টিপস ও গাইডফ্যাশন, স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য্য

করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে নিরাপদে কেনাকাটা করার ৬টি টিপস

একটা ছোট্ট প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি, প্রথম কবে আপনি অনলাইনে কিছু কিনেছিলেন? উত্তরটা হয়তো ৭-৮ বছর আগের মধ্যেই ঘুরপাক খাবে। কিন্তু হলফ করে বলতে পারি এর থেকে খুব বেশি আগে নয়। এটা বলাই বাহুল্য যে গত দশ বছর আগেও যে অনলাইনে কেনাকাটা করা মানুষের কাছে ছিলো বিলাসিতা মাত্র, ডিজিটালাইজেশনের এই যুগে এসে তা হয়ে গেছে নিত্যদিনের অভ্যাস। বিশেষ করে অতিমারির এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে জনজীবন যেখানে বিপর্যস্ত, সেই সময়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে অনলাইনে কেনাকাটাই অনেকের কাছে একমাত্র ভরসা। আমরা ভাগ্যবান, লকডাউনের মতো এই জরুরি সময়ে নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য দেশজুড়ে কাজ করছে কতিপয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস। 

তেমনি একটি হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস Bikroy.com, যা দেশে অনলাইন কেনাকাটা-কে দিয়েছে এক নতুন মাত্রা। কী নেই এই অনলাইন কেনাকাটার সাইট-এ? খাবার সামগ্রী, স্বাস্থ্যসেবার পণ্য থেকে শুরু করে জামা কাপড়, ফার্নিচার, এমনকি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমগুলোরও সন্ধান মিলছে এখানে।

তবে তারপরও অনেকের মনে প্রশ্ন থেকেই যায় যে অনলাইনে কেনাকাটা করা কতটা নিরাপদ? স্বস্তির ব্যাপার হচ্ছে যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে কেনাকাটার মাধ্যম হিসেবে অনলাইন তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। তারপরও যেহেতু পণ্যটি বিভিন্ন হাত ঘুরে আপনার দোরগোড়াতেই আসছে তাই স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আপনাকে অবশ্যই কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হবে। আজ আমরা সেরকমই কিছু নিরাপত্তামূলক টিপস নিয়ে আলোচনা করবোঃ

১. বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য সাইট বেছে নিন

প্রথমেই যা মাথায় রাখতে হবে তা হচ্ছে আপনি কোথা থেকে পণ্যটি অর্ডার করছেন? পণ্য ডেলিভারির জন্য প্যাকেটজাত থেকে শুরু করে আপনার কাছে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত যথাযথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা হচ্ছে কি না? ডেলিভারি ম্যানদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কি না তা জেনে নিন। প্যাকেটজাত পণ্য ও পণ্যবাহী ডেলিভারি ম্যানের কাছ থেকে সংক্রমণের আশংকা থেকেই যায়। তাই যেকোনো সাইট থেকে নয়, অনলাইন কেনাকাটার জন্য নির্ভরযোগ্য সাইট বেছে নিন। 

২. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন

বাজারের মতো ভিড় না হলেও ডেলিভারি ম্যানের কাছ থেকে দূরত্বের মতো বাড়তি সতর্কতা নিয়ে রাখতে পারেন। ক্যাশ অন ডেলিভারি না হলে বা পেমেন্ট আগে থেকে করা থাকলে চেষ্টা করুন ডেলিভারি ম্যানকে বাড়ির নিচে বা দরজার বাইরে পণ্য ডেলিভার করে যাবার জন্য। তবে অনলাইনে জামা কাপড় ও এরকম কিছু পণ্য ডেলিভারির সময় চেক করে নিতে হয়। তাই সেক্ষেত্রে যথাসম্ভব দূর থেকে পণ্যটি গ্রহণ করার চেষ্টা করুন।  

৩. ডেলিভারির সময় মাস্ক ও গ্লাভস পরিধান করুন

ডেলিভারি ম্যানের কাছ থেকে পণ্য বুঝে নেওয়ার সময় সঠিকভাবে মাস্ক ও দুই হাতে গ্লাভস পরে নিন। কেননা টাকা বিনিময় করার সময় এবং পার্সেল হাতে নেওয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ হতে পারে। তবে শুধুমাত্র সুরক্ষা কবচ পরে নিলেই হবে না, এ সময়ে নাক, চোখ, ও মুখ হাত দিয়ে স্পর্শ করা যাবে না। ঘরে ফিরে মাস্ক ও গ্লাভস কোনো ঢাকনাযুক্ত বাস্কেটে ফেলুন এবং দুই হাত সাবান পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত ভালোভাবে ধুয়ে নিন। 

৪. পেমেন্টের জন্য ডিজিটাল বা মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করুন

শুধু করোনাভাইরাস বলেই কথা নয়, নগদ টাকা বা অর্থে থাকে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু। তাই কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা থাকতে কেন অযথা ঝুঁকি নেবেন? আগে থেকেই বা পণ্য বুঝে পাওয়া মাত্র ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে পেমেন্ট করে দিন। নগদ টাকা ব্যবহারের একান্তই প্রয়োজন হলে কাগজ বা টিস্যুতে মুড়ে খুচরা সহ অর্থ পরিশোধ করুন।

৫. ঘরের বাইরে প্যাকেজিং খুলে ফেলুন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউ এইচ ও) এর মতে, করোনাভাইরাস কার্ডবোর্ডের উপর ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত এবং প্লাস্টিক ও স্টেইনলেস স্টিলের উপর ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। প্লাস্টিক বা বাবল র‍্যাপ যেটাই হোক আগে সেটা খুলে ঘরের বাইরে রাখা বাস্কেট বা বিনে ফেলে দিন। এরপর দুই হাত ভালো করে ধুয়ে নিন। 

৬. পণ্যটি জীবাণুমুক্ত করে নিন 

শুধু প্যাকেজই নয়, জীবাণুমুক্ত করতে হবে পণ্যটিও। আপনি যদি শাক-সবজি জাতীয় কোনো আইটেম কিনে থাকেন তবে তা পানি এবং ভিনেগারে তা ১৫-২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। গ্রোসারি, বোতলজাত বা প্লাস্টিক ব্যাগ জাতীয় জিনিস হলে অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে তা মুছে নিন। অনলাইনে জামা কাপড় কিনে থাকলে সাথে সাথে ধুয়ে ফেলুন অথবা রোদে দিয়ে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত আলাদা রেখে দিন। তবে সবশেষে হাত ধোয়ার কোনো বিকল্প নেই। ঘরে থাকলেও কিছু সময় পর পর হাত দুটো ভালো করে ধুয়ে নিন। 

পরিশেষ

আশা করছি করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে কেনাকাটা করার টিপসগুলো আপনাকে নিরাপদ থাকতে সাহায্য করবে। কোভিড-১৯ আমাদের জীবন-ব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছে অনেকখানি। অফলাইনের চেয়ে অনলাইনে কেনাকাটার চাহিদা এখন বেশি এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদেরও সেভাবে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। লকডাউনে বিশেষ করে এই রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটায় সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে।  

আপনারও কি ক্ষুদ্র বা মাঝারি কোনো ব্যবসা আছে? এই লকডাউনে কাজ না কমিয়ে বিক্রি করুন অনলাইনে। Bikroy-এ মেম্বারশিপে সাইন-আপ করে নিজের অনলাইন শপ খুলে নিন এবং ক্রেতাদের সাথে কানেক্টেড থাকুন সবসময়।

ঘরে থাকুন, Bikroy-এর মাধ্যমে কেনা-বেচা করুন! আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।     

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close