শহরে সাইকেল চালানোর জন্য আবশ্যক কিছু টিপস!
বছরের এই সময়টায় ট্রাফিক সমস্যা চূড়ান্ত আকার ধারন করে। আমরা যদিও ব্যাপারটায় যথেষ্ট অভ্যস্ত, তবে প্রতিদিন প্রচুর সময় আর স্বস্তি এই ট্রাফিক জ্যামে বসে অপচয় হয়ে থাকে। আপনি যতই আধুনিক আর আরামদায়ক গাড়িতে চড়ুন না কেনো, একই জায়গায় ঘন্টার পর ঘন্টা গরমে বসে থাকতে থাকতে শরীর ও মন দুটোই চড়াও হয়ে যায়! এক্ষেত্রে সাইক্লিং একটি সহজ, সাশ্রয়ী ও স্বাস্থ্যকর সমাধান হয়ে উঠতে পারে। ভিড় ভাট্টা আর বড় বড় গাড়ির পাশে সাইকেল চালানো স্বাভাবিকভাবেই অনেকের কাছেই ভয়ের একটা ব্যাপার, তবে কিছু বিশেষ ব্যাপার খেয়াল রাখলে দাপটের সাথেই আপনি আপনার সাইকেল শহরের রাস্তায় চালাতে পারবেন─
সঠিক সরঞ্জাম
একটি সঠিক বাইসাইকেল আপনার অনেক কাজ সহজ করে দিতে পারে। যদি এখনো আপনার সাইকেলটি না কিনে থাকেন তবে আগে ভেবে দেখুন যে কি ধরনের বাইক আপনার চাহিদা আর বাজেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেই সাথে এটাও দেখা জরুরি যে কোন বাইক চালাতে কতটা আরাম আর সুবিধা। আমাদের আরও একটি প্রবন্ধ থেকে দেখে নিন বাইসাইকেল রক্ষণাবেক্ষণের কিছু পরামর্শ।
কেন সাইকেল কিনতে চান তা ভেবে দেখুন। চিন্তা করুন, আপনি কি সাইকেল চালিয়ে কাজে যেতে চান, নাকি প্রতিদিন বিভিন্ন দুরত্বে যাওয়া আসা করতে চান, হতে পারে তা এক্সারসাইজ অথবা ছুটির দিনে আপনার পথচলার সঙ্গী হবার জন্য। প্রয়োজন সম্পর্কে ধারনা হবার পর খোঁজ করে জেনে নিন কোন সাইজের সাইকেল আপনার জন্য মানানসই।
এরপর আসে হেলমেট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। সাইক্লিস্টদের সবসময় হেলমেট পরে সাইকেল চালানোর অভ্যাস করা উচিত, শহরের রাস্তা হলে তো কথাই নেই। এতে আপনি অনেকটাই নিরাপদ থাকতে পারবেন। হেলমেট পছন্দ করা অনেকটা বাইক পছন্দ করার মতই। আপনার পছন্দ আর আরামের উপর নির্ভর করে কেমন হেলমেট আপনি কিনবেন।
এছাড়াও রিয়ারভিউ মিরর আপনার বাইকের জন্য একটি দারুন সংযোগ। এই মিরর আপনাকে পিছনে না ঘুরেও রাস্তার দিকে খেয়াল রাখতে সাহায্য করবে এবং আপনি আরো সতর্ক থাকতে পারবেন। নতুন সাইক্লিস্টদের জন্য মিরর অনেক দরকারি একটা অনুষঙ্গ। এছাড়াও প্রতিদিনের পথকে সহজ করতে আরো সাইকেল এর জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে কিনে নিতে পারবেন।
পথের অভিজ্ঞতা
কিভাবে সাইকেল চালাতে হয় সেটা কোন ব্লগ পড়ে একেবারে দক্ষ হওয়া যায় না, সেটা পুরোপুরি চর্চার বিষয়। তবে রাস্তার নিয়মকানুনগুলো জেনে নেয়া যায় বিভিন্ন মাধ্যমে এবং সেগুলো ভালোভাবে মেনে চলা উচিত। অন্যান্য সাইক্লিস্টদের সাথে আলাপ করলেও অনেক কিছু জানা যায় এবং নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করা যায়। আপনি কোন পথে কিভাবে আপনার গন্তব্যে পোঁছাবেন সেটা মনে মনে নকশার মত একে ফেলুন। গুগল ম্যাপস আপনাকে এ ব্যাপারে সহায়তা করতে পারে।
রাস্তায় বাইক চালানোর সময় লোকজন এবং বড় বড় যানবাহন থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখুন। তাহলে অনাকাঙ্খিত ঝামেলা বা বিপদ-আপদ এড়াতে পারবেন। যেরকম পরিস্থিতি আসুক না কেন মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। রাস্তার মোড়গুলোয় সতর্ক হোন এবং সঠিক ভাবে বাঁক নিতে শিখুন। একটু চোখ কান খোলা রাখলেই যেকোনো রকম রাস্তায় নিরাপদ ভাবে চলাচল করা সম্ভব।
সর্বোপরি, যথেষ্ট পরিমাণ চর্চা, অভিজ্ঞতা এবং সময় আপনাকে যেকোন পরিস্থিতিতে সাহস যোগাবে—আর সঠিক সময়ে সাহস আপনার জীবনকে আমূল বদলে দিতে পারে! যদি আপনি একজন শহরের বাসিন্দা হন, তাহলে সাইক্লিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার শহরকে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে আবিষ্কার করতে পারবেন। একই সাথে এই চর্চা আপনাকে সুস্থ ও স্বচ্ছল করে তুলবে।