রাইড শেয়ারিং ও ফুড ডেলিভারি : গাড়ি বা মোটরবাইক মালিকদের জন্য সম্ভাবনাময় পেশা
উবার, পাঠাও, হাংরি নাকি, ফুডপান্ডা – আপনি যদি ঢাকায় বসবাস করেন, তাহলে এই কয়েকটি সার্ভিসের নাম আপনি অবশ্যই শুনেছেন। আজকের দিনে আপনার যা কিছু প্রয়োজন, প্রায় সবটাই আপনার হাতের মুঠোয় এনে দিচ্ছে ইন্টারনেট। যদিও “ই-কমার্স বিজনেস” বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে একটি পরিচিত নাম। বেশির ভাগ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমানে লোকাল টেক ইন্ডাস্ট্রিতে সাড়া জাগিয়ে দখল নিয়েছে বিভিন্ন নতুন ও আকর্ষণীয় অ্যাপ ভিত্তিক সার্ভিসগুলো।
২০১৫ সালে পাঠাও একটি লোকাল ডেলিভারি সার্ভিস হিসেবে তাদের যাত্রা শুরু করে। তারপর আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি উবার বাংলাদেশে গাড়ির সাহায্যে রাইড শেয়ারিং এর সূচনা করার পর পাঠাও এই সার্ভিসটিকে নতুন রূপ দান করে। তারা ডেলিভারি সার্ভিসের পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং সার্ভিসটি শুরু করে। বর্তমানে এই দু’টি কোম্পানির পাশাপাশি ওভাই, সহজ সহ আরও অনেক কোম্পানি গাড়ি ও মোটরবাইকের মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে।
শুধু তাই নয়, হাংরি নাকি এবং ফুডপান্ডা নামের অ্যাপগুলোও এই কয়েক বছর ধরে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। এই অ্যাপগুলো শুধুমাত্র ফোন ব্যবহার করেই আমাদেরকে বহু সংখ্যক রেস্টুরেন্ট এবং ক্যাফে থেকে বিভিন্ন ধরণের খাবার অর্ডার করার স্বাধীনতা দিয়েছে। আর তার পরপরই অন্যান্য অ্যাপ ভিত্তিক ব্যবসা (এমনকি রাইড শেয়ারিং কোম্পানি গুলোও) ফুড ডেলিভারির অপশন নিয়ে এসেছে। আর আমরা পেয়েছি উবার ইটস, পাঠাও ফুড এবং সহজ ফুড -এর মত অ্যাপগুলো।
এই সার্ভিসগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক হারে সুযোগ সুবিধা তৈরি করে দেয়ার কারণে দেশের বড় বড় শহরগুলোয় এরা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই ইন্ডাস্ট্রি দিন কে দিন যত প্রসার হচ্ছে, আরো অধিক সংখ্যক গাড়ি ও বাইক মালিকরা এদের সাথে যুক্ত হচ্ছেন। এখন আপনার যদি নিজের একটি বাইসাইকেল, মোটরবাইক কিংবা গাড়ি থাকে, তাহলে কিছু বাড়তি ইনকাম করার জন্য খুব সহজেই আপনি এক বা একাধিক রাইড শেয়ারিং ও ফুড ডেলিভারি কোম্পানিতে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
রাইড শেয়ারিং ও ডেলিভারি সার্ভিসের জন্য চাকরির বাজার কেমন?
দেশের সার্ভিস এবং টেক ইন্ডাস্ট্রিতে রাইড শেয়ারিং এবং অনলাইন খাবার অর্ডারের অ্যাপস গুলো এক রকম বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। দু’টি সম্পূর্ণ ভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে এমন ভাবে সংযোগ তৈরি করেছে, যা আগে কখনও কেউ ভাবতে পারেনি।
তাহলে এই সব কিছু চাকরির মার্কেটের উপর কি রকম প্রভাব ফেলবে?
এই দু’টি অ্যাপ ভিত্তিক সার্ভিস কোম্পানির প্রসার হওয়ার সাথে সাথে চিরন্তন নিয়মে আরো বেশি রাইডারের চাহিদা বেড়েই চলেছে। দুই ও চার চাকার বাহনের মালিকেরা এই কোম্পানিগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে পরিবহন ও ডেলিভারি সার্ভিসের এই চাহিদা পূরণ করতে পারবেন।
এই ব্যবসায়িক মডেলটি কোম্পানিগুলোকে প্রাথমিক বিনিয়োগের দিক থেকে বিশাল অংকের সাশ্রয় করার সুযোগ করে দিয়েছে। কেননা এখানে নিয়োগ দেয়ার ঝামেলা প্রায় নেই বললেই চলে। ফুল-টাইম এবং পার্ট-টাইম কর্মী নিয়োগ দেয়ার বদলে এই কোম্পানিগুলো এখন গাড়ি ও মোটরবাইক মালিকদের সাথে কনট্র্যাক্ট সিস্টেমে চুক্তি করে থাকেন। এই কনট্র্যাক্টগুলো নিজ নিজ স্বাধীনতা বজায় রেখে কোম্পানির নামের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করতে পারেন এবং এভাবে সব মিলিয়ে দুই পক্ষই লাভবান হতে পারেন।
একজন রাইডার হওয়ার বিভিন্ন সুবিধা
গড়পড়তা ইনকাম
রাইড শেয়ারিং সেক্টরে কাজ করার মাধ্যমে একজন রাইডার প্রতি মাসে বেশ ভালো অংকের ইনকাম করতে পারেন। ‘দ্যা ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস’ -এর মতে বাংলাদেশে একজন ফুল-টাইম রাইডার প্রতি মাসে প্রায় ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মত উপার্জন করতে পারেন, যা দিনের হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ১,৭০০ টাকার মত। আর একজন পার্ট-টাইম রাইডার এক দিনে সর্বমোট কয়টি রাইড সম্পন্ন করতে পারেন তার উপর নির্ভর করে প্রতি মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে কিংবা এর চেয়েও বেশি ইনকাম করতে পারেন। এক্ষেত্রে দিনের মোটামুটি অর্ধেক বা আরো কম সময় ব্যয় করে প্রায় ৮৫০ টাকার মত উপার্জন আসে।
রাইডাররা কোম্পানির নামের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করার এবং অ্যাপ ব্যবহারের সুবিধার জন্য তাদের ইনকামের ২০% রিটার্ন হিসেবে পরিশোধ করে থাকেন এবং বাকি ৮০% নিজেদের কাছে রাখতে পারেন। এটা রাইডারদের জন্য দারুণ একটি ব্যবস্থা কেননা এর সাহায্যে যেকোনো চিরাচরিত প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন রকম চাকরির তুলনায় তারা বেশ ভালো পরিমাণ ইনকাম করতে পারছেন।
প্রকৃতপক্ষে এই ব্যবস্থাটি এতটাই লোভনীয় ও কার্যকরী যে বহু সংখ্যক মোটরবাইক মালিকেরা ঢাকার বাইরে থেকে এসে কোম্পানিগুলোতে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, আর এখান থেকে অর্জিত অর্থ মহানগরীতে তাদেরকে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করার সুযোগ করে দিয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ ঢাকার বাইরে থেকে আগত অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীই ঢাকায় তাদের পড়াশোনা ও থাকা-খাওয়ার খরচ সহজ করার জন্য এ কোম্পানিগুলোতে পার্ট-টাইম রাইডার হিসেবে কাজ করছেন।
বাড়তি স্বাধীনতা ও অনুকূল কাজের ধরণ
চুক্তিবদ্ধ কর্মী হিসেবে কনট্র্যাক্টে কাজ করা রাইডাররা তাদের কাজের সময় ও দিন নিজেরাই বেছে নেয়ার স্বাধীনতা পাচ্ছেন। প্রতি দিনের কাজের জন্য এখানে কোন বাঁধাধরা নিয়ম কিংবা পরিধি নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা কোম্পানির নির্ধারণ করা কিছু নির্দিষ্ট মানদন্ড মেনে চলবেন এবং অ্যাপগুলোর সার্ভিসের সুনাম ও গুণগত মান বজায় রেখে কাজ করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত রাইডারদের উপর কোন কড়া নজরদারি বা তদারকি করা হবে না। এর ফলে রাইডাররা তাদের সময় ও শক্তি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক, যেমন- ইউনিভার্সিটির কাজ, অন্যান্য চাকরি কিংবা পারিবারিক সম্পর্ক ইত্যাদি জায়গায় দেয়ার বিপুল সুবিধা পেয়ে থাকেন।
মোটরবাইকের দাম কমেছে
২০১৭ সালে দুই চাকার বাহন আমদানির ক্ষেত্রে পরিপূরক শুল্ক অনেকখানি কমে গিয়েছিল, তার ফলে পুরোপুরি প্রস্তুত মোটরবাইকগুলোর দামও অনেক নেমে এসেছিল। তখন আরো অধিক সংখ্যক মানুষ মোটরবাইক কেনার সামর্থ্য অর্জন করেন। তার পর থেকেই বাইকের বিক্রি প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে। অনেক ব্যক্তিই এখন খুব সহজে মাঝারি দামের মোটরবাইক কেনার সামর্থ্য রাখেন, যাতে করে অ্যাপ ভিত্তিক সার্ভিসগুলোতে রেজিস্ট্রেশন করা এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে গেছে।
মার্কেট বিকাশের সম্ভাবনা
আজকের দিনে রাইড শেয়ারিং এবং ফুড ডেলিভারি সার্ভিস অবিশ্বাস্য রকম সম্ভাবনাময় একটি মার্কেটে পরিণত হয়েছে। বাজারে রাইডারদের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হচ্ছে, আর প্রবৃদ্ধির হার এমন ভালো হওয়ার ফলে দেশব্যাপী রাইডারদের চাহিদা আরো অনেক বেড়ে যাবে। পরিবহন এবং খাবার মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে পরে – কেননা সবাইকে খাওয়াদাওয়া ও যাতায়াত করতে হয়। আর আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে আরো সহজ করতে এই অ্যাপগুলো ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। সেজন্যই এখানে চাহিদা ব্যাপক, অতএব আপনি যদি একজন রাইডার হন, তাহলে এখানে অবশ্যই আপনার জন্য সম্ভাবনা রয়েছে। হয়ত আপনার দুই কিংবা চার চাকার বাহনটি ভালো কাজে লাগানো এবং বেশ ভালো অংকের ইনকাম করার এটাই শ্রেষ্ঠ সময়। আর সেটা আপনি কখন ও কিভাবে করতে চান, পুরোটা সিদ্ধান্ত শুধুই আপনার।
কিভাবে একজন রাইডার হওয়া যায়?
আপনার যদি মনে হয় যে একজন রাইডার কিংবা ফুড ডেলিভারি ম্যান হওয়াটা আপনার ক্যারিয়ারের জন্য সঠিক পছন্দ, তাহলে এই সার্ভিসে আবেদন করার আগে কিছু জিনিস আপনার আগে থেকেই জেনে নেয়া দরকার।
যা কিছু লাগবে
একদম শুরুতেই আপনার নিজস্ব একটি বাহন থাকতে হবে। এই ব্যবসায়িক মডেলটি এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র মার্কেটে উপস্থিত বাহন মালিকদের কন্ট্র্যাক্ট দেয়া ও চুক্তি স্বাক্ষর করানোর জন্য কাজ করছে। তাই রাইডার হিসেবে আপনার যাত্রার প্রথম ধাপ হচ্ছে কোনো একটি বাইসাইকেল, মোটরবাইক কিংবা গাড়ির মালিক হওয়া। আপনার বাহনটির ধরণই বলে দেবে কোন ধরণের সার্ভিসে আপনি যোগ দিতে পারবেন। যদি আপনার একটি গাড়ি থাকে, তাহলে উবার আপনার প্রথম পছন্দ হতে পারে, তেমনি মোটরবাইক মালিকদের জন্য পাঠাও, আর যদি আপনার কাছে বাইসাইকেল থাকে তাহলে ফুড ডেলিভারির সার্ভিসে যোগ দেয়াই আপনার জন্য ভালো হবে। পাশাপাশি আপনার কাছে একটি স্মার্টফোন অবশ্যই থাকতে হবে, কেননা এই সমস্ত সার্ভিসগুলো অ্যাপ নির্ভর এবং ইন্টারনেট জিপিএস ইত্যাদি ব্যবহার করতে হয়।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো আপনার বাহনের যথাযথ রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স তৈরি থাকা। আপনার বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর হতে হবে এবং ড্রাইভিং এর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বোঝানোর জন্য একটি বৈধ ড্রাভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। বিআরটিসি এর অধীনে আপনার বাহনটিকে রেজিস্ট্রেশন করানো থাকতে হবে এবং সেটার নির্ভেজাল ডকুমেন্ট সাথে রাখতে হবে। কেননা নিয়োগকারীরা আপনাকে কোম্পানিতে নেওয়ার আগে এই সব কাগজপত্র দেখতে চাইবেন।
সামনা সামনি আপনি যে সব ডকুমেন্ট তাদের হাতে দিবেন, সেগুলো ছাড়াও এই কোম্পানিগুলো আপনার ইতিহাস এবং জীবন বৃত্তান্ত চেক করে দেখতে চাইবেন। অতীতে আপনার কোন ড্রাইভিং দুর্ঘটনা রয়েছে কি না কিংবা আপনার ট্র্যাক রেকর্ডে কোনো খারাপ ঘটনার সাক্ষ্য পাওয়া যায় কি না সেগুলো তারা জানার চেষ্টা করবেন।
যারা রাইডার হতে পারবেন
ভার্চুয়াল জগতে একটি বাহন এবং স্মার্টফোন রয়েছে এমন যেকোনো ব্যক্তিই রাইডার হতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি ইতোমধ্যে কোনো একটি ফুল টাইম চাকরিতে কর্মরত থাকেন এবং আপনার কাজের চাপ, রুটিন ও সময়সীমা অনেক বেশি কঠোর হয়, তাহলে হয়ত রাইডারের কাজটি আপনার জন্য সঠিক অপশন নয়।
প্রধানত রাইডাররা তাদের কাজ পছন্দমত যেকোনো সময়ে ও যেকোনো উপায়ে করার পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়ে থাকেন। এর থেকে একজন ব্যক্তি হয় একেবারে ফুল টাইম রাইডার হয়ে যেতে পারেন এবং তাদের সমস্ত সময় এই সার্ভিসগুলোতে দিয়ে থাকেন। অথবা তারা চাইলে পার্ট টাইম রাইডারও হতে পারেন – যেমনটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরাই করে থাকেন।
অতএব আপনি যদি এখন নতুন চাকরির খোঁজ করেন বা কোনো চাকরি ছেড়ে দিয়ে থাকেন, কিংবা যেকোনো ভাবে দিনে আপনার হাতে অনেকটা খালি সময় থাকে – তাহলেই রাইডার হিসেবে কাজ করে আপনি সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারবেন।
শেষকথা
এখন পর্যন্ত একবিংশ শতক উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বেশ দারুণ এক অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ইন্টারনেট প্রযুক্তিতে দুর্দান্ত অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এদেশের ভবিষ্যৎ নতুন সম্ভাবনার আলোয় ঝলমল করছে। আজ অ্যাপ ভিত্তিক ইন্ডাস্ট্রি সাফল্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে অজস্র কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। একজন বাহন মালিক হিসেবে তাই আজ আপনার সামনে রয়েছে লুফে নেয়ার মত বিপুল পরিমাণ সুযোগ।
আপনি যদি এরকম কোনো চাকরি নেয়ার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে রাইডারদের জন্য শত শত চাকরি খুঁজে পেতে ব্রাউজ করুন BikroyJOBS, আর টাকা কামানো শুরু করে দিন আজই!
রাইডার হতে চান, কিন্তু রাইড খুঁজে পাচ্ছেন না? Bikroy -এর যানবাহন সেকশনটি ঘুরে আসুন, আর পেয়ে যান নতুন ও ব্যবহৃত মোটরবাইক সহ বিভিন্ন ধরণের গাড়ির বিজ্ঞাপন।