ডিএসএলআর ক্যামেরার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি
প্রয়োজন অনুযায়ী লেন্স
আপনি হয়ত স্ট্যান্ডার্ড কিট লেন্স-সমেত একটি ডিএসএলআর কিনেছেন। স্ট্যান্ডার্ড কিট লেন্স প্রথম শিখতে শুরু করার জন্য দারুণ, তবে একসময় ব্যবহার করতে করতে আপনি নিজেই বুঝতে পাবেন যে এই লেন্সগুলোর অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, বিশেষ করে লো-লাইট (কম আলোয়) এবং ভালো মানের বোকেহ ইফেক্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে। আপনি যদি আপনার কনটেন্টের ভালো আউটপুট চান তবে এক বা একাধিক প্রাইম লেন্স কিনে ফেলুন। প্রাইম লেন্সগুলো জুম ইন বা আউট করতে না পারলেও এগুলোর অ্যাপারচার অনেক কম যা দুর্দান্ত লো লাইট পারফরম্যান্স, নজরকাড়া বোকেহ এফেক্ট এবং শার্প ইমেজ কোয়ালিটি দিতে সক্ষম। সেরা প্রাইম লেন্সগুলো ৫০মিমি এফ/১.৮ লেন্স থেকে শুরু যা “নিফটি ফিফটি” নামেও পরিচিত। সব ডিএসএলআর ব্র্যান্ডেরই প্রাইম লেন্স আছে এবং এর মধ্যে ক্যানন আর নাইকনের লেন্সগুলো সবচেয়ে বেশি ভালো ও সাশ্রয়ী।
ক্যামেরা ব্যাগ
আপনার ক্যামেরার জন্য ভালো মানের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আছে অথচ সেগুলো সঠিকভাবে বহন করার জন্য কোন ব্যাগ নেই তা কি করে হয়? ডিএসএলআর এবং এর আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি বহন করার জন্য একটি ব্যাগ রাখা বাঞ্ছনীয়। ব্যাগগুলো মোটাসোটা আর এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যাতে করে আপনি ডিএসএলআর এবং এর যন্ত্রপাতি সুন্দর ভাবে গুছিয়ে রাখতে পারেন। এই ভারী আকৃতি আর অন্যকিছু রাখতে না পারাটা হয়ত অনেককেই হতাশ করবে, কিন্তু ক্যামেরার যন্ত্রপাতি নিরাপদ ও সুন্দরভাবে বহন করার জন্য এসব ব্যাগের কোন জুড়ি নেই। ক্যামেরা ব্যাগ বিভিন্ন সাইজে পাওয়া যায় তবে আপনি কোন ধরনের ব্যাগ কিনবেন তা নির্ভর করছে কতগুলো ক্যামেরা গিয়ার আপনি একসাথে বহন করতে চান তার উপর। হালকা কাজের জন্য একটি মাঝারি সাইজের সাইড-ব্যাগ হলেই চলে তবে খুব ভারী ধরণের কাজ থাকলে ব্যাকপ্যাক স্টাইলের ব্যাগ হলে ভাল হয়, কেননা সেগুলোতে আরো বেশি যন্ত্রপাতি রাখা যায়। এমন ব্যাগ না কেনাই ভাল যেগুলোতে শুধুমাত্র ডিএসএলআর ছাড়া আর অন্য কোন গিয়ার রাখার জায়গা নেই।
ক্যামেরা স্ট্যান্ড
ক্যামেরা স্ট্যান্ড বা ট্রাইপড ডিএসএলআর-এর অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি অনুষঙ্গ। আপনি যদি সুন্দর টাইমল্যাপ্স ভিডিও ক্যাপচার করতে চান বা লো লাইটে ছবি ব্লার হওয়া ঠেকাতে চান তবে ট্রাইপডের কোন তুলনা হয়না। ভিডিওগ্রাফির ক্ষেত্রে ক্যামেরা স্ট্যান্ড অত্যাবশ্যক কারণ এটি আপনাকে স্টেডি(স্থির) শট ডেলিভার করতে সহায়তা করবে যা খালি হাতে করতে গেলে ভালো আউটপুট পাওয়া প্রায় অসম্ভব। কম দামের ট্রাইপডগুলো কিছুদিন ভালই সার্ভিস দেয় তবে এগুলো খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় এবং আবারও নতুন করে কিনতে হয়। এর চেয়ে প্রথমেই দামী হলেও একটু ভাল মানের ট্রাইপড কিনুন যা আপনাকে দীর্ঘদিন ধরে সার্ভিস দিবে।
মাইক্রোফোন
এই যন্ত্রটি ভিডিওগ্রাফির ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা ডিএসএলআর-এর আনুষঙ্গিক মাইক্রোফোনটি একেবারেই ভালো নয়, মান তো পরের কথা, সাউন্ডও খুব কম। নতুন কাজ করছেন এমন ভিডিওগ্রাফাররা মনে করেন যে ভিডিও কোয়ালিটিই সব, অথচ ভাল সাউন্ডের গুরুত্ব তারা ভুলে যান। আপনি নিম্নমানের ভিডিও কোয়ালিটি হলেও তা পোস্ট-প্রোডাকশনে ঠিক করে নিতে পারবেন তবে সাউন্ড কোয়ালিটি যদি ভাল না হয় তবে তা কিছু দিয়েই ঠিক করা যায় না আর আপনি নির্ঘাত আপনার অডিয়েন্স হারাবেন। ইন্টারভিউ জাতীয় ভিডিও করতে চাইলে ল্যাভেলিয়ার মাইক অত্যন্ত কার্যকর তবে অন্যান্য বহুমুখী ব্যবহারের জন্য শটগান মাইকই সেরা।
অতিরিক্ত ব্যাটারী
ভিডিওগ্রাফীর জন্য ডিএসএলআর-এর ব্যাটারী লাইফ খুবই কম। বিশেষ করে আপনি যখন কোন ইভেন্টে কাজ করবেন বা টানা ছবি বা ভিডিও ক্যাপচার করতে থাকবেন তখন আপনি নিশ্চয়ই চাবেন না যে আপনার ক্যামেরা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাক! সুতরাং এক বা একাধিক অতিরিক্ত ব্যাটারী কিনলে আপনারই লাভ। আপনার যদি একটাই ব্যাটারী থেকে থাকে এবং আপনি তা চার্জ দিতে ভুলে যান তখন আপনি অতিরিক্ত ব্যাটারী রাখার তাৎপর্য বুঝতে পারবেন। স্মার্টফোনের মত ডিএসএলআর দ্রুত চার্জ হয় না, বেশ খানিকটা সময় লেগে যায় সুতরাং অতিরিক্ত ব্যাটারী থাকলে তা অনেক সহায়ক হতে পারে। এর সম্পর্কে আরও জানতে এখান থেকে আমাদের নতুন ডিজিটাল এস এল আর ব্যবহারকারীদের জন্য ১০ টি পরামর্শ গুলো দেখে নিন।
আশা করি এই প্রবন্ধটি আপনাদের উপকারে আসবে।