সস্তা মূল্যে সেকেন্ড হ্যান্ড কার ক্রয় করুন
সস্তায় সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনা :
বাংলাদেশে ব্যবহৃত গাড়ি কিনতে গেলে একজন ক্রেতা সাশ্রয়ী দামেও উন্নত মানের গাড়ি পেতে পারেন। যদিও সবচেয়ে ভালো গাড়িটি খুঁজে পাওয়া সবসময় সহজ হয় না। না, এসব ক্ষেত্রেসব সময়ই অনেক সমস্যা থাকে এবং কিছু বিক্রেতা আছে যারা অপ্রস্তুত ক্রেতাদের কাছ থেকে সুবিধা আদায়ের চেষ্টায় থাকে। সমগ্র পরিস্থিতি পরীক্ষা করতে না পারলে এটা এড়িয়ে চরা খুবই কঠিন। এসব বিষয় বিবেচনা করেই সস্তায় সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার জন্য ১০টি টিপস দেওয়া হল।
বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করুন :
গাড়ি কিনতে হলে অবশ্যই ক্রেতাকে অনেকগুলো ক্লাসিফাইড সাইটে খোজঁ করতে হবে। এছাড়া একজন বিচক্ষণ ক্রেতার উচিত রাস্তার পাশের গাড়ির উপর নজর রাখা। প্রায়ই সময়ে গাড়ির মালিক তার গাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন গাড়ির জানালায় দিয়ে থাকে। সবশেষে, গাড়ি কেনার জন্য মনস্থির করলে সেই ক্রেতার উচিত তার পরিবার এবং বন্ধু- বান্ধবদের সাথে আলোচনা করা। গাড়ি কেনার অনেক উৎস থাকায়, একজন গ্রাহক সবচেয়ে সাশ্রয়ী দামে গাড়ি কিনতে পারে। মনে রাখা উচিত, অনেক লোকই আছেন যারা গাড়ি বিক্রি করেন, তাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হল যতটা সম্ভব চারিদিকে খোঁজ করে তারপর কেনা।
কখনই গাড়ির মডেল কিংবা এর গঠন দেখে পছন্দ করবেন না: কোন নির্দিষ্ট গাড়ির প্রেমে পড়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। উদাহরণস্বরূপ, কিছু লোক আছে যারা টয়োটা করলা অথবা হোন্ডা সিভিক কিনতে আগ্রহী। এর পরিবর্তে তাদের উচিৎ এমন একটি গাড়ি খুঁজে বের করা যেটা চালাতে সে স্বাচ্ছন্দবোধ করবে। আর এটি করতে গেলে একজন ক্রেতাকে তার চাহিদা এবং প্রয়োজন সম্পর্কে ভাবতে হবে। তার মানে, একটি নির্ভরযোগ্য এবং নিরাপদ গাড়ি কেনার আগে একজন সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে চার থেকে পাঁচটি গাড়ির তালিকা থাকতে হবে যেগুলো চালাতে সে স্বাচ্ছন্দবোধ করবে। এটি তার বাছাইয়ের তালিকাকে অনেক সমৃদ্ধ করবে। এর ফলে যখন দরকাষাকষি আর লেনদেনের সময় আসবে, তখন গ্রাহকের কাছে অনেকগুলো অপশন থাকায় গাড়ি কিনতে উপযুক্ত দাম বলতে পারবে।
গাড়ির যাবতীয় বিষয়ে অভিজ্ঞ বন্ধুকে সাথে নিন:
বাংলাদেশে বিক্রির জন্য প্রচুর সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি আছে গুলোর নূন্যতম মৌলিক মানসম্পন্ন নয়। দুঃখের বিষয়, যখন একজন ক্রেতা সমস্যা জর্জরিত কোন গাড়ি কেনে, পরবর্তীতে গাড়ি চালাতে তাকে অনেক বেশি জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। এসব সাধারন সমস্যা এড়াতে, ক্রেতাকে তার গাড়িটি যাচাই করাতে একজন অভিজ্ঞ ম্যাকানিককে দেখানো উচিৎ। যদিও এতে কিছু টাকা খরচ হবে, তারপরও একজন যোগ্য ব্যক্তি ইঞ্জিন, ট্রানসমিশন এবং গাড়ির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ ভালোভাবে চেক করে দিতে পারবেন।
রক্ষনাবেক্ষনের খরচের কাগজপত্র চেয়ে নিন:
বাংলাদেশের মানুষ যে তাদের গাড়ি সর্বোচ্চ গতিতে চালিয়ে থাকে এটা সবাই জানে। শুধু তাই নয়, এমন অনেক গাড়ির মালিক আছেন যারা রুটিন মেইনটেইনেন্স করতে ভুলে যান কিংবা এটি করতে প্রযোজন মনে করেন না। এক্ষেত্রে গাড়িটি বেশিদিন টিকে না কিংবা সন্তোষজনকভাবে চালানো যায় না। কিছু টাকা বাঁচাতে এবং যন্ত্রনা থেকে দুরে থাকতে সম্ভাব্য ক্রেতার উচিৎ বিক্রেতার কাছ থেকে মেনটেইনেন্স রের্কড চেয়ে ন্ওেয়া। প্রায়ই গাড়ির মালিক বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পরিবর্তন, তেল ইত্যাদির রশিদ এবং অন্যান্য তথ্য সরবরাহ করতে সমস্যা করে না। এসব কিছু থাকলে একজন ক্রেতার পক্ষে পয়সা খরচ করে গাড়ি কিনতে কোন সমস্যা হয় না।
লং টেষ্ট ড্রাইভ:
এটা যে কোন ক্রেতার জন্যই স্বাভাবিক ব্যাপার যে একটি গাড়ি দেখে পছন্দ করা আর সাথে সাথে দাম বলে ফেলা। কিন্তু এটা কখনই বুদ্ধিমানের কাজ নয়, বরং ভবিষ্যতে গাড়ি নিয়ে কোন সমস্যায় পড়তে না চাইলে অবশ্যই কেনার আগে সেটি লং ড্রাইভ টেষ্ট করা উচিৎ। গাড়িটি শহরের সড়ক, মহাসড়ক এবং অন্যান্য এলাকায় চালালে ক্রেতা বুঝতে পারবে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে গাড়িটি কিভাবে পরিচালনা করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল তাদের এমন গাড়ি প্রয়োজন যার উপর তারা যেকোনো পরিস্তিতিতে নির্ভর করতে পারবে। মনে রাখতে হবে যে টেষ্ট ড্রাইভে শুধুমাত্র রাস্তায় গেলে হবে না, ক্রেতা হিসেবে গাড়ির বিষয়ে একটি ধারনাও নিতে হবে।
অন্যান্য খরচ সম্পর্ক্ওে ভাবুন:
গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করতে গিয়ে অনেক ক্রেতাই খুব দ্রুত চেক লিখে দেয় কিংবা ক্যাশ হস্তান্তর করে। দুঃখের বিষয় , সার্মথ্যের মধ্যে না থাকায় প্রায়ই ক্রেতাকে গাড়ির ইন্স্যুরেন্স কিংবা অন্যান্য খরচ মিটাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে আফসোস করতে হয়। ব্যবহৃত গাড়ির সাথে তাই গাড়ির যন্ত্রাংশের খরচ, ইন্স্যুরেন্স, এবং অন্যান্য খরচও তাৎক্ষনিকভাবে মাথায় আনা উচিৎ। এ কারনে একজন ক্রেতার উচিত তার সম্পূর্ন জেটের ব্যাপারে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যে গাড়িটি কিনতে তার অনেক বেশি কষ্ট করতে হয়ে যাবে কি না।
ড্রাইভারদের অভ্যাসের ব্যাপারে জানতে চাওয়া:
পুরানো মডেলের গাড়ি কিনতে গেলে ক্রেতা এর আগের ড্রাইভাররা কিভাবে এটি পরিচালনা করেছে তা জানতে চায়। পরবর্তীতে এটি বোঝার জন্য ক্রেতার উচিৎ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা এবং এর মালিকের কাছে কিভাবে গাড়িটি চালিয়েছে সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া। এখন কিছু লোক স্বীকার করবে যে সে এটি অনেক দ্রুত চালিয়েছে। ক্রেতা যখন এ সম্পর্কে জানতে পারবে তখন তাকে অনেক সর্তকতার সাথে আগাতে হবে এবং বিক্রেতাকে কম দাম বলতে হবে। অন্যদিকে, যখন গাড়ির মালিক গাড়িটি সঠিক নিয়মে এবং নিরাপত্তার সাথে চালানোর ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিবে, ক্রেতার ভেতরে তখন কিছু ভীতি কাজ করবে যে তিনি নতুন গাড়িতে উঠছেন কি না!
মরিচা খেয়াল করা:
গাড়িতে অনেক মরিচা থাকাটা বাংলাদেশে খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। যদিও এটা গাড়ির দেহের কিংবা পেইন্ট এর ক্ষেত্রে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া নয় বরং এটি মূলত দেখবার বিষয়। একইভাবে পুরানো মডেলের গাড়ি কিনতে গেলে, নিখুঁতভাবে পেইন্ট করা অনেক গাড়ি পাওয়া যায়, যা এড়িয়ে চলা কঠিন। যাই হোক, বুদ্ধিমানের কাজ হবে নিশিচত হওয়া যে মরিচা নিয়ন্ত্রনের বাইরে নয় যা চলতে পথে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এজন্যই বলা হয়ে থাকে, যদি গাড়িটি মোটামুটি পরিস্কার এবং সুন্দর হয়, তবে ক্রেতাকে মরিচা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। বরং তার পরিবর্তে ক্রেতা তার প্রস্তাবিত দামকে একটু কমাতে পারে।
গাড়ি কেনার আগে এর অনুচিন্তাগুলো খুঁজে বের করা:
প্রায়ই, উৎপাদনের একটি সাধারন সমস্যা যা তারা অনুচিন্তার মাধ্যমে সমাধান করে। যদিও এটা কোন বড় বিষয় নয়, কিন্তু এটি যিনি কিনবেন তার জন্য অনেক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ডিলালের কাছে সমস্যা নির্ধারনের জন্য গাড়ি নিয়ে য্ওায়াটা সব সময়ই মজার বা সহজ না। কিন্তু একজন আন্তরিক এবং পরিশ্রমী গাড়ির মালিকের উচিৎ সেটি বিক্রির আগে সমস্যার ব্যাপারে যতœবান হওয়া। যদি এটি না হয়ে থাকে তবে ক্রেতার উচিৎ সমম্যাটি মাথায় রেখে সামঞ্জস্যপূর্ণ দাম বলা, যেহেতু এটি একটি সময় সাপেক্ষ এবং হতাশাজনক প্রক্রিয়া ডিলারশিপের কাছে সমস্যা নির্ধারনের জন্য গাড়ি নিয়ে যাওয়া।
কখনই প্রথম দামটি গ্রহন করবেন না:
অবশ্যই বেশিরভাগ বিক্রেতাই তাদের গাড়ির জন্য সর্বোচ্চ দামটিই চাইবে। এটি আশা করবেই। যাই হোক, কম দাম বলাটা ক্রেতার জন্য লাভজনক। ক্যাশ এর মাধ্যমে লেন-দেন করাটা সহজ। কোন সন্দেহ ছাড়াই, এই নির্দেশনার অন্যান্য টিপস যেমন, একটি নির্দিষ্ট গাড়ির প্রেমে না পড়া এবং মাথায় প্রচুর গাড়ি থাকা ইত্যাদি অনুসরন করতে পাওে, যাতে কেউ খুব সহযেই কম দাম বলতে পারবে এবং এটি যদি শেষ পর্যন্ত কাজ না করে তবে খারাপ লাগবে না।
এই ১০ টি সহজ টিপস মেনে চললে বাংলাদেশের গ্রাহক তার পরবর্তী পুরারো গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে ভালোভাবে ডিল করতে পারবে। এই টিপসগুলো অনুসরন করা খুবই জরুরী কেননা যেকোনো ভুল সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে ক্রেতার অনেক বড় লোকশানের কারন হতে পারে। এমনকি, একটি ভুলের জন্য পুরানো গাড়ির ক্রেতাকে সেই সমস্যার সাড়াতে এবং গাড়িটি চলার উপযোগী করতে অনেক টাকা খরচ করতে হতে পারে। তাই মনে রাখবেন, অনেক প্রশ্ন করুন, প্রথম দামেই গাড়ি কিনে ফেলবেন না এবং নিশ্চিত হোন যে গাড়িটি ভালোমতো চলে এবং কোন গুরুতর কোন সমস্যা নেই।