Honda CB Hornet 160R রিভিউ
বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড গত ফেব্রুয়ারী, ২০১৮ তে বাংলাদেশে তাদের স্পোর্টস মোটরসাইকেল – হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর (Honda CB Hornet 160R) লঞ্চ করে। এরই মধ্যে এটি স্টাইলিশ লুক এবং অসাধারণ পার্ফরম্যান্স এর কারনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বর্তমানে এই বাইকটি ৩ টি ভিন্ন ভিন্ন কালারে পাওয়া যাচ্ছেঃ স্ট্রাইকিং গ্রিন, স্পোর্টস রেড, অ্যাথলেটিক ব্লু মেটালিক। বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড এই বাইকের সাথে দিচ্ছে ২ বছর বা ২০,০০০ কিঃ মিঃ ইঞ্জিন ওয়ারেন্টি এবং ৪ টা ফ্রি সার্ভিসিং। বর্তমানে এই বাইকের মূল্য হচ্ছে ১,৯৯,৮০০ টাকা।
ডিজাইন এবং স্টাইল
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর জনপ্রিয় ১৬০ সিসি রেঞ্জের মধ্যে একটি প্রিমিয়াম মোটরসাইকেল! মোটরসাইকেলটির ডিজাইনে রয়েছে নতুনত্ব এবং এর আকর্ষনীয় গ্রাফিক্স এটির স্পোর্টি লুককে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বাইকটির পেছনের টায়ার বেশ প্রশস্ত যা বাংলাদেশের যেকোনো রাস্তায় চলার জন্য উপযুক্ত হবে এবং বাইকারদের কাছেও খুবই পছন্দের! বাইকটির এক্সহস্ট বাইকটির সাথে কম্প্যাক্ট এবং বাইকটিতে পেটাল ডিস্ক ব্রেক রয়েছে এবং এর পাশাপাশি রয়েছে মাস্কুলার ফুয়েল ট্যাংক।
বাইকটির সামনে শার্প হ্যালোজেন হেডলাইট রয়েছে, এবং বাইকটিতে এএইচও (অটোমেটিক হেডলাইট অন) সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে তবে এটা একটি এ.সি হেডলাইট। এর ফুয়েল ট্যাঙ্কে আছে কার্বন ফাইবার স্ট্রিপ এবং মাঝখানে ট্রিম করা। সবশেষে সবচেয়ে আকর্ষণীয় জিনিসটি হচ্ছে, এর পেছন থেকে এটিকে খুবই দুর্দান্ত মনে হয় এটির এক্স শেপের এলইডি টেল লাইট এর জন্য।
স্পিডোমিটার সম্পূর্ন ডিজিটাল এবং এলসিডি স্ক্রীন এর । এই স্পিডোমটারে ফুয়েল গজ, স্পিড, রেভ কাউন্টার, অন্যান্য ওয়ার্নিং লাইট দেখা যায়। তবে এতে গিয়ার পরিবর্তনের ইন্ডিকেটর নেই। এই বাইকের ইন্ডিকেটর গুলো বাল্ব টাইপের। এই বাইকে স্পিলিট সিট নেই তবে পিছনে গ্রাব রেইল আছে। আরও দেখুন প্রথম বাইক কেনার আগে যে বিষয়গুলো আপনার জানা প্রয়োজন।
ইঞ্জিন এবং পার্ফরমেন্স
বাইকটিতে একটি ১৬৩ সিসি এয়ার কুলড সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন রয়েছে যেটা ১৫.১ বিএইচপি শক্তি এবং ১৪.৭ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করে। বাইকটিতে একটি ৫ স্পীড গিয়ারবক্স রয়েছে।
আরো অন্যান্য অনেককিছুর পাশাপাশি বাইকটিতে ভিসকাস এয়ার ফিল্টার রয়েছে যা বাইকের ইঞ্জিনে ভালো পরিমান এয়ার ফ্লো নিশ্চিত করে। বাইকটির ফুয়েল ট্যাংক এর সামনে দুদিকে দুইটি এয়ার স্কুপ রয়েছে। এই এয়ার স্কুপদুটি শুধুমাত্র বাইকের ডিজাইনের জন্য নয়, বরং অধিক গতিতে রাইডিং এর ক্ষেত্রে এটা বাইকের ইঞ্জিনে বাতাস পাঠিয়ে ইঞ্জিনকে ঠান্ডা রাখে।
ফুয়েল এফিসিয়েন্সি
যখন ১৬০ সিসি পারফর্মেন্স মোটরসাইকেল এর কথা আসে তখন এর মাইলেজ খুবই গুরুত্বপুর্ন ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়। বাইকটির ইঞ্জিনে HET (হোন্ডা ইকো টেকনোলজি) ব্যবহার করা হয়েছে। এই টেকনোলজি ইঞ্জিনকে কম তেল পোড়াতে এবং সর্বোচ্চ পরিমান পার্ফরমেন্স দিতে সাহায্য করে। এটি মাত্র ১ লিটার তেলে শহরে ৪৫ কিলোমিটার এবং হাই ওয়েতে ৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে। কিন্তু, রাস্তার কন্ডিশন এবং রাইডারের উপর নির্ভরে করে বাইকের মাইলেজ এর তারতম্য ঘটতে পারে।
ব্রেকিং এবং কর্নারিং
বাইকের ব্রেক সিস্টেম খুবই ভাল। সামনের চাকায় দুই পিস্টন ক্যালিপারের Nissin এর ডিস্ক ব্রেক ব্যাবহার করা হয়েছে এবং পিছনের টায়ারে ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে যা বাইকের ১৪০ সাইজের টায়ারে খুব ভাল ফিডব্যাক দেয়। এই বাইকের সবচেয়ে যে জিনিসটা ভাল লেগেছে তা হচ্ছে যে কর্নারিং করতে, এর পিছনের টায়ার ফ্ল্যাট না তবে কার্ভি যা এই বাইকে হাইস্পিডে কর্নারিং করতে খুব সাহায্য করে।
সুবিধা-অসুবিধা
স্টাইলিশ, স্পোর্টি লুকের পাশাপাশি ঢাকা শহরে রেগুলার রাইডের জন্য এটি একটি আরামদায়ক বাহন এবং পিলিয়ন সহ চালানোর জন্য ও খুবই উপযুক্ত।
হেডল্যাম্প অনেক আলো দিতে সক্ষম এবং আলো অনেক দূর পর্যন্ত ছড়ায় যার ফলে রাতের বেলায় বাইক চালানো যাবে নিশ্চিন্তে।
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর এর একটি সমস্যা যা অনেক রাইডার ফেস করেছেন সেটি হচ্ছে এটির চেইন যা লুজ হয়ে যায় এবং বিরক্তিকর শব্দ করে থাকে। এর সহজ সমাধান হল, চেইনটি পরিবর্তন করে নেয়া এবং সবসময় পরিস্কার ও ভাল মানের লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করলে আশা করা যায় এর সমাধান হয়ে যাবে।
সব সময় হেলমেট এবং সেফটি গিয়ার পড়ে বাইক রাইড করুন, এবং সেফলি বাইক রাইড করুন।
নতুন ও ব্যবহৃত Honda Hornet সিরিজের বাইক কিনতে ভিজিট করুন Bikroy.com. এছাড়াও হাজারো মোটরসাইকেল এর বিজ্ঞাপন থেকে কিনে নিন আপনার পছন্দের মোটরসাইকেল।