হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের সঠিক নিয়মঃ যে কারণে Sepnil-ই সবার সেরা
আমাদের হাত প্রতিনিয়তই বিভিন্ন রকম জিনিসের সংস্পর্শে আসে। আর অজান্তেই যেকোনো জায়গা বা মানুষের কাছ থেকে আমাদের হাতে চলে আসে বিভিন্ন ধরণের জীবাণু। এরপর হাত থেকে নাক, চোখ অথবা মুখের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে শরীরের ভিতরে যা আমাদের আক্রান্ত করার জন্য যথেষ্ট। সারা পৃথিবী আজ মহামারী করোনা ভাইরাসের কবলে জর্জরিত। এরকম সময় নিয়মিত নিজেদের হাত ও ব্যবহারের জিনিসগুলো পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত রাখা খুবই জরুরি। সাবান পানি কিংবা অ্যালকোহল সমৃদ্ধ যেকোনো স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়া আমাদের জন্য এখন অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সব সময় তো হাতের কাছে পানি কিংবা সাবান থাকে না! এরকম পরিস্থিতিতে আপনার বন্ধু হতে পারে “সেপনিল ইন্সট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
আমরা যখন বাসার বাইরে থাকি বা রাস্তায় চলাচল করি, তখন সঠিক নিয়মে সাবান বা হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়া সম্ভব হয় না। আর তখন হ্যান্ড স্যানিটাইজারই একমাত্র ভরসা। কিন্তু সঠিকভাবে ব্যবহার না করতে না জানলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার আপনার হাত থেকে জীবাণু পুরোপুরি দূর করতে পারে না। আবার যেহেতু এটি একটি রাসায়নিক দ্রবণ, তাই অতিরিক্ত বা অসতর্ক ব্যবহারের ক্ষতিকর কিছু দিকও আছে। তাহলে চলুন আজ আমরা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের নিয়ম ও কোন ধরনের স্যানিটাইজার জীবাণু দূর করতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর সেটা জেনে নিই।
সাধারণ হ্যান্ড স্যানিটাইজারের তুলনায় কেন সেপনিল অনেক বেশি কার্যকরঃ
অ্যালকোহলের মাত্রাঃ
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের ব্যবহারের হ্যান্ড স্যানিটাইজারে ন্যূনতম ৭০-৯০ শতাংশ অ্যালকোহল থাকা জরুরি (তথ্যসূত্রঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা)। বাজারের বেশির ভাগ নন-ব্র্যান্ডেড স্যানিটাইজারে এই অ্যালকোহলের মাত্রা নিশ্চিত করে জানা যায় না। কিন্তু সেপনিল ইনস্ট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজারে রয়েছে ৭০ শতাংশ ইথানল। তাই করোনা ভাইরাস সহ শতকরা ৯৯ ভাগ কঠিন রোগ জীবাণু দমন করার জন্য নিশ্চিন্তে এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
হাতের যত্নঃ
অধিক সতর্কতার কারণে ঘন ঘন হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার অভ্যাস রয়েছে এমন ব্যক্তিরা প্রায়ই হাতের ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন। এর প্রধান কারণ হল এতে থাকা অ্যালকোহলের মাত্রা। নিয়মিত ময়েশ্চরাইজার ব্যবহার না করলে এই সমস্যা চূড়ান্ত আকার ধারনণ করতে পারে। আপনাদের জীবনকে আরো একটু সহজ করতে সেপনিল ইন্সট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজারে রয়েছে গ্লিসারিন, যা আপনার হাতকে বাড়তি সুরক্ষা দেবে। তাছাড়া এটি অল্প পরিমাণে ব্যবহার করেই অধিক কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যায়।
কখন স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন আর কখন করবেন না?
স্যানিটাইজার ব্যবহার করার কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে, যেগুলো মেনে না চললে আপনার উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাবান দিয়ে হাত দিয়ে হাত ধোয়ার বদলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা সহজ মনে হতে পারে। তবে যেহেতু এটি একটি রাসায়নিক দ্রবণ, তাই এর অতিরিক্ত ব্যবহার কখনোই ভালো হতে পারে না।
- স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে আমরা জেনেছি যে স্যানিটাইজার যেকোনো ধরণের ব্যাকটেরিয়া খুব কার্যকরভাবে ধ্বংস করতে পারে। কিন্তু আমাদের শরীর এমন কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, যেগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদেরকে বলা হয় ‘মাইক্রোবায়োম’। স্যানিটাইজারের অতিরিক্ত ব্যবহার এই মাইক্রোবায়োম-এর মাত্রায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে।
- স্যানিটাইজার বার বার অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহারে বিভিন্ন ব্যকটেরিয়া আগের চেয়ে বেশি সহনশীল এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে সেগুলোর উপর এই রাসায়নিক মিশ্রণটির প্রভাব নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আর সেজন্যই এই জিনিসটি শুধুমাত্র তখনই ব্যবহার করা উচিত, যখন হাতের কাছে পানি এবং সাবান কিংবা হ্যান্ডওয়াশ কোনটাই পাওয়া সম্ভব নয়।
- হাতে যদি দৃশ্যমান কোন ধূলা, ময়লা বা কালি থাকে তাহলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে সেগুলো কখনও পরিষ্কার হবে না। কারণ স্যানিটাইজার ময়লা দূর করতে পারে না। তাছাড়া এরকম পরিস্থিতিতে এই মিশ্রণটির জীবাণু ধ্বংস করার কার্যক্ষমতা কমে যায়। ময়লার ঝুড়ি পরিষ্কার, ঘর পরিষ্কার করা, শিশুর ডায়াপার পাল্টানো ইত্যাদির পরও স্যানিটাইজার ব্যবহার করে লাভ নেই।
- আপনার পাশে বসে কেউ হাঁচি দিলে স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে উপকার বা ক্ষতি কোনটাই হবে না। কেননা হাঁচির সাথে ভাইরাস যুক্ত ড্রপলেট আপনার নিঃশ্বাসের সাথেই শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
- বাসার বাইরে যেকোনো জিনিস বা মানুষকে স্পর্শ করলে আর হাত ধোয়ার সুযোগ না থাকলে অবশ্যই স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু সেটা অকারণে বার বার করা যাবে না। কোনো কিছু খাওয়ার আগে বা চোখে মুখে হাত দেয়ার আগেই শুধুমাত্র স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন। হাতে একটি কয়েন পরিমান সেপনিল ইন্সট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে সেটা না শুকানো পর্যন্ত ২০ সেকেন্ড ধরে দুই হাত ভালোভাবে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে।
- রান্না করার আগে ও পরে স্যানিটাইজারের ব্যবহার উপযোগী না। কাঁচা মাছ-মাংস ধরলে হাত তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। স্যানিটাইজার এ অবস্থায় কাজ করতে পারে না আর পরিষ্কারও করতে পারে না।
- আপনার বাসায় যদি কারোর বমি বা ডায়রিয়া হয়, অথবা কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন, তখন হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু সম্ভব হলে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়াই উত্তম।
- বাইরে থেকে আনা কোনো জিনিসের প্যাকেজিং এর উপর স্যানিটাইজার ব্যবহার করে জীবাণু দূর করা যেতে পারে।
স্যানিটাইজার ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাড়তি সাবধানতাঃ
আমরা ইতোমধ্যে উল্লেখ করেছি যে স্যানিটাইজার হচ্ছে অ্যালকোহল সমৃদ্ধ একটি রাসায়নিক মিশ্রণ, যাতে বিভিন্ন ধরণের জটিল কেমিক্যাল রয়েছে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করাটাও খুবই জরুরি।
অ্যালকোহল থেকে বিষক্রিয়ার ঝুঁকিঃ
হ্যান্ড স্যানিটাইজারের নির্যাস বা ধোঁয়া নাক দিয়ে প্রবেশ করার প্রভাব কোন হালকা ব্যাপার নয়। এর থেকে হতে পারে অ্যালকোহল পয়জনিং বা বিষক্রিয়া। স্যানইটাইজার ব্যবহারের পর হাত পুরোপুরি শুকানোর আগেই নাক বা ঠোঁট স্পর্শ করলেও সামান্য ক্ষতির আশংকা আছে। তবে তার চেয়েও বড় ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাপার হল যদি কেউ ভুলক্রমে হ্যান্ড স্যানিটাইজার গিলে ফেলেন। সেক্ষেত্রে অবিলম্বে নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অ্যালকোহলের দাহ্যতাঃ
কার্যকরী ও ভালো মানের স্যানিটাইজারে অ্যালকোহলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকায় এই রাসায়নিক মিশ্রণটি অত্যন্ত দাহ্য এবং অসতর্ক ব্যবহারে সহজেই ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। প্রতিবার ব্যবহারের পর হাত ভালোভাবে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আগুন কিংবা অন্যান্য দাহ্য কেমিক্যাল থেকে দূরে থাকতে হবে। স্যানিটাইজারের বোতলটিকেও সব সময় নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে।
শিশুদের ক্ষেত্রে সাবধানতাঃ
সেপনিল ইনস্ট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সুন্দর প্যাকেজ বা ঘ্রাণে শিশুরা আকৃষ্ট হতে পারে। তাই শিশুদের ক্ষেত্রে এই মিশ্রণ ব্যবহার করা নিয়ে খুব সাবধান থাকতে হবে। তাছাড়া সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর মতে, নিয়মিত এরকম তীব্র রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই যতটা সম্ভব এটা শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা উচিত।
যারা রাসায়নিক উপাদান নিয়ে কাজ করেনঃ
বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান ও পণ্য নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি মিশ্রণ। এমন অনেকেই আছেন, যারা শক্তিশালী পরিষ্কারকারী কেমিক্যাল, ‘ডি-গ্রিসিং এজেন্ট’ বা তৈলাক্ত ভাব মোচনকারী উপাদান, কীটনাশক ইত্যাদি রাসায়নিক নিয়ে কাজ করেন। লিক্যুইড জেল ধাঁচের স্যানিটাইজার আর বিভিন্ন তীব্র রাসায়নিক উপাদানের বিক্রিয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর হতে পারে। সিডিসি-এর মতে, আমাদের হাতে যদি কীটনাশক অথবা ভারী কোনও ধাতু লেগে থাকে, তাহলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে তা পরিষ্কার হবে না, উল্টা বিষক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শেষকথা
সবশেষে, এটা সবার কাছেই সত্য যে, হাত ধোয়ার চেয়ে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা অনেক সহজ। আর যেকোনো জায়গায় থেকে হাত জীবাণুমুক্ত করতে চাইলে এর জুড়ি নেই। কিন্তু আর দশটা রাসায়নিক মিশ্রণের মত স্যানিটাইজার ব্যবহারেও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই চলুন আমরা আজ থেকে এই জীবন রক্ষাকারী উপাদানটি সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করার চেষ্টা করি। আর নিম্নমানের আজে বাজে কিংবা নকল স্যানিটাইজার ব্যবহার করে নিজের ও নিজের কাছের মানুষদের ঝুঁকির মধ্যে না ফেলি। ব্যবহার করি নির্ভেজাল ও উন্নত মানের সেপনিল ইনস্ট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজার।