২০২৩ ইনফোগ্রাফিক: বাংলাদেশে গবাদিপশুর মার্কেট
ঈদ মানেই খুশি। আর কোরবানি ঈদ হলে তো খুশির সাথে যুক্ত হয় অতিরিক্ত ব্যস্ততা। তবে এই বছরের গরমে পশুর হাটে যাওয়া, বেছে শুনে নিজের পছন্দের কোরবানির পশুটি কেনা, সেটিকে আবার বাড়ি নিয়ে আসা এসকল ঝক্কিঝামেলার কাজগুলো একটু বেশিই অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তাই তো অনেকেই কোরবানির পশু কিনছেন অনলাইনে ঘরে বসেই। বিগত কয়েক বছরে ক্লাসিফাইড প্ল্যাটফর্ম থেকে কোরবানির পশু কেনাবেচা করতে উৎসাহিত হচ্ছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। আর তাই বরাবরের মতো এইবারও বাংলাদেশে ডিজিটাল গরুর হাট আয়োজনের পথিকৃৎ Bikroy নিয়ে এসেছে তার ফ্ল্যাগশিপ ক্যাম্পেইন ‘বিরাট হাট‘। তাহলে আর দেরি কেন? চলুন এক নজরে দেখে নেই ২০২৩-এ Bikroy ব্যবহারকারী তথ্যের উপর ভিত্তি করে এবছর বাংলাদেশের গবাদিপশুর মার্কেট এর হালচাল।
কোন শহরগুলো থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি গবাদি পশু বিক্রির বিজ্ঞাপন পোস্ট করা হয়?
যেসকল শহরগুলো থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি গবাদি পশু বিক্রির বিজ্ঞাপন পোস্ট করা হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট। শুধুমাত্র ঢাকা থেকেই ৩৬% অর্থাৎ সর্বাধিক গরু এবং ছাগলের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে যা গত বছরের তুলনায় ৪% বেশি। এমনটি হওয়ার পেছনে কারণও রয়েছে। দেশের অনেক খামারিরা ঈদের মৌসুমে তাদের গবাদি পশু বিক্রির উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে আসেন। আর তাই ঢাকা থেকে বিজ্ঞাপনের হারও বেশি।
গেল বছর ২২% জায়গা নিয়ে চট্টগ্রাম দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও এবছর ১৬% জায়গা নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে খুলনা। চট্টগ্রাম, সিলেট এবং রাজশাহী থেকে যথাক্রমে ১৩%, ১২% এবং ১১% বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে গবাদি পশুর লিস্টিং সেকশনে। এছাড়া বরাবরের মতো এইবারও বরিশাল, রংপুর এবং ময়মনসিংহ থেকে গবাদি পশু লিস্টিং বিজ্ঞাপন এসেছে যথাক্রমে ৪%, ৪% এবং ৩% করে যা তালিকার নিচের দিকে অবস্থান করছে।
গবাদি পশু কেনার পেছনে ব্যয় কেমন?
২০২৩ সালে Bikroy-এ পোস্টকৃত মোট গবাদি পশুর ৫৮%-ই ৫০ হাজার থেকে ২.৫ লক্ষ টাকার মধ্যে। ৫০ হাজার টাকার নিচে রয়েছে ২৬% পোস্ট যা গত বছরের তুলনায় ৩% বেশি। অর্থাৎ তুলনামূলক ছোট সাইজের পশুর বিজ্ঞাপনের হার এইবার বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া প্রিমিয়াম ক্যাটাগরিতে ২.৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে গবাদি পশুর বিজ্ঞাপন রয়েছে ১৪%। সবশেষে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের উপরে মাত্র ২% পশু লিস্টেড হয়েছে।
গবাদি পশু বিক্রির বিজ্ঞাপন এবং বিক্রির হার
Bikroy-এ গরু এবং ছাগলের বিজ্ঞাপন সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। শাটডাউন এবং করোনা পরিস্থিতির জন্য ২০২০ সালে বাজার ছিলো কিছুটা মন্দায়। সেখানে ৮,০৭০টি বিজ্ঞাপন থেকে বিক্রি হয়েছে ২,০৮৫টি পশু। অন্যদিকে, ২০২১ সালে বিজ্ঞাপন পোস্ট করা হয়েছে ৮,১৪৭টি এবং যার মধ্যে প্রায় ১,৩২০টি পশু বিক্রি হয়েছে। ২০২২ সালে এই সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ৮,৬৫২টি বিজ্ঞাপনে, যা থেকে বিক্রি হয়েছে ১,৭৫৪টি পশু। ২০২৩ সালে এখন পর্যন্ত পোস্টকৃত বিজ্ঞাপনের সংখ্যা ৯,০০০টি। তন্মধ্যে এখন পর্যন্ত বিক্রয়কৃত পশুর সংখ্যা ২,০০০টি।
কোন ধরণের গবাদি পশু কেনার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে?
বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ মানেই গরু কিংবা ছাগল। এক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা এবং স্বাদের দরুণ এগিয়ে আছে গরুর চাহিদা। ২০২৩ সালে Bikroy-এর হিসেব মতে, ৭৩% বিজ্ঞাপনই গরুর, যা ছাগলের বিজ্ঞাপনের তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়া ছাগলের বিজ্ঞাপন রয়েছে ২৭% যা গত বছরের তুলনায় ৪% কম।
মেম্বার বনাম গৃহস্থদের বিজ্ঞাপন
Bikroy-এ গবাদি পশুর বিজ্ঞাপনের ৩১%-ই মেম্বারদের করা পোস্ট। এর বাইরে নন-মেম্বারদের পোস্টকৃত বিজ্ঞাপনের হার এই বছর ৬৯%।
২০২৩ সালের সবচেয়ে দামি গরু
Bikroy-এর ওয়েবসাইটে এই পর্যন্ত বছরের অন্যতম দামি গরুর বিজ্ঞাপন দিয়েছে মিল্ক ল্যান্ড এগ্রো প্রতিষ্ঠানটি। ১,০০০ কেজির এ গরুটির দাম চাওয়া হয়েছে ৩০ লক্ষ টাকা।
শেষকথা
আমাদের দেশে বর্তমানে অনলাইন গরুর হাটের জনপ্রিয়তা ও প্রয়োজনীয়তা দুটোই বাড়ছে। সুতরাং, আপনি যদি অনলাইন গরুর হাট বা সরাসরি হাট থেকে কোরবানির পশু কেনার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে গবাদি পশু কেনার উপায়গুলো সম্পর্কে সচেতন ও নিশ্চিত হয়ে নিন।
আমাদের পক্ষ থেকে আপনাকে এবং আপনার পরিবারের সবাইকে আগাম ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা!