রোজায় সুস্থ থাকতে কিছু ডায়েট টিপস
এ বছরের সবচেয়ে গরম সময়টায় আমাদের প্রাণপ্রিয় মাহে রমজানের আগমন। কিন্তু প্রচণ্ড তাপমাত্রা এবং বাতাসে জলীয় বাষ্পের বাড়াবাড়িটা একেবারেই অসহনীয় হয়ে উঠেছে। রোজা রাখার সময় প্রখর সূর্যের আলোয় ঘেমে শরীর থেকে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়। সেহরি এবং ইফতারে তৈলাক্ত এবং ভাজা-পোড়া জাতীয় খাবার রোজাদারের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই রমজান-এ সুস্থ থাকার জন্য কিছু হেলথ টিপস আপনাদের কাজে আসতে পারে।
প্রচুর তরল খাবার গ্রহণ করুন
রোজার মাসে তরল খাবার কম খাওয়া শরীরে পানিশূন্যতার কারণ। পানিশূন্যতা অল্প পরিমানে হলে তা অস্বস্তির সৃষ্টি করে, তবে যদি প্রকট আঁকার ধারণ করে তবে তা জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অতিরিক্ত মিষ্টি কার্বোনেটেড পানীয়, যেমন, সোডা, কৃত্রিম ফলের রস বা জুস, শরীরের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয় এমন পানীয় যেমন- চা বা কফি ইত্যাদি পরিত্যাগ করুন।
ইফতার, সেহরি এবং ইফতারের পরবর্তী সময়ে প্রচুর বিশুদ্ধ পানি খাওয়া বাঞ্ছনীয়। বিশেষজ্ঞরা অন্তত ১.৫ থেকে ২ লিটার পানি খাওয়ার কথা বলে থাকেন। সুতরাং ইফতারের আগেই আপনার পানি-পরিশোধনকারী মেশিনে যথেষ্ট পরিমাণ পানি জমিয়ে রাখুন। একবারে খুব বেশি পানি পান না করে, অল্প অল্প করে বার বার খান। নয়ত আপনি অস্বস্তি বোধ করতে পারেন। অনেকেই আছেন যারা শুধু পানি খেতে পছন্দ করেন না, তারা পানির সাথে লেবু কিংবা বিভিন্ন ফ্লেভার মিশিয়ে খেতে পারেন। আরো কিছু স্বাস্থ্যকর বিকল্প হলো জিরো-ক্যালরি ভিটামিন অথবা ফ্রুট ওয়াটার।
খাবারের ব্যাপারে সচেতন হউন
রমজান মাসে আমাদের খাদ্যদ্রব্য হতে হবে হালকা এবং পুষ্টিকর। একটি সুষম খাদ্যাভ্যাস আপনাকে সাধারণ ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করবে। আপনি যেসব খাবার খাবেন তা যদি সঠিক হয় তবে তা আপনাকে পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করবে। সেহরি এবং ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় প্রচুর ফল এবং সবজি থাকা জরুরি যেগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি রয়েছে এবং একই সাথে সহজপাচ্য।
ফল এবং সবজী আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা করতেও সাহায্য করবে। অনেকেই আছেন যারা সঠিক খাবার ও পর্যাপ্ত পানি না খাওয়ার কারণে এবং শারীরিক কার্যকলাপের অভাবে রমজানের প্রথম দিনগুলোয় কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত হন। অতিরিক্ত মিষ্টি, কার্বোহাইড্রেট, চর্বি এবং ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার আপনার স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য উভয়ের জন্যই ব্যাপক ক্ষতিকর। যদি সম্ভব হয় তবে লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন বা বন্ধ করে দিন কারণ লবণ পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে এবং ত্বককে রুক্ষ করে দেয়।
বাড়ির বাইরে গরম এবং ক্লান্তি থেকে নিজেকে রক্ষা করুন
রমজান মাসে বাড়ি কিংবা অফিসের বাইরে দিনের বেলা সূর্যের নিচে ঘোরাফেরা করাও কমিয়ে আনতে হবে যথাসম্ভব। ইফতারের অন্তত এক ঘণ্টা পর ব্যায়ামের একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন, এতে করে শরীর ভাল থাকবে।
গরম থেকে বাঁচার জন্য হালকা সুতির কাপড় পরুন, স্কার্ফ অথবা হ্যাট দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন। সূর্যের তাপ এবং ক্যান্সারের সম্ভাবনা এড়াতে নিয়মিত সানব্লক লাগান কিংবা সানগ্লাস পড়ুন। ত্বকের যত্নে এবং একে আদ্র রাখতে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
আপনি যদি সঠিক ভাবে রোজা রাখতে পারেন তবে তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য হবে অধিক উপকারী। এই রমজান হোক আনন্দময় এবং সকলের শরীর এবং মন থাকুক সুস্থ ও সুন্দর। রমজান মোবারক! 🙂