে নিয়ে আসবে তখন টেসলার জন্য ব্যাপক প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে এবং বাজারে টিকে থাকার জন্য টেসলাকে তাদের গাড়িগুলোর জন্য প্রতিযোগিতামূলক দাম নির্ধারণ করতে হবে।

tesla car road map

যখন গাড়ির মূল্য এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছাবে যেখানে ফসিল ফুয়েল চালিত গাড়ির সাথে ইলেক্ট্রিক গাড়ির দামের পার্থক্য খুব বেশি থাকবেনা তখন ক্রেতারা আকর্ষণীয় নতুন প্রযুক্তির দিকেই ঝুঁকবেন। তখন প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য সব বড় বড় অটোমোটিভ কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদন তালিকার প্রথম সারিতে কিছু ইলেকট্রিক গাড়ি রাখতে বাধ্য হবে। যখন টয়োটা বা হোন্ডা পুরোপুরি এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেবে তখন বাংলাদেশের গাড়ির বাজারও এই বৈশ্বিক ট্রেন্ডটি গ্রহণ করা শুরু করবে।

মডেল ৩-কে উন্নত বিশ্বের গাড়ি মনে হলেও এর আলোকেই তৈরি হতে যাচ্ছে আগামী প্রজন্মের মোটরগাড়ি। রাতারাতিই সবাই ইলেক্ট্রিক গাড়ি কিনবে না। তবে আমরা যে পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছি তা দেখে খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে আগামী দশকের সব প্রযুক্তিই হবে ইলেক্ট্রিক নির্ভর।

গাড়ির বেচাকেনা করতে ভিজিট করুন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস Bikroy

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close