জেনে নিন অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস
আপনি কি অ্যাপার্টমেন্ট কেনার কথা ভাবছেন? আপনার কি এ বিষয়ে কোন টিপস প্রয়োজন? তবে আপনি সঠিক জায়গাতেই এসেছেন। অ্যাপার্টমেন্ট কেনা বেশ ঝামেলার একটি কাজ বিশেষ করে যখন আপনাকে পরিবারের অন্যান্যদের সুবিধা-অসুবিধার কথাও চিন্তা করতে হয়। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিয়ে আলোচনা করা হল যেগুলো নতুন কিংবা অভিজ্ঞ সব ধরণের ক্রেতাদেরই জেনে রাখা প্রয়োজন।
অবস্থান
রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল অবস্থান। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই ক্রেতারা যেকোনো প্রপার্টি ক্রয় করায় আগ্রহী হন। অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় করার সময় সকল ক্রেতাকে এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। ফ্ল্যাট খোঁজার আগে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি কোন এলাকায় থাকতে চান এবং জানতে হবে সে এলাকায় বসবাসের খরচ কেমন।আরও জেনে নেওয়া দরকার যেসব এলাকা ফ্ল্যাট কেনার জন্য জনপ্রিয়। আপনি যদি একটি নিরিবিলি এলাকায় থাকার কথা ভাবেন তবে সেটি স্কুল কিংবা অফিস থেকে স্বাভাবিকভাবেই দূরে হবে। অনেকেই আবার বাচ্চাদের স্কুলে দেবার কথা ভেবে এমন জায়গায় থাকতে চাইবেন যেখান থেকে খুব সহজেই স্কুলের নাগাল পাওয়া যায়। সব কিছুই নির্ভর করে আপনার প্রয়োজন এবং আপনি কি কি বিষয় ছাড় দেবেন এবং কি কি বিষয় ছাড় দেবেন না তার উপর।
বিল্ডিং-এর বয়স
অ্যাপার্টমেন্ট কেনার সময় অনেকেই যে বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামান না তা হল বিল্ডিং-এর বয়স। আপনি হয়ত পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদির সব রকম সুবিধা সহ দারুণ একটি অ্যাপার্টমেন্ট পেয়ে যাবেন কিন্তু বিল্ডিং-এর বয়স দেখা যাবে ৩০ বছর এবং কোন ভাল লিফট নেই বা অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়গুলো তখন আপনাকে ভেবে দেখতে হবে। কবে শেষবারের মত বিল্ডিংটি রেনোভেট করা হয়েছে এ বিষয় সম্পর্কে বিক্রেতার কাছ থেকে আপনি বিস্তারিত জানতে চাইবেন। পুরনো বিল্ডিংগুলোতে নানা রকমের সমস্যা থাকে যেগুলো পরবর্তী সময়ে বড় সমস্যা হয়ে দাড়ায় সুতরাং আপনাকে অপ্রত্যাশিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
পার্কিং
আপনি হয়ত সুন্দর একটি অ্যাপার্টমেন্ট দেখে ভাববেন যে ফ্ল্যাটটির সাথে অবশ্যই পার্কিং-এর সুব্যবস্থাও আছে। কিন্তু বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা সত্য নয়। সুতরাং পার্কিং-এর সুবিধা আছে কিনা সে বিষয়টি বিক্রেতার কাছ থেকে আপনাকে ভাল ভাবে জেনে নিতে হবে। আপনার যদি একটির বেশি গাড়ি থেকে থাকে বা আপনি যদি একটি নতুন গাড়ি কেনার কথা ভাবেন তবে পার্কিং সুবিধাটি না থাকলে আপনি বেশ ঝামেলায় পড়বেন। রেডি-ফ্ল্যাটের সাথে যদি কোন পার্কিং স্পেস থাকে তবে জেনে নিন যে স্পেসটি কতটা ব্যবহারযোগ্য। যদি আপনি নিজে আপনার গাড়ি চালিয়ে থাকেন তবে একটি গাড়িভর্তি ঘিঞ্জি পার্কিং স্পেসে প্রতিদিন গাড়ি পার্ক করা একটা অতিরিক্ত কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
নিরাপত্তা
বাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন তা অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এর মধ্যে একটি হল ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি মনিটরিং, পুরনো অ্যাপার্টমেন্টগুলোতেও এই বিষয়টিকে বর্তমানে বেশ গুরুত্বের সাথে নেয়া হচ্ছে এবং সিসিটিভি সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে। অ্যাপার্টমেন্টের নিরাপত্তা কতটুকু তা পরিমাপ করার আরেকটি লক্ষণ হল নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পেশাদার সিকিউরিটি ফোর্স নিয়োগ দেয়া। আজকাল শুধু বড় বড় হাউজিং কমপ্লেক্সেই নয়, ছোট ছোট বিল্ডিগুলোতেও পেশাদার সিকিউরিটি ফোর্স নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বাড়ির নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চিত হবার জন্য জানালার গ্রিল কতটা শক্তিশালী তা যাচাই করে দেখুন। ফ্ল্যাটটিতে কিছু ভেঙে ভিতরে ঢোকা সম্ভব কিনা বা সহজেই ঢোকা যায় এমন কোন পথ আছে কিনা তা যাচাই করে দেখে নিন।
ভবিষ্যতের কথা ভাবুন
অনেকেই ভবিষ্যতে জায়গার দাম অনেক বৃদ্ধি পাবে ভেবে এমন কিছু লোকেশনে অ্যাপার্টমেন্ট কেনার কথা চিন্তা করেন যেখানে অন্যান্য সুবিধাগুলো তাদের ছাড় দিতে হয়। আপনিও যদি এমনটি ভেবে ফ্ল্যাট কিনতে চান তবে আগে পারিপার্শ্বিক অবস্থাটা ভালভাবে যাচাই করে নিন। আপনার মাস্টার বেডরুম থেকে হয়ত খুব সুন্দর একটি ভিউ পাচ্ছেন, ভবিষ্যতে এই সুন্দর ভিউটি অন্য কোন বহুতল বিল্ডিং-এর আড়ালে ঢাকা পরার সম্ভাবনা থাকতে পারে। একইভাবে, যারা একটি নিরিবিলি এলাকায় থাকতে চান, তারা কমার্শিয়ালাইজেশনের দরুন ভবিষ্যতে সে এলাকায় ট্রাফিক বেড়ে যাবার সম্ভাবনা আছে কিনা তা যাচাই করে দেখুন। আপনি আপনার মন মত যেমন একটি অ্যাপার্টমেন্ট চান তা হয়ত সব সময় একই রকম থাকবে না। সময়ের সাথে জায়গার পারিপার্শ্বিক পরিবর্তন আসবে। সুতরাং অবস্থানের উপর ভিত্তি করে আপনাকে অদূর ভবিষ্যতে এলাকাটি কেমন হতে পারে বা না পারে এমন বিষয়গুলো যাচাই করে নেয়া ভাল হবে। আরও দেখে নিন বাড়ি কেনার ব্যাপারে যা আপনাকে নিজেই জানতে হবে।
প্রশ্ন করুন
অ্যাপার্টমেন্ট কেনা কোন সহজ ব্যাপার নয় এবং আপনাকে বেশ ভেবেচিন্তেই কেনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেহেতু এটি অনেক টাকার ব্যাপার। সুতরাং অ্যাপার্টমেন্ট কেনার আগে বিল্ডিং-এর প্রাক্তন ভাড়াটিয়া বা মালিকের কাছ থেকে বিল্ডিংটি সম্পর্কে এবং এতে বসবাসকারীদের সম্পর্কে জেনে নিন। আপনার প্রতিবেশী যদি ভাল না হয় তবে আপনার বাসা যত ভালই হোক না কেন আপনি শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন না। সুতরাং এ সমস্ত বিষয় ভালভাবে জেনে বুঝে তারপর কেনার সিদ্ধান্ত নিন।
ধৈর্য ধরুন এবং খুঁজতে থাকুন
অ্যাপার্টমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকারী পরামর্শ হল ধৈর্য ধরে দেখতে থাকা। যত বেশি অ্যাপার্টমেন্ট আপনি দেখবেন, তত ভাল সিদ্ধান্ত আপনি নিতে পারবেন। আপনি হয়ত খুব তাড়াতাড়িই আপনার পছন্দমত জায়গা পেয়ে যাবেন না কিন্তু ধৈর্য ধরে খুঁজতে থাকা এবং যাচাই বাছাই করার অভিজ্ঞতাটি আপনাকে বেশ কাজে দিবে। আপনার পছন্দের লিস্টটি ছোট করতে আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে কথা বলুন। তাদেরকে প্রশ্ন করে জেনে নিন তাদের কাছে একটি ভাল অ্যাপার্টমেন্টের ব্যাখ্যা কি রকম।
আপনার পছন্দের অ্যাপার্টমেন্টটি খুঁজতে ভিসিট করুন Bikroy.com এবং কিনে নিন আপনার নিজের অ্যাপার্টমেন্ট।