মোটরবাইক কেনায় ক্রেতার জন্য টিপস ও নিরাপত্তা পরামর্শ
বাংলাদেশে- বিশেষ করে তরুণদের কাছে- সবচেয়ে সুবিধাজনক ও প্রত্যাশিত যানবাহন মোটরবাইক। মোটরবাইক ছোট ও সহজে স্টোর করা যায়, তাই যাদের বাড়িতে পার্কিংয়ের জায়গার স্বল্পতা রয়েছে, তাদের জন্য এই বাহন বেশ সুবিধাজনক। ট্রাফিক জ্যামের ক্ষেত্রে মোটরবাইক যাত্রীকে সহজে ও দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। এটি বাংলাদেশের যুবকদের কাছে স্ট্যাটাস সিম্বল। কারো কাছে চকচকে মোটরবাইক না থাকলে, সে অন্য তরুণদের কাছে জনপ্রিয়তা পায় না। এ সব কারণে এখানে মোটরবাইকের চাহিদা প্রচুর।
একটি মোটরবাইক কেনার সময় কী কী বিষয় জানা দরকার?, সেগুলো এখানে তুলে ধরা হয়েছে। মোটর বাইক বাছাই করার বিষয়টি খুবই সহজ একটা কাজ মনে হলেও বাস্তবে কিন্তু তা নয়। এজন্য মোটরবাইক কেনার পর ক্রেতাকে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।
দূর্ভাগ্যজনক হলো- অনেক বিবেক বর্জিত বিক্রেতা, মোটর বাইকটিতে সমস্যা আছে জেনেও সেটি বিক্রি করে। তারা মোটরবাইকটি ভালোভাবে কাজ করে না জেনেও, নানা ছল-চাতুরি করে ক্রেতাকে সন্দেহমুক্ত করে, বোকা বানায়! মোটরবাইক কেনার আগে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জেনে নিলে এসব সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যাবে। মোটরবাইক ক্লাসিফাইড, সস্তায় মোটরবাইক বিক্রেতাদের খুঁজে পাওয়ার চমৎকার একটি জায়গা।
মোটরবাইক কেনার আগে যে বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখলে পরবর্তীতে সম্ভাব্য সমস্যাসমূহ থেকে বেচে থাকা যাবে এখানে তা তুলে ধরা হবে। এর সবগুলো ধাপ, সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। তাই, যদি কোন ধাপ কারো ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না হয়, তাহলে সেটি বাদ দিয়ে পরবর্তী ধাপে চলে যেতে হবে। যাদের মোটরবাইক সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণাও নেই, তারা যাতে বুঝতে পারেন- তাই এই টিপসগুলো দেয়া হয়েছে।
মোটরবাইক সম্পর্কে যাদের অভিজ্ঞতা আছে, তারা নিচে দেয়া তথ্যগুলোর অনেক তথ্যই জেনে থাকবেন। তাদের মনে রাখতে হবে, অনেক অনভিজ্ঞ ব্যক্তি রয়েছেন যাদের মোটরবাইক সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণাও নেই, তারা যাতে বিষয়টি বুঝতে পারেন ও কেনার সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, সেজন্য এই বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে।
১। মোটরবাইকে বিভিন্ন ধরণের সিলিন্ডার ও আকারের ইঞ্জিন রয়েছে। এটি নির্ভর করে একটি ইঞ্জিনে কত সিসি (কিউবিক কেপাসিটি) রয়েছে তার উপর। কম সংখ্যক সিসি’র বাইক থেকে অধিক সংখ্যক সিসি’র বাইক বেশি শক্তিশালী বিষয়টি এমন নয়। মোটরবাইকের শক্তি নির্ভর করে সাধারণত মোটরবাইকের নির্দিষ্ট নকশা ডিজাইন) ও কতটি সিলিন্ডার আছে তার উপর। বাইকের অধিক সিলিন্ডার সেটির ড্রাইভিংকে গতিময় করে। অধিক সিলিন্ডার মানে হচ্ছে অধিক শক্তি ও গতি। কম সংখ্যক সিলিন্ডারযুক্ত মোটরবাইক কেনার উল্লেখযোগ্য সুবিধা রয়েছে। এধরণের বাইক হাল্কা, চালানো সহজ। খরচও কম।
২। মোটরবাইক কেনার আগে, কী উদ্দেশ্যে সেটি ক্রয় করা হবে, তা ভালোভাবে বিবেচনা করতে হবে। সেটি ভ্রমণ, কাজ, না শুধু এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হবে? সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের বাইক থেকে বাছাই করা যাবে। একটি মোটরবাইক একটি সুনির্দিষ্ট কাজের জন্য তৈরি করা হয়, কিন্তু সেগুলোর অধিকাংশই একাধিক কাজে ব্যবহার করা যায়। প্রধান কয়েক ধরণের মোটরবাইক হচ্ছে-মোপড, স্পোর্টস, ট্যুরিং, স্ট্যান্ডার্ড, স্কুটার, অফ- রোড় ও ক্রুজার। কেনার আগে কোন কাজে সেটি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে, সে কাজের জন্য কোনটি উপযুক্ত তা ঠিক করতে বিভিন্ন ধরণের মোটরবাইক সম্পর্কে জানতে হবে।
৩। মেটালের উপর প্লাস্টিকের কাভার দেয়া অনেক সুন্দর মোটরবাইক আছে। এই প্লাস্টিকের কাভার না থাকায় অনেক মোটরবাইক সুন্দর দেখায় না। মোটরবাইক চালনায় অভিজ্ঞ না হলে, সেক্ষেত্রে অসুন্দর বাইক পছন্দ করাই ভালো। কেননা, চালনা শিখতে গেলে অনেক সময় বাইকটি পড়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্লাস্টিকের সুন্দর বাইক ঘষা লেগে অসুন্দর দেখাতে পারে।
৪। ডিলারশিপ হিসেবে মোটরবাইক বিক্রি করতে চাইলে, মনে রাখতে হবে, অনেক ডিলার শুধু নগদ টাকাই গ্রহণ করেন। অধিকাংশ গাড়ি ক্রেতা যেমন কিস্তি ভিত্তিক পেমেন্ট চায়, তারা সেরকম কোন পেমেন্ট পরিকল্পনায় যেতে চায় না। তাই প্রয়োজনীয় টাকা নিশ্চিত করেই কিনতে যেতে হবে।
৫। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, মোটরবাইক কিনতে প্রথমেই আপনাকে সেটি চালিয়ে দেখতে হবে। কীভাবে রাস্তায় বাইক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ৩০ মিনিট চালনা ক্রেতাকে সেই সম্পর্কে অনেক ভালো ধারণা প্রদান করবে। আপনার পছন্দের মোটরবাইকটি কেনার পরেই আপনাকে কিনতে হবে রাইডারদের নিরাপত্তার জন্য সেফটি গিয়ার। কারন এই সেফটি গিয়ার গুলোই আপনাকে যেকোনো দুর্ঘটনাতে সুরক্ষা দিবে।