কোন ব্ল্যাকবেরী মোবাইল ফোনটি বেছে নিবেন?
অনেকগুলো কারনে মোবাইল ফোন কেনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। প্রথমত, কিছু মোবাইল আছে যেগুলো অনেক দামী, তাই অনেকের জন্যে এটি একটি বড় বিনিয়োগ। এটার সাথে ডাটা প্ল্যান এবং বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস সংশ্লিষ্ট আরো কিছু খরচ আছে । দ্বিতীয়ত আপনি আপনার ফোন প্রতিদিনই ব্যাবহার করবেন। এ কারনে আপনার ফোনটি হওয়া উচিত উন্নত মানের এবং যাতে আপনি এর উপর আস্থা রাখেতে পারেন। তাই, কোনো মোবাইল ফোন কেনার আগে আপনার উচিত একটু খোঁজ- খবর নেওয়া যাতে করে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে টাকাটি আপনি সঠিক খাতে বিনিয়োগ করছেন।
অনেক বছর ধরেই ব্ল্যাকবেরী বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্মার্টফোন তৈরি করে আসছে। এই লেখাটিতে আপনি কোনো ব্ল্যাকবেরী ফোন কিনতে গেলে কি ধরনের ফিচার পাবেন তার বিবরন দ্ওেয়া হল। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ব্ল্যাকবেরী ফোনের বিবরনও আপনি পাবেন এখান থেকে। এটি আপনার জন্য কোন ফোনটি দরকার সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।
ব্ল্যাকবেরী ফোনের রকমফের
পার্লঃ
ব্ল্যাকবেরী পার্ল মূলত ব্ল্যাকবেরী আর সাধারন ফোনের মিশেলে তৈরি। যদিও এটি দেখতে একটি স্ট্যান্ডার্ড ফোনের মতোই, এটিতে ব্ল্যাকবেরীর সবধরনের ফিচারই আছে। পার্ল ফেনটিতে শিওর টাইপ কীপ্যাড রয়েছে। এটি কোয়ার্টি কীবোর্ড এবং সাধারন ফোনের কীবোর্ডের সংমিশ্রন।
১। ৮১০০ সিরিজ
এটি একটি ষ্টাইলিশ এবং সাধ্যের ভেতরের একটি ফোন। যদিও এটিতে ওয়াই-ফাই সিস্টেম নাই।
২। ৯১০০/৯১০৫
এই মডেলের স্ক্রীনে চমৎকার রিসলুশন আছে। এটিতে আরো জিটিএস সিস্টেম, একটি ৩.২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা এবং একটি অপটিক্যাল ট্রেকপ্যাড আছে।
কার্ভঃ
পার্লএর চেয়ে কার্ভ এর স্ক্রীনটি বড়। এটিতে আরো একটি কোয়ার্টি কী-প্যাড আছে। এগুলো হল সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্ল্যাকবেরী ফোন।
১। ৮৫২০/৮৫৩০
যারা ফোন কেনার জন্য বাজেট সীমাবদ্ধতার ভেতর আছেন তাদের জন্য এই ফোনটি ভালো। এটিতে কোন ক্যামেরা ফ্ল্যাশ কিংবা জিপিএস নাই, যার কারনে অন্য ব্ল্যাকবেরী ফোনের চেয়ে এটি কম দামী।
২। ৮৯০০
যাদের প্রতিদিন অনেক ম্যাসেজ এবং ইমেইল করার দরকার হয় তাদের জন্য এই ফোনটি অনেক ভালো। এটিতে জিপিএস, ওয়াই-ফাই, একটি ৩.২ মেগা পিক্সেল ক্যামেরা এবং একটি কোয়ার্টি কী প্যাড রয়েছে।
বোল্ডঃ
অনেক শক্তিশালী প্রসেসর থাকার কারনে বোল্ড ব্ল্যাকবেরী ফোনের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত মানের ফোন।
১। ৯০০০
এটিতে একটি উজ্জল ডিসপ্লে, ওয়াই-ফাই এবং জিপিএস সিস্টেম রয়েছে।
২। ৯৭০০
ব্ল্যাকবেরী ফোনের সবচেয়ে ভালো ফিচারগুলোই এই ফোনে রয়েছে। এটিতে ওয়াই-ফাই, একটি অপটিক্যাল ট্র্যাকপ্যাড এবং থ্রিজি সংযোগ রয়েছে।
স্ট্রমঃ
ব্ল্যাকবেরী স্ট্রম এ আছে চমৎকার সব ফিচার এবং এটি টাচত্র‹ীনে কাজ করে। এই স্ক্রীনে চাপ দিয়ে কাজ করতে হয়। এটি টাচ সেনসিটিভ না।
১। ৯৫০০/৯৫৩০
এটিতে জিপিএস কাজ করে কিন্তু ওয়াই-ফাই কাজ করে না।
২। ৯৫২০/৯৫৫০
এই মডেলে ওয়াই-ফাই কাজ করে, কিন্তু জিপিএস নেই। এটি অন্যান্য ব্ল্যাকবেরী ফোনের চেয়ে ভারীও।
এখানে ব্ল্যাকবেরী ফোন থাকার আরো কিছু সুবিধা বর্ননা করা হল:
১। ইমেইল করা
আপনি যদি আপনার ব্ল্যাকবেরী ফোনের সাথে একটি ইমেইল একাউন্ট করতে চান, তাহলে আপনার মেইলগুলো অটোমেটিক্যালি চলে আসবে। এর মানে হচ্ছে আপনাকে ইমেইল চেক করার জন্য ইনবক্সে যেতে হবে না।
ব্ল্যাকবেরী মেসেঞ্জারঃ
এটি ব্ল্যাকবেরী ফেনের মূল ফিচারগুলোর একটি। ব্ল্যাকবেরী মেসেঞ্জার (বিবিএম) হল একটি দ্রুত ম্যাসেঞ্জিং সার্ভিস। এর মাধ্যমে আপনি অন্য যারা ব্ল্যকবেরী ডিভাইস ব্যাবহার করে তাদের সাথে ম্যাসেজ আদান-প্রদান করতে পারবেন। টেক্সট ম্যাসেজের সাথে আপনি ভয়েস নোটস, ইমোটিকন এবং ছবিও পাঠাতে পারবেন। বিবিএম এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ট্যাক্সট বেসড কনফারেনস করতে পারবে। আপনার যদি অন্য ব্যাবহারকারীর এটেনশন পাবার প্রয়োজন হয়, তবে আপনি তাকে একটি ”পিং” পাঠাতে পারেন যা তার ফোনে ভাইব্রেট করে তাকে জানিয়ে দিবে।
পিনঃ
সব ব্ল্যাকবেরী ফোনে একটি পিন থাকে। ব্ল্যাকবেরী ব্যাবহারকারীরা তাদের পিনকে সরাসরি ব্যবহার করে একে অন্যকে ম্যাসেজ পাঠাতে পারবে। এই পিন আন্যান্য বিবিএম ফিচার ব্যবহারকারীদের ম্যাসেজ পাঠানোর ক্ষেত্রেও ব্যাবহার করা যায়।
ওএস ম্যানিপুলেশনঃ
অপারেটিং সিস্টেমের আপডেট প্রতিনিয়তই বাজারে আসে। এছাড়্ াএটির হাইব্রিডও তৈরি করা হয়েছে। এই হাইব্রিড ফোনগুলোতে অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম এবং ফোন থেকে ওএস ফাইল অর্ন্তভুক্ত করা আছে। এই হাইব্রিড ফোনগুলোতে সাধারনত উন্নতমানের ফিচার থাকে।
ব্রাউজারঃ
ব্ল্যাকবেরী ব্রাউজার এর ব্যাবহারকারীদের অনেক ধরনের অপশন উন্মূক্ত রেখেছে। ব্ল্যাকবেরীতে খুব দ্রুত এবং সহযেই ইন্টারনেট ব্রাউস করা যায়। আপনি যদি এই অপশন বেছে নেন, আন্যান্য সামঞ্জস্যপূর্ণ ওয়েবসাইট ব্যবহারের জন্য তাদের বিভিন্ন র্ভাসন দিয়ে থাকে। আপনি যদি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার বেছে নেন, তাহলে আপনি রেগুলার কম্পিউটারে যেমন পরিপূর্ন ওয়েবসাইট দেখতে পান ঠিক সেরকমই দেখতে পাবেন। আপনি যদি অন্য কোন ব্রাউজার ব্যবহার করতে চান সেটিও পারবেন।
ব্যাক-আপ সার্ভিসঃ
ব্ল্যাকবেরি ডিভাইসের ব্যাক-আপ সিস্টেম খুবই সহজ। “ডেস্কটপ ম্যানেজার” ফিচার আপনাকে সম্পূর্ন সিস্টেমের ব্যাক-আপ দিবে। আপনি অন্যান্য আ্যাপসও বেছে নিতে পারেন আপনার ছবি, সংক্ষিপ্ত ম্যাসেজ, ইমেইল এবং আন্যান্য জিনিসের ব্যাক-আপ রাখার জন্য।
ওটিএ ডাউনলোডঃ
ওভার-দ্য-এয়ার (ওটিএ) ডাউনলোডস ব্ল্যাকবেরী ব্যবহারকারীদের অন্য আ্যাপ ডাউনলোড করা সম্ভব করেছে, এমনকি যদি তারা ইউএসবি কানেকশন নাও পায়। অন্য কোন অ্যাপস, গেমস, থিম এবং অন্যান্য জিনিস ইনসটল করার সময় আপনি তার ছাড়াই ডাউনলোড করতে পারবেন। আপনাকে যা করতে হবে তা হল ওটিএ লিংক এ ব্রাউজার সেট করতে হবে এবং তার ছাড়াই আপনি সেকেন্ডের মধ্যেই ডাউনলোড করতে পারবেন।
ফোন কলঃ
ব্ল্যাকবেরী ডিভাইসে কল করার সিস্টেম খুবই চমৎকার, যা আপনি কি ধরনের রিসেপশন পাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে। কথা বলার সময়ও আপনি অ্যাপস ব্যবহার করতে পারবেন। এর মেমোপ্যাড দিয়ে আপনি কথা বলার সময় নোট টাইপ করতে পারবেন। কলের সময় আপনি কন্টাক্টস এবং ক্যালেন্ডারেও যেতে পারবেন। ব্ল্যাকবেরী ডিভাইসের স্পিড ডায়াল ফাংশনে আপনি একই সাথে ২০ টিরও বেশি নাম্বার রাখতে পারবেন। এটিতে আরেকটি ফিচার আছে যা দিয়ে আপনি কোনো কলার কে হোল্ড অনে রাখতে পারবেন।
টিথারিংঃ
ব্ল্যাকবেরী ইউজাররা তাদের ডিভাইসকে কম্পিউপটারে টিথার করে রাখতে পারবেন। আপনি যখন আপনার ব্ল্যাকবেরি এবং কম্পিউটারকে একত্রে টিথার করবেন, তখন আপনার ব্ল্যাকবেরী ডিভাইসটি একটি মডেম হিসাবেও কাজ করতে পারবে। যারা নিয়মিত ভ্রমন করেন এবং অত্যন্ত ব্যস্ত জীবন যাপন করেন তাদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার, এমনকি যারা তাদের ল্যাপটপে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে চান তাদের জন্যও।
থিমসঃ
ব্ল্যাকবেরী ডিভাইস থেকে অনেক থিম বেছে নেওয়া যায়। এসব থিম আপনাকে বিভিন্ন ধরনের হোম পেইজ ফিচার সরবরাহ করবে, সেই সাথে আপনার ফোনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কালার এবং ফন্ট সরবরাহ করবে। এগুলোর মধ্যে আপনি কিছু পাবেন বিনা মূলে এবং কতগুলোর জন্য আপনাকে টাকা দিতে হবে।