কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের জন্য Bikroy.com-এর সুবিধাবলী শীর্ষক ওয়েবিনার
চলতি বছরের লকডাউনে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস Bikroy.com গত ১৫ এপ্রিল, ২০২১ ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অনলাইন বিজনেসের গুরুত্ব এবং Bikroy.com গ্রাহকদের জন্য যেসব সুবিধা দিচ্ছে’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করে। ওয়েবিনারটিতে মূলত লকডাউন পরিস্থিতি বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে কীরকম প্রভাব ফেলবে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসা গ্রাহকদের কাছ থেকে নিয়ে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
লকডাউনে মেম্বারদের ব্যবসার প্রসারে Bikroy মেম্বারদের জন্য বেশি ভাউচার ও প্রমোশনাল টুল ব্যবহার, ডেডিকেটেড কাস্টমার সাপোর্ট, ইএমআই ইত্যাদি সুবিধা দিচ্ছে। এছাড়াও বেশি আগ্রহী ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাতে এবং দ্রুত বিক্রি করতে Bikroy থেকে মেম্বারদের জন্য দেওয়া হচ্ছে বিশেষ টিপস।
ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন Bikroy.com-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ঈশিতা শারমিন, Bikroy-এর কর্পোরেট সেলস লিড সঞ্জয় বিশ্বাস, Bikroy-এর ভেহিকেলস লিড আফজাল এইছ সারকার, Bikroy-এর প্রপার্টি লিড এমদাদুল হক মবিন, BikroyJOBS লিড মো: সাদিক বিন হালিম, Bikroy-এর ডেপুটি ম্যানেজার, মার্কেটপ্লেস মো: আমজাদ হোসেন, এবং Bikroy-এর ই-কমার্স লিড শাহ্ মোঃ জাকারিয়া। পুরো ওয়েবিনারটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন Bikroy-এর সিনিয়র এক্সিকিউটিভ, অনলাইন মার্কেটিং রিদয়ানুল্লাহ রেজা।
শুরুতেই Bikroy.com-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ঈশিতা শারমিন বলেন, “গত আট বছর ধরে আমাদের ওয়েবসাইট কেনা-বেচার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে অনেক ক্রেতা-বিক্রেতাদের মেলবন্ধনের সাক্ষী। আমাদের সাইটে মাসিক ৩৫ লক্ষেরও বেশি ব্যবহারকারী আছে যার ফলে বিজ্ঞাপন দেওয়ার খুব কম সময়ের মধ্যেই বিক্রেতারা আগ্রহী ক্রেতার সন্ধান পান। চলমান লকডাউনে আমাদের দায়িত্ব আরও অনেকখানি বেড়ে গিয়েছে। এই লকডাউনে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে অনলাইনে কেনাকাটা করার অনুরোধ করেছেন। ঠিক একইভাবে আমরাও বলতে চাই যে Bikroy.com আছে আপনাদের পাশে। ঘরে বসে আমাদের সাইটে অনলাইন শপ খোলার মাধ্যমে বিক্রেতারা মোবাইল, ইলেক্ট্রনিক্স থেকে শুরু করে গাড়ি, বাড়ি এমনকি চাকরির বিজ্ঞাপনও পোস্ট করতে পারবেন। তাই আমি ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানাতে চাই যে কোভিডের কারণে কাজ কমিয়ে না দিয়ে এই রোজার এবং ঈদের মৌসুমে আপনার বিজনেস প্রসারে অনলাইনকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করুন। Bikroy.com চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসার সুবিধার্থে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন রকম টিপস দিয়ে থাকে যার মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হতে পারবেন বলে আমি আশাবাদী।”
এসএমই ব্যবসায় বিনিয়োগ কতটা যুক্তিযুক্ত এই প্রশ্নের উত্তরে Bikroy-এর ডেপুটি ম্যানেজার, মার্কেটপ্লেস মো: আমজাদ হোসেন বলেন, “ট্র্যাডিশনাল মার্কেটে যেটা হয় কোনো উপলক্ষ আসলে দাম বেড়ে যায়, অনলাইনে সেটা হবার সুযোগ নেই। দামের তারতম্য এখানে খুব বেশি হয় না কেননা আমরা বিক্রেতাদের একটি কম্পিটিটিভ প্রাইস রাখার সাজেশন দেই যাতে তাঁদের পণ্য দ্রুত বিক্রি হয়। মহামারিতে আমরা বিশেষত ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোনের জন্য মেম্বারদের বিভিন্ন ডিসকাউন্টে প্রমোশনাল টুলস ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছি কেননা ডিজিটালাইজেশনে এই দুটি জিনিসের ভূমিকা অনেক বেশি। দেখা যায় অফলাইন শপে অনেকেরই দোকানে গ্রাহক সেভাবে হয় না কিন্তু Bikroy-এ পুরো বাংলাদেশের আগ্রহী ক্রেতারা বিক্রেতার অনলাইন শপটি দেখতে পারেন। সেজন্য আমি বলবো এসএমই ব্যবসায়ীদের জন্য ঘরে বসে ডিজিটালি ব্যবসা করার এটি একটি মোক্ষম সময়।”
গাড়ি ও মোটরবাইক ইন্ডাস্ট্রিতে কোভিড-১৯ এর প্রভাব এবং এক্ষেত্রে Bikroy-এর ভূমিকা সম্পর্কে Bikroy-এর ভেহিকেলস লিড আফজাল এইছ সারকার বলেন, “মোটরবাইক ব্র্যান্ডগুলো নতুন মডেল নিয়ে আসায় এবং শীঘ্রই বেশি সিসির মোটরবাইক চালানোর অনুমোদন পাওয়ার কারণে গ্রাহকরা খুব বেশি ঝুঁকছেন মোটরবাইক কেনার ক্ষেত্রে। ভেহিকেলস সেক্টরে আমাদের সাইটে প্রতি মাসে ৩ লক্ষেরও বেশি আগ্রহী ক্রেতা থাকেন। মোটরবাইক সেলার যারা আমাদের সাইটে প্রাইভেট সেলার বা মেম্বার হিসেবে আছেন তাঁরা প্রতিটা অ্যাডের বিপরীতে ৪০+ আগ্রহী ক্রেতা পেয়ে থাকেন। এছাড়া ৩০০ এরও বেশি গাড়ির সেলাররা আমাদের সাথে যুক্ত আছেন। বিক্রেতারা অফলাইন শপ বন্ধ হলেও আমাদের সাইটে অনলাইন শপের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টাই ক্রেতাদের সাথে কানেক্টেড থাকতে পারছেন। আমাদের সাইটটি এসইও অপটিমাইজড যার কারণে গুগল সার্চ-এও ভালো ট্রাফিক বিক্রেতারা পেয়ে থাকেন। পাশাপাশি আমরা আমাদের পার্টনারদের জন্য ‘ভেরিফাইড সেলার’ নামক একটি ব্যাজ দিয়ে থাকি যাতে ক্রেতারাও নিশ্চিন্তে বাইক কেনার কাজটি করতে পারেন। এছাড়াও আমাদের ভেহিকেলস-এর ই-কমার্স সাইট ‘Bikroy CHAKA’ থেকে ক্রেতারা ইএমআই এর মাধ্যমে ব্র্যান্ডেড বাইক কিনতে পারছেন। সুতরাং আমি বলতে চাই ভেহিকেলস সেক্টরটি বেশ জনপ্রিয় এবং প্রচুর আগ্রহী ক্রেতা আছে এবং বিক্রেতারা আমাদের কাছ থেকে বিজনেস সংক্রান্ত যেকোনো সাহায্য পেতে পারেন।”
এসময়ে প্রপার্টি মার্কেটের দামদর কীরকম হতে পারে এবং ফ্ল্যাট কেনার জন্য উপযুক্ত সময় কোনটি এ ধরণের প্রশ্নের জবাবে Bikroy-এর প্রপার্টি লিড এমদাদুল হক মবিন বলেন, “গত বছর শুরুতে ক্যাশ ফ্লো কম থাকার কারণে বিক্রেতারা তুলনামূলক কম প্রফিট মার্জিনে সেল করেছেন। ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি হওয়াতে আর দাম কমতে দেখা যায় নি। গত বছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয়েছে যা ২০১৯ সালের সারা বছরজুড়ে যা সেল হয় তার থেকে বেশি। এ বছর মহামারিতে প্রপার্টির দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং পরবর্তীতে দাম বেড়ে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা হয়তো আছে। তাই অপেক্ষা না করে এখনই প্রপার্টিতে বিনিয়োগের উত্তম সময়। যেকোনো সময় এটি একটি সিকিউর ইনভেস্টমেন্ট। এছাড়াও ডেভেলপাররা গ্রাহক আকর্ষণের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ইএমআই, ভালো লোন সুবিধা ইত্যাদি দিচ্ছেন। Bikroy প্রপার্টি-তে মাসিক ১.৫ লক্ষাধিক আগ্রহী ক্রেতা আছেন। বাড়ি ভাড়া, বিক্রি, জমি বা কমার্শিয়াল প্রপার্টি সেলার অথবা প্রপার্টি ব্রোকাররা অনলাইন মার্কেটিং-এর মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে যেতে পারছেন। আমাদের প্ল্যাটফর্মের মতো এত ডেভেলপার আর কোনো সাইটে নেই। ক্রেতারা লোকেশন, আয়তন, মূল্য ইত্যাদির ভিত্তিতে সহজেই যেকোনো ধরণের প্রপার্টি খুঁজে নিতে পারেন।”
মহামারিতে ডেলিভারি ম্যান নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্দেশ্যে BikroyJOBS লিড মো: সাদিক বিন হালিম বলেন, “বর্তমান সময়ে ইকমার্স বিজনেসে হোম ডেলিভারি একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্ট। সেদিক থেকে আমি বলবো BikroyJOBS এন্ট্রি লেভেল ও স্কিলড জবের জন্য নাম্বার ওয়ান পোর্টাল। আমাদের চাকরির বিজ্ঞাপনগুলোর মধ্যে অন্যতম ডেলিভারি রাইডার জব। মেম্বারশিপের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার ফলে ‘স্টাফিং সল্যুশনস’ সার্ভিসের মাধ্যমে আমরা নিয়োগকারীর চাহিদা অনুযায়ী আবেদনকারীদের শর্টলিস্ট করা, ইন্টারভিউ নেওয়া ইত্যাদি নিজেরাই সম্পন্ন করে সম্ভাব্য যোগ্য প্রাথীদের লিস্ট মেম্বারদের সাথে শেয়ার করি। এছাড়া ফোন, ইমেইল দুটো মাধ্যমেই আবেদন গ্রহণ করা যায়।”
বাংলাদেশে ই-কমার্সের ভবিষ্যৎ এবং Bikroy-এর ই-কমার্স সেবা সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে Bikroy-এর ই-কমার্স লিড শাহ্ মোঃ জাকারিয়া বলেন, “বাংলাদেশে ৭২% রেটে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি গ্রো করছে। এর জনপ্রিয়তা এবং সম্ভাবনার কারণে অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারী এদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছেন। বাংলাদেশে প্রায় ৯ কোটি ৬০ লাখ মোবাইল ডাটা ব্যবহারকারী আছেন। অর্থাৎ ইন্টারনেট যতই সহজলভ্য হচ্ছে ই-কমার্সের ততই নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে। ২০১৬ সালে Bikroy এর ই-কমার্স সেক্টর যাত্রা শুরু করে। আমরা আমাদের মেম্বারদের বিভিন্ন পণ্য ‘ডোরস্টেপ ডেলিভারি’ এর মাধ্যমে গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি। গত বছর Bikroy-এ আমরা ‘নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী’ নামে একটি ক্যাটাগরি নিয়ে এসেছি, এই মহামারিতে বিক্রেতারা তাঁদের জরুরি পণ্যগুলো ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারছেন। গত ১০ বছর আগেও যেই ই-কমার্স ছিলো লাক্সারী, আজ সেটা প্রয়োজনীয়তায় রূপ পেয়েছে।”
সর্বোপরি ব্র্যান্ড এবং কর্পোরেটদের জন্য Bikroy এর ডিজিটাল অ্যাডভার্টাইজমেন্ট সার্ভিস সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে Bikroy-এর কর্পোরেট সেলস লিড সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, “Bikroy.com-এ সব ভিজিটররাই বিজ্ঞাপন দেখতে আসেন। আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটররা প্রতি মাসে প্রায় ১ কোটিরও বেশি বার রিপিটেড ভিজিট করেন। আমাদের প্রতিমাসে প্রায় ২৫ কোটি ইম্প্রেশন জেনারেট হয়। কর্পোরেট কোম্পানিগুলো ক্যাটাগরির ভিত্তিতে টার্গেট করে অ্যাড দিয়ে থাকেন। দেশসেরা টেলিকম কোম্পানি, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার, গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, এফএমসিজি কোম্পানি বিভিন্ন ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে গ্রাহকদের টার্গেট করে থাকেন। এক্ষেত্রে সঠিক সময়ে একটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির পণ্য খুঁজতে থাকা কাস্টমারকে সহজেই টার্গেট করা যায়। যেমন মোবাইল ফোন ক্যাটাগরিতে টেলিকম কোম্পানির বিজ্ঞাপন। অন্যান্য মিডিয়ার সাথে Bikroy-এর পার্থক্য হচ্ছে আমরা ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস, ডিরেক্ট টার্গেটিং ও অ্যাকশন সেল এই তিনভাবে ক্যাম্পেইন করে থাকি। ব্র্যান্ডগুলো আমাদের সাইটে কী-ওয়ার্ড টার্গেটিং-ও করতে পারে। অর্থাৎ যারা মোবাইল ফোনের কোনো ব্র্যান্ড লিখে সার্চ করে তাঁরা সেই কোম্পানির অ্যাড দেখতে পারবেন।”