আইটি খাতে দেশের সেরা ১০ টি এন্ট্রি লেভেল চাকরি
ইন্টারনেটের আবির্ভাবের সাথে সাথে আমরা বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে চাকরির ক্ষেত্রে এক অভাবনীয় বিপ্লব দেখতে পাচ্ছি। বিশেষ করে এটি আইটি ক্যারিয়ারের জন্য সত্য। আপনি যদি বাংলাদেশে বসবাস করেন তবে জানবেন,যোগ্য প্রার্থীর জন্য অনেক ধরনের প্রযুক্তিগত কাজের ক্ষেত্র আজ উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে। আইটিটর ক্ষেত্রে, বাংলাদেশের ১০ টি এন্ট্রি লেভেলের চাকরির উল্লেখ করা হল:
১. সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার
আপনার যদি ভার্চ্যুয়াল মেশিন, লিনাক্স, এবং মাইক্রোসফট সফটওয়্যার সম্পর্কে জ্ঞান থাকে তবে আপনি সব ধরনের ব্যবসার জন্য কাস্টম সিস্টেম তৈরি করতে পারবেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আইটি’তে ক্যারিয়ার গঠনে সিস্টেম ইঞ্জিনিয়াররা সফল হয়ে থাকেন।
২. সফটওয়্যার ডেভেলপার
আপনার যদি ভালো অভিজ্ঞতা বা কম্পিউটার বিজ্ঞানে ডিগ্রী থাকে তবে বিশ্বের সবচেয়ে লোভনীয় ক্ষেত্রে এন্ট্রি লেভেলের চাকরির জন্য আপনার যোগ্যতা রয়েছে। সব ব্যবসার জন্যই সফটওয়্যার তৈরির প্রয়োজন পড়ে। এসব সফটওয়্যার ভার্চুয়াল মেশিন থেকে শুরু করে ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন,কাস্টম ওয়ার্ডপ্রেস কোডিং পর্যন্ত হতে পারে। কী করে প্রোগ্রামিং করতে হয় তা শিখলে আপনার এন্ট্রি লেভেলের চাকরির জন্য সেটি মুল্যবান সম্পদ হয়ে দাঁড়াবে। আরও দেখে নিন কিভাবে শিক্ষার্থীরা একজন প্রোগ্রামার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন।
৩. সেলস রিপ্রেসেন্টেটিভ বা বিক্রয় প্রতিনিধি
অধিকাংশ এন্ট্রি লেভেল সেলস রিপ্রেসেন্টেটিভ পদের জন্য কোনো ধরনের ডিগ্রী বা সার্টিফিকেশনের প্রয়োজন হয় না। আপনি যদি কম্পিউটার নিয়ে কাজ করতে পারেন এবং মানুষের সাথে কথা বলতে ভালোবাসেন তবে আপনি সেলসের চাকরি পেতে পারেন যা আয়ের বড় একটি উৎস হতে পারে।
৪. কপিরাইটার
প্রথাগতভাবে এটি আইটি’র চাকরি নয় কিন্তু সব প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবসার ক্ষেত্রে এটি একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভালো লেখা ছাড়া কোনো কিছুই বিক্রি সম্ভব না এবং কোনো প্রযুক্তিই অর্থবহ হবে না। তাই আপনার যদি ইংরেজি লেখার হাত ভালো হয় তবে আপনি আপনার কাজ দেখিয়ে কোনো প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম বা অন্য কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কপিরাইটার হিসেবে কাজ করতে পারবেন। আপনি যদি শব্দ নিয়ে খেলতে ভালবাসেন এবং সৃজনশীল হন তবে এটি কেবল আপনারই জন্য।
৫. ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট বা আর্থিক বিশ্লেষক
যদিও এটি শুনতে জটিল মনে হচ্ছে, কিন্তু আপনি যদি নাম্বার নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসেন তবে আপনি ব্যাংক, বিমা প্রতিষ্ঠান, বা টেলিকম ফার্ম, যেখানে গাণিতিক দক্ষতাসম্পন্ন লোকের প্রয়োজন সেখানে কাজ করতে পারবেন। এটি সবচেয়ে নিরাপদ আইটি’র চাকরিগুলোর মধ্যে একটি যা দীর্ঘ ক্যারিয়ারের দ্বার উন্মুক্ত করে দেবে। জেনে নিন শিক্ষার্থীদের জন্য টিপস : কিভাবে ব্যবসায় ক্যারিয়ার গড়ে তুলবেন?
৬. গ্রাফিক ডিজাইনার
আপনি কি জানেন গ্রাফিক ডিজাইনের চাকরি পেতে হলে আপনার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও চলবে? আপনি যদি শিল্পকলা, সৃজনশীলতা, এবং ডিজাইন ভালোবাসেন তবে আপনি এই ক্ষেত্রটিতে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিজে নিজেই অর্জন করতে পারবেন বা কাজ করতে করতে শিখতে পারবেন। গ্রাফিক্সের কাজের যথেষ্ট চাহিদা থাকার কারণে এটি বর্তমানে দ্রুতবর্ধনশীল কম্পিউটার সম্পর্কিত পেশার একটি।
৭. ডাটাএন্ট্রি
অনেক প্রতিষ্ঠানে কঠোর পরিশ্রমী লোকজন প্রয়োজন হয় যারা সবসময় গোছানো এবং দ্রুত টাইপ করতে পারে। আপনি আইটি’তে কাজ করতে চাইলে শুরু করার জন্য ডাটা এন্ট্রির চাকরিগুলো বেশ ভালো। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই পদগুলোতে কাজের সময় পরিবর্তন করা সম্ভব, ভালো বেতন, এবং পার্ট টাইম বা বাড়ীতে বসে কাজ করারও সুযোগ রয়েছে।
৮. ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর
এটি একটি চাহিদাসম্পন্ন পেশা, এই পদে কাজ করলে আপনাকে ফলাফলভিত্তিক পেশাদার হতে হবে। অনুরোধ সামলানো, কাস্টম প্রোটোকল কোডিং করা,এবং আইটি’র অন্যান্য পেশাদার লোকজনের সাথে কাজ করা আপনার দৈনন্দিন কাজের একটি অংশ হয়ে দাঁড়াবে।
৯. নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার
বিশ্বের সকল সফল প্রতিষ্ঠানগুলো নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে চলে। রাউটার, মডেম, এবং আরও অনেক কিছু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর কাজকর্ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। সিসকো এমনই একটি প্রতিষ্ঠান যা আমাদের দেশে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দিয়ে থাকে। এই পদে কাজ করার জন্য আপনার সিভি তৈরি করুন এবং আপনার আইটি অভিজ্ঞতার উপর জোর দিন।
১০. স্টোরেজ ইঞ্জিনিয়ার
ডাটার আকার ও জটিলতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একজন পেশাদার স্টোরেজ ইঞ্জিনিয়ার প্রয়োজন। আপনি যদি ডাটাবেজ পছন্দ করেন, এবং সাধারণত বড় আকারের ডাটা পছন্দ করেন তবে আপনি এন্ট্রি লেভেলের চাকরি পেতে পারেন এবং এই ক্ষেত্রে দিনে দিনে আরও উন্নতি করতে পারবেন।
আইটি’খাত অত্যন্ত দ্রুততার সাথে দিনে দিনে বিকশিত হচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য এটি বিশেষভাবে সত্যি, কেননা অনেক বিদেশী প্রতিষ্ঠান তাদের অনেক ইন্সটিটিউট এবং ট্রেনিং প্রোগ্রাম থেকে বের হওয়া দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ দিয়ে থাকে। আপনি যদি আইটি’তে এন্ট্রি লেভেলের চাকরি খুঁজে থাকেন, তবে উপরে উল্লেখিত ১০ টি দারুণ চাকরির যেকোনো একটি দিয়ে শুরু করতে পারেন। আপনি যে চাকরিই করেন না কেন তার আগে অবশ্যই ইন্টারভিউ এর জন্য নিজেকে ভালো মত প্রস্তুত করুন।