বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগঃ কেন প্রপার্টিতে বিনিয়োগ নিরাপদ?
মধ্যম মানের অর্থনীতি কেন্দ্রিক হওয়ার কারণে যুগ যুগ ধরেই একজন সাধারণ বাংলাদেশি নাগরিকের স্বপ্ন থাকে একটুকরো জমি অথবা একটা ফ্ল্যাটের মালিক হওয়া। তবে সময় বদলিয়েছে, বর্তমানে জমির জায়গায় প্রচলিত শব্দটি হলো ‘রিয়েল এস্টেট’।
আগামীর জন্য কিছুটা সঞ্চয় করা সবসময়ই বুদ্ধিমানের কাজ। ব্যাংকে টাকা জমানো থেকে শুরু করে প্রপার্টিতে বিনিয়োগ, এমন অনেক বিনিয়োগের মাধ্যম রয়েছে যা ভবিষ্যতে আপনার জন্য লাভজনক হবে। অন্যান্য সুবিধা ছাড়াও রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ বেশ জনপ্রিয়, কারণ এর মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি লাভ উপভোগ করা যায়।
যদিও রিয়েল এস্টেট বেশ জনপ্রিয় ও পুরাতন একটি বিনিয়োগ মাধ্যম, তবুও অনেকেই আছেন যারা এই খাতে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে সংকোচে ভোগেন।
ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতার পাশাপাশি আজকে কেন আপনার বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করা উচিত তার কিছু কারণ এবং দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশে প্রপার্টি আপনাকে কীভাবে লাভবান করবে তা নিয়ে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
কেন রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করবেন?
আমাদের সবারই একটি স্থায়ী বাসস্থান প্রয়োজন। আর এই কারণেই রিয়েল এস্টেট বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ যেহেতু একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, এখানে আবাসন কিছুটা চ্যালেঞ্জিং আর সেজন্যেই রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ কিছুক্ষেত্রে অপরিহার্য। এছাড়াও এই খাতে বিনিয়োগের অন্যান্য যেসকল সুবিধাদি রয়েছেঃ
- রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ আপনাকে ভালো রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট দিতে সক্ষমঃ যাবতীয় খরচ পরিশোধ হয়ে গেলে, রিয়েল এস্টেট থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে উপার্জন করা যেতে পারে। আপনার প্রজেক্টের কাজ শেষ হবার পরপরই রিয়েল এস্টেট থেকে আর্থিক উপার্জন সম্ভব। পাশাপাশি আপনি কাঙ্ক্ষিত মূল্যে আপনার প্রপার্টি বিক্রি করে দিতে পারবেন বা বাড়তি উপার্জনের জন্য সেটি ভাড়া দিতে পারেন।
- প্রপার্টি ভাড়া দেওয়ার মাধ্যমে আয়ঃ আপনার প্রপার্টির মাধ্যমে আয়ের অন্যতম উৎস হলো সেটি ভাড়া দেওয়া। এছাড়াও আপনার প্রপার্টি মেট্রোপলিটন এলাকায় হলে আপনি সেটি থেকে ভালো ভাড়া আশা করতে পারেন। দ্রুত নগরায়নের কারণে ভাড়া দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা প্রপার্টির মালিক হিসাবে আপনার উপার্জনের ধারা বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
- নিরাপদ বিনিয়োগঃ একজন সাধারণ বাংলাদেশি হিসাবে আপনি ব্যবসা, শেয়ার বাজার বা স্টকের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন, তবে এই সমস্ত খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বা সেফটি একটি ইস্যু। অন্যদিকে, রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ তুলনামূলক নিরাপদ।
রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের সুবিধাসমূহ
আর্থিক সুবিধা ছাড়াও বাংলাদেশে প্রপার্টিতে বিনিয়োগের কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা রয়েছেঃ
- দ্রুত গতিতে চলমান উন্নয়নঃ বিগত এক দশক ধরে বাংলাদেশ বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। সারা দেশে রাস্তা, সেতু, মহাসড়ক, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেস-ওয়ে এবং আরও অনেক কিছু নির্মাণাধীন রয়েছে। রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করার জন্য এটা উপযুক্ত সময় কারণ ভবিষ্যতে উন্নয়নমূলক এসকল কাজগুলোর কারণে, বিশেষ করে মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে প্রপার্টির দাম বৃদ্ধি পাবে।
- মৌলিক চাহিদা পূরণঃ আমরা আগেই বলেছি আমাদের সবার একটি বাসস্থান প্রয়োজন। সোনা এবং ব্যাংক আমানতের মত ইনট্যানজিবল অ্যাসেটে বিনিয়োগ যেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না, সেখানে রিয়েল এস্টেট সেক্টরে বিনিয়োগ আপনাকে নিরাপত্তার পাশাপাশি দেবে একটি স্থায়ী ঠিকানা।
- নিরাপদ ভবিষ্যতঃ আমরা মূলত আমাদের প্রিয়জনদের কথা ভেবেই আমাদের দৈনন্দিন কাজ করি আর তাদের জন্য নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার চেয়ে সেরা উপহার আর কিইবা হতে পারে? রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ এমন একটি মাধ্যম যেটি নিরাপদ এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম সেবা দিয়ে যেতে সক্ষম।
- সামাজিক মর্যাদাঃ রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ আপনাকে সামাজিক মর্যাদা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। বর্তমানে ডেভেলপাররা সেরা ডিজাইন, ভালো লোকেশন এবং অন্যান্য ব্যয়বহুল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে। তাহলে কেন এই সুযোগে প্রপার্টির মালিক হয়ে নিজের সামাজিক মর্যাদা বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করবেন?
শেষকথা
আমরা আপনাকে রিয়েল এস্টেটে অন্ধভাবে বিনিয়োগ করার জন্য বলছি না। সঠিক উপায়ে রিসার্চ করুন এবং চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আগে আপনার মূলধন সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন।
বাংলাদেশে অ্যাপার্টমেন্ট, জমি বা বাণিজ্যিক সম্পত্তি কেনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে Bikroy ব্লগ ঘুরে আসতে পারেন। সর্বোপরি, রিয়েল এস্টেট বাংলাদেশের অন্যতম নিরাপদ বিনিয়োগ খাত।
হ্যাপি ইনভেস্টিং!