ফ্যাশন, স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য্য

আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী চিনে নিন সেরা ঘড়িগুলো

আজকের দিনের স্মার্ট মানুষ বিভিন্ন রকম গ্যাজেট ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যেমন স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, পার্সোনাল কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্ট চশমা, নতুন প্রজন্মের এন্ড্রয়েড ওয়্যার সহ আরো কত কী। তাই সময় দেখার জন্য মানুষের এখন অপশনের অভাব নেই। তাহলে এখনও কেন হাত-ঘড়ি এতটা জনপ্রিয়?

আজকাল মানুষ শুধু সময় দেখার জন্যই ঘড়ি পড়েন না, বরং তাদের ব্যক্তিগত মনোভাব, সামাজিক অবস্থান ও আবেগ বা প্যাশনের বহিঃপ্রকাশ করে থাকেন একটি ঘড়ি পড়ার মাধ্যমে। আপনি যদি একটি দোকান, কিংবা শো-রুমে যান, বা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ব্রাউজ করে দেখেন, তাহলে আপনি শত শত ঘড়ির বিভিন্ন মডেল দেখতে পাবেন বেছে নেবার জন্য। এদের মধ্যে কিছু বেশ দামী ঘড়ি রয়েছে আবার কিছু রয়েছে মাঝারী দামের মধ্যে। কিছু কিছু ঘড়িতে সবার পছন্দের নানা রকম ফিচারে ঠাসা। আপনি হয়ত নিজের শখ পূরণের জন্য একটি বিলাসবহুল দামী ঘড়িও কিনতে পারেন। আজ আমরা আপনার জানার জন্য নানা রকম সেরা ঘড়ির ধরণ সম্পর্কে বলতে এসেছি, যদি আপনি ঘড়ির ব্যাপারে কৌতুহলী বা প্যাশনেট হয়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনারই জন্য। এছাড়াও আজ আমরা চিনবো বাংলাদেশে হাতঘড়ির সেরা কিছু ব্র্যান্ড সম্পর্কে।

বিভিন্ন ধরণের ঘড়ি

১. এনালগ ঘড়ি

এনালগ হাতঘড়ির ডিসপ্লে তে বড় ঘড়ির মত একটি ছোট ডায়াল বা মুখ থাকে, যাতে ১২ ঘন্টার সময় দাগ দেয়া থাকে। এতে রয়েছে একটি ঘন্টার কাঁটা ও একটি মিনিটের কাঁটা। কিছু কিছু এনালগ ঘড়িতে সেকেন্ডের কাঁটাও দেয়া থাকে। বেশির ভাগ এনালগ ঘড়ির ডায়ালে ইংরেজী সংখ্যায় সময় দেয়া থাকে, আবার কিছু কিছু তে থাকে রোমান সংখ্যা। এছাড়াও বেশির ভাগ এনালগ হাতঘড়িতে এক ঘন্টায় ৬০ মিনিটের প্রতিটি মিনিট দাগাঙ্কিত থাকে।

২. ডিজিটাল ঘড়ি

ডিজিটাল ঘড়ি হলো সেই ঘড়ি যাতে সাধারণ ঘড়ির মত ডায়াল থাকে না, বরং একটি সেভেন সেগমেন্ট এলইডি, ভিএফডি কিংবা এলসিডি ডিসপ্লে তে ঘন্টা, মিনিট এবং মাঝে মাঝে সেকেন্ডের সংখ্যাও ডিজিটাল সংখ্যায় দেখানো হয়ে থাকে। কিছু কিছু ডিজিটাল ঘড়ি তে সময় ১২ ঘন্টা বা ২৪ ঘন্টার বিন্যাসের মধ্যে যেকোন একটি বাছাই করে দেয়ার অপশন থাকে। এছাড়াও কিছু ঘড়ি তে এলসিডি স্ক্রিনে এনালগ ঘড়ির ডিজাইনে তৈরি করা ডিজিটাল প্রতিচ্ছবি বা ডায়ালের ছবি দেখা যায়, এগুলো কেও ‘ডিজিটাল’ হিসেবেই গণ্য করা হয়।

৩. অটোম্যাটিক বা স্বয়ংক্রিয় ঘড়ি

একটি অটোম্যাটিক বা স্বয়ংক্রিয় ঘড়ি পরিধানকারীর হাতের কব্জির স্বাভাবিক নাড়া চাড়ার উপর নির্ভর করে চলে এবং নিজে নিজেই অপারেট করতে পারে। এই হাতঘড়ি গুলোর স্প্রিং এ পাক দেবার প্রয়োজন হয়না যদি আপনি প্রতিদিন নিয়মিত ঘড়িটি পরিধান করে থাকেন। একটি হাফ-ডিস্ক ধাতব ভর বা ওজন ব্যবহার করে এই শক্তি সঞ্চয় করা হয়, এই ওজনটিকে বলা হয় রোটর, যা কিনা হাতের নাড়া চাড়ার সাথে দোলে বা ঘোরে। এই ঘোরা বা দুলুনির মাধ্যমে সঞ্চিত শক্তি ঘড়িটিকে চালু রাখতে সাহায্য করে দীর্ঘক্ষণ, এমনকি আপনি ঘড়িটি না পড়ে থাকলেও। একটি অটোম্যাটিক ঘড়িতে যে পরিমান শক্তি সঞ্চিত থাকে তার দ্বারা ঘড়িটি স্থির অবস্থায় বা না পড়া হলে, অন্তত ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত চলমান থাকতে পারে। এ কারণে এই  ঘড়ি গুলোকে সেলফ-ওয়াইন্ডিং বা নিজস্ব পাকে চলা ঘড়িও বলা হয়ে থাকে।

৪. ক্রনোগ্রাফ বা কালমাপক ঘড়ি

“ক্রনোগ্রাফ” আসলে স্টপওয়াচ বা বিরাম ঘড়ির আরেক জমকালো নাম। একটি ক্রনোগ্রাফ ঘড়ি ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ। ঘড়ির পাশে অবস্থিত শুরু/শেষ বাটনটি চাপ দিলে স্টপওয়াচ ফাংশনটি কাজ করা শুরু করে এবং যেকোন অবস্থানে একে থামানো যায় একই বাটন চেপে। একই পাশে নিচে অবস্থিত একটি বাটন চাপলে স্টপওয়াচের টাইমারটি শূন্যের ঘরে চলে আসে বা রিসেট হয়। এই ক্রনো ঘড়ির ডায়ালে ক্রনোগ্রাফ ফাংশন আপনাকে বিভিন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা প্রতিযোগিতার সময় রেকর্ড করে রাখতে সাহায্য করবে।

৫. ডাইভিং বা ডুবুরি ঘড়ি

ডাইভিং ঘড়ি প্রকৃতপক্ষে ডিজাইন করা হয়েছে পানির নিচে ঘড়িটি সহ ডাইভিং করার জন্য। এটি পানির নিচে প্রায় ১০০ মিটার (৩৩০ ফিট) গভীর বা এর চেয়েও বেশি গভীরতা পর্যন্ত পানি প্রতিরোধ করতে পারে। আজকের দিনে সাধারণ একটি ডাইভিং ঘড়ি পানির নিচে ২০০ থেকে ৩০০ মিটার (৬৬০ থেকে ৯৮০ ফিট) গভীর পর্যন্ত পানি প্রতিরোধ করে থাকে। যদিও আধুনিক প্রযুক্তি এমন ডাইভিং ঘড়ি তৈরি করার ক্ষমতা রাখে যা কিনা আরো অনেক গভীরে গিয়ে টিকতে পারবে। এখানে পানি প্রতিরোধীতার পাশাপাশি সমুদ্রের গভীর তলদেশে পানির চাপ ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ঘড়িগুলোকে ডাইভ ঘড়ি বা ডুবুরি ঘড়িও বলা হয়ে থাকে।

৬. ড্রেস বা পোশাকি ঘড়ি

একটি ড্রেস বা পোশাকি ঘড়ি বাজারের যেকোন ঘড়ির তুলনায় অনেক বেশি মার্জিত ও সুরুচিপূর্ণ হয়ে থাকে। এই ঘড়ির একমাত্র উদ্দেশ্য হলো সময় দেখানো, এছাড়া বাড়তি কোন ফিচার এতে থাকে না। কিন্তু এর বাহ্যিক সৌন্দর্য ও আকর্ষণীয় ডিজাইন আপনাকে দিতে পারে এর চেয়েও বেশি কিছু। একে আপনার পোশাকি সাজসজ্জার সাথে যোগ করে পরিধান করা হলে এটি আপনার স্টাইল ও ব্যক্তিত্বকে বাড়িয়ে তুলবে আরো বেশি। এতে কোন জটিল ফিচার বা কন্ট্রোল সিস্টেম নেই এবং এটি ব্যবহার ও বহন করা অত্যন্ত সহজ।

একটি পোশাকি ঘড়ি যথেষ্ট সরল ও মার্জিত ডিজাইনের হয়ে থাকে; আর সর্বোপরি সাদামাটা বা মিনিমালিস্ট ছোঁয়া থাকে এতে। এটা কোন ভাবগম্ভীর বা জাঁকাল ঘড়ি নয় যে এতে মূল্যবান পাথর, ক্রনোগ্রাফ কিংবা ডায়ালে জটিল ফিচারের সমারোহ থাকবে। সচরাচর এরকম জটিল ফিচার ওয়ালা হাতঘড়ি কিছুটা বড়সড় হয় আর হাতের ওপর দেখতে বড় একটা দেয়াল ঘড়ির মত লাগে। অপরদিকে, পোশাকি ঘড়ি সূক্ষ্ম, কৌশলী, নিখুঁত এবং অসম্ভব রকম কমনীয় হয়ে থাকে। এগুলো কোন নিত্যনৈমিত্তিক জিন্স এবং টি-শার্টের সাথে, কিংবা জীমে বা যেকোন নৈমিত্তিক সময়ে পড়ার জন্য নয়। এগুলো আপনার বিজনেস স্যুট, কিংবা বিশেষ নৈশ ভোজের জ্যাকেট কিংবা ব্লেজার এবং কোন কোন ক্ষেত্রে কমপ্লিট স্যুটের সাথেও মানিয়ে যাবে।

৭. কোয়ার্টজ ঘড়ি

একটি কোয়ার্টজ ঘড়ি এক ধরণের ইলেক্ট্রনিক অসিলেটর বা দোলকের মাধ্যমে শক্তি লাভ করে থাকে, যা একটি কোয়ার্টজ স্ফটিক বা ক্রিস্টাল এর মাধ্যমে সিঙ্ক্রোনাইজ হয়ে থাকে। বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহার করে ভেতরের কোয়ার্টজ স্ফটিকটি একটি বিশেষ কম্পাঙ্কে স্পন্দিত হয়। তারপর এই কম্পাঙ্ক একটি ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট বা আইসি এর ভেতর দিয়ে শক্তিতে পরিণত হয় এবং এই শক্তি একটি ছোট স্টেপিং মোটরের ভেতর দিয়ে পরিচালিত হয়, যার কারণে ঘড়ির কাঁটা ঘোরে এবং পুরো ঘড়িটি চলমান থাকে। কোয়ার্টজ ঘড়িতে একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর ব্যাটারী বদলের প্রয়োজন পড়ে।

৮. যান্ত্রিক বা মেকানিক্যাল ঘড়ি

একটি মেকানিক্যাল বা যান্ত্রিক ঘড়ি সাধারণত যান্ত্রিক কৌশল ব্যবহার করে চলমান সময় পরিমাপ করে থাকে ও ঘড়িটি কে চালু রাখে। আধুনিক কোয়ার্টজ ঘড়ির মত এগুলো বৈদ্যুতিক শক্তির সাহায্যে পরিচালিত নয়। বরং এটি এর মধ্যে অবস্থিত একটি স্প্রিং এর সাহায্যে (মেইনস্প্রিং নামে পরিচিত) পরিচালিত হয়, যাতে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে পাক দেয়া বা ঘুরিয়ে দেবার প্রয়োজন পড়ে। এর থেকেই সকল মেকানিক্যাল ঘড়ির সুপরিচিত “টিক টিক” শব্দের উৎপত্তি হয়, আর এটা সকল মেকানিক্যাল ঘড়ির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

৯. পাইলট ঘড়ি

বহু বছর ধরে পাইলট দের হাতে শোভা পাওয়া এই বিশেষ বৈমানিক ঘড়িগুলো স্টাইল এবং স্থায়ীত্বের এক নিদারুণ ও আদর্শ মিশ্রণ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বিখ্যাত ফোরটিস এভিয়াটিস কালেকশন থেকে শুরু করে স্কোয়ারডন ঘড়ি, যেটার কথাই বলুন না কেন, পাইলট ঘড়ি অত্যন্ত মজবুত ও যেকোন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত সব সময়। এই ঘড়ি গুলোর ডায়াল অনেকটা সরল প্রকৃতির হয় এবং এতে যেকোন পরিস্থিতিতে সময় দেখা সহজ হয়। ডায়ালের ওপর সময়সূচক সংখ্যাগুলো বাকি ঘড়ির তুলনায় বড়সড় ও অধিক দৃষ্টিগোচর হয়। এরা এভিয়েটর ঘড়ি নামেও ব্যাপক পরিচিত।

১০. ফিল্ড ওয়াচ বা সামরিক ঘড়ি

সামরিক ঘড়ি বা ফিল্ড ওয়াচগুলো ডিজাইন করা হয়েছিলো সামরিক অফিসারদের জন্য, যারা প্রতিনিয়ত আক্রমণের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন, রাতে সময় দেখার প্রয়োজন বোধ করতেন এবং এমন একটি হাতঘড়ির অপেক্ষায় ছিলেন যা কিনা যুদ্ধের মত কঠোর পরিস্থিতির মোকাবিলা করে, বহাল তবীয়তে টিকে থাকতে সক্ষম হবে এবং একই সাথে দেখতে আকর্ষণীয় হবে। এখনও ফিল্ড ওয়াচগুলোর মধ্যে এক ধরণের সামরিক অনুভব পাওয়া যায় এবং এগুলো একই সাথে শ্রমসাধ্য, ফাংশনে পরিপূর্ণ এবং স্টাইলিশ ধরণের ঘড়ি।

১১. স্মার্ট ওয়াচ বা স্মার্ট ঘড়ি

স্মার্ট ওয়াচ হলো এমন একটি বহনযোগ্য ডিভাইস যা কিনা অবিকল একটি প্রচলিত ঘড়ির মত হাতে পড়ার মত করে ডিজাইন করা হয়েছে। স্মার্ট ওয়াচ আসলে অনেকটাই স্মার্টফোনের মত, এতে টাচ স্ক্রিন রয়েছে, বিভিন্ন রকম অ্যাপ সাপোর্ট করে, এতে কল করা ও কল রিসিভ করা যায়, এমনকি অনেক সময় হৃৎস্পন্দন বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণও রেকর্ড করা যায়।

১২. বিলাসবহুল ঘড়ি

এই ঘড়িগুলো ঘড়ি সংগ্রহকারী কিংবা কৌতূহলী ব্যক্তিদের জন্য, অথবা যারা ঘড়ির মধ্যে সূক্ষ্ম, নিখুঁত ডিজাইন ও সুচারু হাতের জটিল নকশার কাজ ভালোবাসেন, তাদের জন্য দারুণ পছন্দের একটি ঘড়ির ধরণ। এ ধরণের ঘড়ি প্রায়ই বিভিন্ন মূল্যবান মনি পাথর ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে ঢাকা থাকে।

কিছু হাত ঘড়ি

বাংলাদেশের সেরা ৫ টি ঘড়ির ব্র্যান্ড

এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশে হাতঘড়ির সেরা ৫টি ব্র্যান্ড সম্পর্কে।

রোলেক্স:

রোলেক্স সারা বিশ্বের অন্যতম সেরা ঘড়ির ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত। ১৯১৯ সালে হ্যানস উইলসড্রফ ইংল্যান্ডে রোলেক্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই কোম্পানি অত্যন্ত উচ্চমানের ঘড়ি উৎপাদন করে থাকে; সমাজের অভিজাত শ্রেনীর ক্রেতাদের দিকে লক্ষ্য তারা তাদের প্রত্যেকটি ঘড়ি ডিজাইন করে থাকে। তারা অনেক আগে থেকেই হাতঘড়িতে নানা রকম অভূতপূর্ব ফিচার নিয়ে এসেছে, যেমন ধূলাবালি প্রতিরোধীতা, স্বয়ংক্রিয় তারিখ পরিবর্তন, পানি প্রতিরোধীতা সহ আরো অনেক কিছু। রোলেক্স শুধুমাত্র একটি হাতঘড়ি নয়। এটি একই সাথে পদমর্যাদা, আভিজাত্য এবং সাফল্যের প্রতীক। রোলেক্স এর কিছু স্বতন্ত্র ঘড়ির মডেল রয়েছে, যেমন ডিপসী, ডেটজাস্ট,ডেয়ডেট ইত্যাদি। তাদের প্রধান কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত। হাতঘড়িতে পানি প্রতিরোধীতা সর্বপ্রথম তারাই নিয়ে আসে এবং সারা বিশ্বে তাক লাগিয়ে দেয়। 

ক্যাসিও:

ক্যাসিও একটি জাপানিজ কোম্পানি। ১৯৭৪ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তারাই সর্বপ্রথম এনালগ ও ডিজিটাল পদ্ধতির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে একটি হাতঘড়ি তৈরি করেছে। অতঃপর তারা তাদের ঘড়িগুলোর মধ্যে বিভিন্ন দারুণ ফিচার সংযোগ করে, যেমন- তাপ সংবেদনশীলতা, উচ্চতা পরিমাপক, দিক নির্দেশনা, তারিখ প্রদর্শন, অটোম্যাটিক মাস পরিবর্তন এমনকি বছরও। বাংলাদেশে তাদের বিভিন্ন জনপ্রিয় মডেলগুলোড় মধ্যে কয়েকটি হলো- এডিফিস, জি-শক, বিসাইড, প্রোট্রেক, ডাটা ব্যাঙ্ক, স্পোর্টস, ড্রেস ক্লাসিক, ব্লুটুথ স্পোর্টস গিয়ার ইত্যাদি। তাদের বিশাল কালেকশন, চমকপ্রদ ডিজাইন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সম্মেলনে ক্যাসিও খুব অল্প সময়ে বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত ঘড়ির ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। 

টাইটান:

টাইটান হলো টাটা গ্রুপ ও তামিলনাড়ু ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত একটি কোম্পানি। বর্তমানে তারা সমগ্র বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম হাতঘড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। তারা তাদের নির্মিত হাতঘড়ি বিশ্বের ৩২টি দেশে রপ্তানী করে থাকে। টাইটান ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের হাতঘড়ির মার্কেটের শতকরা ৬০ ভাগ শেয়ার তাদের দখলে। তারা বিশ্বের সবচেয়ে স্লিম অর্থাৎ সরু হাতঘড়ি তৈরি করার খেতাব অর্জন করেছে, যার প্রস্থ ৩.৫ মিলিমিটার ও বিচলন ১.১৫ মিলিমিটার। টাইটান কোম্পানির জনপ্রিয় কিছু ব্র্যান্ডের নাম হলো ফাস্টট্র্যাক, সোনাটা, রাগা, এজ, অকটেন এক্সওয়াইএলওয়াইএস টাইটান ইত্যাদি। 

কিউ এন্ড কিউ:

কিউ এন্ড কিউ হলো বাংলাদেশের হাতঘড়ি মার্কেটে আরো একটি জাপানিজ উৎপাদক কোম্পানির নাম। ১৯৭৬ সালে সিবিএম কর্পোরেশন হাতঘড়ির মার্কেটে কিউ এন্ড কিউ কে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে উন্মোচন করে। ১৯৯৯ সালে সারা বিশ্বে তারা তাদের ২ কোটি হাতঘড়ি বিক্রি করতে সক্ষম হয়। তাদের কালেকশনে বিভিন্ন বিভাগের জন্য হাতঘড়ি রয়েছে, যেমন- ফ্যাশন, স্পোর্টস, মার্জিত, আদর্শ ইত্যাদি। 

ওমেগা:

১৮৮৪ সালে লুইস ব্র্যান্ট ওমেগা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বিশ্বের একমাত্র হাতঘড়ি কোম্পানি যারা মেরিন ক্রনোমিটার দ্বারা স্বীকৃতি প্রাপ্ত। এই হাতঘড়ি আরো দু’টি কারণে ব্যাপক জনপ্রিয়। প্রথমত, এই কোম্পানির ঘড়িই সর্বপ্রথম চাঁদে গমনকারী হাতঘড়ি এবং দ্বিতীয়ত এদের হাতঘড়িই জেমস বন্ড সর্বপ্রথম পরিধান করেছিলেন।

উপসংহার

একটি হাতঘড়ি একজন পরিধানকারীর ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। এটির সাহায্যে একজন ব্যক্তির রুচি, সামর্থ্য, এমনকি তার রসিকতাবোধ সম্পর্কেও অনেক কিছু বলে দিতে পারে। নিজের জন্য একটি পারফেক্ট ঘড়ি বাছাই করা কোন সহজ কাজ নয়, কেননা এতে অনেক কিছু বিবেচনা করে দেখতে হয়। জীবনের যেকোন পর্যায়ের জন্য একটি করে যথাযথ হাতঘড়ি থাকার মানে হলো, জীবন যেখানে যেমন ভাবে আপনাকে নিয়ে যাক না কেন, আপনি তার জন্য সব রকম ভাবে প্রস্তুত থাকছেন, মানসিক ও পোশাকি উভয় দিক থেকেই। অতএব আপনার ঘড়িটি বাছাই করুন স্মার্টলি।

Bikroy.com সাইটটি ভিসিট করুন এবং বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের আকর্ষণীয় হাতঘড়ি সহ খুঁজে নিন আপনার মনের মত লাইফ স্টাইল পণ্য। আমাদের বিশ্বস্ত বিক্রেতার কাছ থেকে কিনে নিন আপনার প্রিয় ব্র্যান্ডের হাতঘড়ি, আর আপনার ব্যক্তিত্বকে পুরো পৃথিবীর সামনে তুলে ধরুন গর্বের সাথে। শপিং হোক আনন্দের!

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Pujan Kumar Saha

Digital Marketing Manager

Related Articles

Back to top button
Close
Close